ঢাকা ০৯:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইতালির ক্রিকেটে স্বপ্ন পূরণ, প্রথমবার টি-২০ বিশ্বকাপে

ক্রীড়া ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:১৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
  • / 266

ইতিহাস গড়ল ইতালি

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইতিহাস রচনা করল ইতালির ক্রিকেট দল! প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। হেগে অনুষ্ঠিত ইউরোপিয়ান কোয়ালিফায়ারের নাটকীয় শেষ দিনে জার্সির দুঃস্বপ্ন আর ইতালির স্বপ্ন একসাথে জেগে উঠল নেদারল্যান্ডসের একটি জয়ের মধ্য দিয়ে।

শুক্রবার (১১ জুলাই) নেদারল্যান্ডস ও ইতালির ম্যাচে মূল লড়াই ছিল জার্সির বিশ্বকাপ স্বপ্নকে টিকিয়ে রাখা। শর্ত ছিল, নেদারল্যান্ডসকে জিততেই হবে ১৫ ওভারের মধ্যে। তাহলেই পয়েন্ট সমান হলেও নেট রান রেটের কারণে জার্সি চলে যেত বিশ্বকাপে।

কিন্তু নেদারল্যান্ডস ম্যাচ জিতলেও ১৫ ওভারের মধ্যে নয়, তারা রান তাড়া করে ২০ ওভার পূর্ণ করেই। ফলে ইতালি ও জার্সির পয়েন্ট সমান হলেও, নেট রান রেটে (+০.৬১২) এগিয়ে থেকে বিশ্বকাপের টিকিট পেল ইতালি।

রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে জয়ের আনন্দ, কান্না আর হতাশা

ইতালি প্রথমে ব্যাট করে তোলে ১৩৪/৭। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন বেন মানেন্তি। নেদারল্যান্ডসের হয়ে বল হাতে সবচেয়ে সফল ছিলেন রুলোফ ভ্যান ডার মারভে, যিনি ৩ উইকেট নেন।

১৩৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে ডাচ দল—মাত্র ৭.৩ ওভারে ৭১ রান তুলে ফেলেন মাইকেল লেভিট ও ম্যাক্স ও’ডাউড। সেই মুহূর্তে জার্সির খেলোয়াড়রা প্যাভিলিয়নে বসে দারুণ আশায় বুক বাঁধছিলেন।

তবে ম্যাচে নাটকীয় মোড় নেয় স্পিনারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে। মানেন্তি ও কালুগামাগে দারুণভাবে ম্যাচকে টেনে নেন। ৪ ওভারে উইকেট না পেলেও মাত্র ২৫ রান দেন মানেন্তি। কালুগামাগে নেন ১ উইকেট।

শেষ দিকে ও’ডাউড (৪৭*) ও অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস ব্যাটিং মন্থর করে ফেলেন—আর সেখানেই চূড়ান্ত জয় পায় ইতালি। শেষ ওভারে গ্রান্ট স্টুয়ার্টের আঁটসাঁট বোলিং নিশ্চিত করে জার্সির বিশ্বকাপ স্বপ্নভঙ্গ।

ইতালির গর্বের দিন, ইউরোপিয়ান ক্রিকেটে নতুন অধ্যায়

আইসিসির সদস্য হিসেবে ১৯৮৪ সালে যোগ দেওয়া ইতালি এতদিন ইউরোপের মাঝারি মানের দল হিসেবেই পরিচিত ছিল। এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উল্লেখযোগ্য কিছু অর্জন তাদের ছিল না। কিন্তু এই কোয়ালিফায়ারে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ইতালি তাদের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাফল্য উদযাপন করছে।

বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেই ইতালির ক্রিকেট ফেডারেশন ও খেলোয়াড়রা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৬ যেহেতু অনুষ্ঠিত হবে ভারত ও শ্রীলঙ্কায়, সেখানে এই অভিষেক হবে ইতালির জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ ও সুযোগের দরজা।

জার্সির হতাশা, শেষ মুহূর্তের হতভম্বতা

জার্সি দল পুরো ম্যাচজুড়ে আশা করেছিল ও’ডাউড হয়তো শেষ দিকে গিয়ার পাল্টাবেন। কিন্তু নিরাপদ ব্যাটিং তাদের স্বপ্নের মাটিতে মিলিয়ে দেয়। শেষ বলে যখন নিশ্চিত হয়ে যায় তারা বিশ্বকাপে যেতে পারছে না, প্যাভিলিয়নে ছিল হতাশা আর মৌনতা।

ক্রিকেট যেমন আনন্দের খেলা, তেমনি এটি নিষ্ঠুরতাও দেখাতে জানে—তা যেন প্রমাণ করে গেল হেগের এই ম্যাচ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ইতালির ক্রিকেটে স্বপ্ন পূরণ, প্রথমবার টি-২০ বিশ্বকাপে

আপডেট সময় : ০১:১৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

ইতিহাস রচনা করল ইতালির ক্রিকেট দল! প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। হেগে অনুষ্ঠিত ইউরোপিয়ান কোয়ালিফায়ারের নাটকীয় শেষ দিনে জার্সির দুঃস্বপ্ন আর ইতালির স্বপ্ন একসাথে জেগে উঠল নেদারল্যান্ডসের একটি জয়ের মধ্য দিয়ে।

শুক্রবার (১১ জুলাই) নেদারল্যান্ডস ও ইতালির ম্যাচে মূল লড়াই ছিল জার্সির বিশ্বকাপ স্বপ্নকে টিকিয়ে রাখা। শর্ত ছিল, নেদারল্যান্ডসকে জিততেই হবে ১৫ ওভারের মধ্যে। তাহলেই পয়েন্ট সমান হলেও নেট রান রেটের কারণে জার্সি চলে যেত বিশ্বকাপে।

কিন্তু নেদারল্যান্ডস ম্যাচ জিতলেও ১৫ ওভারের মধ্যে নয়, তারা রান তাড়া করে ২০ ওভার পূর্ণ করেই। ফলে ইতালি ও জার্সির পয়েন্ট সমান হলেও, নেট রান রেটে (+০.৬১২) এগিয়ে থেকে বিশ্বকাপের টিকিট পেল ইতালি।

রোমাঞ্চ ছড়ানো ম্যাচে জয়ের আনন্দ, কান্না আর হতাশা

ইতালি প্রথমে ব্যাট করে তোলে ১৩৪/৭। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন বেন মানেন্তি। নেদারল্যান্ডসের হয়ে বল হাতে সবচেয়ে সফল ছিলেন রুলোফ ভ্যান ডার মারভে, যিনি ৩ উইকেট নেন।

১৩৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে ডাচ দল—মাত্র ৭.৩ ওভারে ৭১ রান তুলে ফেলেন মাইকেল লেভিট ও ম্যাক্স ও’ডাউড। সেই মুহূর্তে জার্সির খেলোয়াড়রা প্যাভিলিয়নে বসে দারুণ আশায় বুক বাঁধছিলেন।

তবে ম্যাচে নাটকীয় মোড় নেয় স্পিনারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে। মানেন্তি ও কালুগামাগে দারুণভাবে ম্যাচকে টেনে নেন। ৪ ওভারে উইকেট না পেলেও মাত্র ২৫ রান দেন মানেন্তি। কালুগামাগে নেন ১ উইকেট।

শেষ দিকে ও’ডাউড (৪৭*) ও অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস ব্যাটিং মন্থর করে ফেলেন—আর সেখানেই চূড়ান্ত জয় পায় ইতালি। শেষ ওভারে গ্রান্ট স্টুয়ার্টের আঁটসাঁট বোলিং নিশ্চিত করে জার্সির বিশ্বকাপ স্বপ্নভঙ্গ।

ইতালির গর্বের দিন, ইউরোপিয়ান ক্রিকেটে নতুন অধ্যায়

আইসিসির সদস্য হিসেবে ১৯৮৪ সালে যোগ দেওয়া ইতালি এতদিন ইউরোপের মাঝারি মানের দল হিসেবেই পরিচিত ছিল। এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উল্লেখযোগ্য কিছু অর্জন তাদের ছিল না। কিন্তু এই কোয়ালিফায়ারে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ইতালি তাদের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাফল্য উদযাপন করছে।

বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেই ইতালির ক্রিকেট ফেডারেশন ও খেলোয়াড়রা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৬ যেহেতু অনুষ্ঠিত হবে ভারত ও শ্রীলঙ্কায়, সেখানে এই অভিষেক হবে ইতালির জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ ও সুযোগের দরজা।

জার্সির হতাশা, শেষ মুহূর্তের হতভম্বতা

জার্সি দল পুরো ম্যাচজুড়ে আশা করেছিল ও’ডাউড হয়তো শেষ দিকে গিয়ার পাল্টাবেন। কিন্তু নিরাপদ ব্যাটিং তাদের স্বপ্নের মাটিতে মিলিয়ে দেয়। শেষ বলে যখন নিশ্চিত হয়ে যায় তারা বিশ্বকাপে যেতে পারছে না, প্যাভিলিয়নে ছিল হতাশা আর মৌনতা।

ক্রিকেট যেমন আনন্দের খেলা, তেমনি এটি নিষ্ঠুরতাও দেখাতে জানে—তা যেন প্রমাণ করে গেল হেগের এই ম্যাচ।