জাফলংয়ে উপদেষ্টাদের গাড়িবহর ঘিরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ

- আপডেট সময় : ০৪:১১:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫
- / 93

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং এলাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টার সফরের সময় পাথর শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। শনিবার (১৪ জুন) সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে এই ঘটনা ঘটে।
বিক্ষোভের মুখে পড়া দুই উপদেষ্টা হলেন—পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
উপদেষ্টা দুজন জাফলংয়ের ইকোলজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়া (ইসিএ) পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে জাফলংয়ের পাথর উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তে বহু ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
এই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্থানীয় পাথর শ্রমিকরা। তারা “ভুয়া ভুয়া” স্লোগান দিতে শুরু করেন এবং উপদেষ্টাদের গাড়িবহর ঘিরে বিক্ষোভে অংশ নেন। প্রায় আধঘণ্টা ধরে চলা এই বিক্ষোভে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং উপদেষ্টাদের নিরাপদে সরিয়ে নেন।
বিক্ষোভরত শ্রমিকদের দাবি, তারা আশা করেছিলেন উপদেষ্টারা ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের অনুমতি দিয়ে যাবেন। কিন্তু তার বদলে তারা এমন বক্তব্য দিয়েছেন, যা শ্রমিকদের জীবন-জীবিকার বিরুদ্ধে যায়।
একজন শ্রমিক বলেন, “আমরা রুটি-রুজির জন্য রাস্তায় নেমেছি। পাঁচ লাখ শ্রমিক এখন বেকার। অথচ সরকার আমাদের পাশে না দাঁড়িয়ে দালালদের কথায় নীতিনির্ধারণ করছে।”
জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, “অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের ফলে জাফলংয়ের পরিবেশ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই যেসব অবৈধ ক্রাশার রয়েছে, সেগুলোর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।”
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, “সিলেট অঞ্চলে আর কোনো পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া হবে না। জাফলংকে আধুনিক পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি শ্রমিকদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে গোয়াইনঘাট থানার ওসি সরকার তোফায়েল আহমেদ বলেন, “গাড়িবহর আটকে দেওয়া হয়নি। শ্রমিকরা নিজেদের দাবি জানাতে এসেছিলেন। ওই সময় সেখানে সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।”
ঘটনার সময় সেখানে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মোহাম্মদ রেজা উন-নবী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ এবং পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।