উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত ছয়, দগ্ধ ৩০

- আপডেট সময় : ০৪:১৭:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
- / 164

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজেআই মডেলের একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় এ পর্যন্ত ছয় জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার মুহূর্তে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গত কয়েক ঘণ্টায় ৩০ জন দগ্ধ অবস্থায় ভর্তি হয়েছেন; তাঁদের অধিকাংশই কলেজের ছাত্রছাত্রী।
মাইলস্টোন কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সবুজ মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, “স্কুলের দোতলা ভবনের প্রবেশমুখে বিমানটি আছড়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায়। ওই মুহূর্তে অনেক ছাত্রছাত্রী ছুটি হয়ে যাওয়ার পরও ভবনের ভেতরেই আটকা পড়ে ছিল।”
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তথ্য অনুযায়ী, উদ্ধারকাজে উত্তরা, টঙ্গী, পল্লবী, কুর্মিটোলা, মিরপুর ও পূর্বাচল ফায়ার স্টেশনের দশটি ইউনিট মোতায়েন ছিল। প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দুপুর ১টা ২২ মিনিটে। সঙ্গে ছিল দু’টি বিজিবি প্লাটুন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বিকেল পৌনে চারটা পর্যন্ত উদ্ধার ও দগ্ধদের পরিবহনের কাজ চলছিল।
আইএসপিআর জানায়, বিমানটি দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়ন করে এবং ১২ মিনিট পর ১টা ১৮ মিনিটে মাইলস্টোন স্কুল ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ওই বিমানের একমাত্র পাইলট ছিলেন। বিধ্বস্তের সময় তাঁর অবস্থা সম্পর্কে এখনো কোনো নিশ্চিত বিবৃতি পাওয়া যায়নি।
ঘটনাস্থল থেকে নিহতদের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। দগ্ধদের পাশাপাশি আহত সবাইকেই সেখানে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছেন, দগ্ধদের মধ্যে আরও কেউ মৃত্যুবরণ করতে পারেন। এজন্য জরুরি ভিত্তিতে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা ব্যবস্থার পরিসর বাড়ানো হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে আসা বিমানটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ক্যাম্পাসের একটি নির্দিষ্ট স্থানে আছড়ে পড়ে। অভ্যন্তরীণ তদন্ত দল ঘটনাস্থলে কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিস ও বিজিবি যৌথভাবে তথ্য সংগ্রহ করে অগ্নিকাণ্ডের উৎস শনাক্তের চেষ্টা চালাচ্ছে।
এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ভবিষ্যতে স্কুল-কলেজের আশপাশে প্রশিক্ষণ ফ্লাইটের সময়সূচি পুনর্বিন্যাস এবং নিরাপত্তা বাঁধ নির্মাণের সুপারিশ উঠছে। শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর তথ্য সংগ্রহ শেষে সরকার ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা আর্থিক সহায়তা ও মানসিক সহায়তার উদ্যোগ নিচ্ছে।