ঢাকা ০৫:২৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ভারত থেকে উদ্ধার দুই বাংলাদেশি তরুণী মাদাগাস্কারে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬, স্বজনদের আহাজারি বিশ্ব খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে রোম গেলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস পূর্বের নির্বাচনী কর্মকর্তারা এবার দায়িত্বে থাকছেন না: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তারুণ্যের অঙ্গীকারে প্রবাসী নেতৃত্ব—জাপান কানসাই ইউনিট জাতীয়তাবাদী দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত নরসিংদীর আশিক খন্দকার বিমানবন্দরে সোহেল তাজের বিদেশযাত্রায় বাধা শ্যামনগরের ৭০ মণ্ডপে তারেক রহমানের আর্থিক উপহার নির্বাচন নিয়ে ‘নীলনকশা’ হলে জনগণ ছেড়ে দেবে না লাদাখ বিক্ষোভের নেতা সোনম ওয়াংচুক গ্রেপ্তার

জুলাই সনদ চূড়ান্তে ভিন্নমত, ঐকমত্যের পথে বড় ধাক্কা

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:২১:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫
  • / 105

জুলাই সনদ চূড়ান্তে ভিন্নমত, ঐকমত্যের পথে বড় ধাক্কা

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ শেষের দিকে আসছে, কিন্তু এখনো চূড়ান্ত করা যায়নি রাজনৈতিক সংস্কারের ‘জুলাই সনদ’। সনদটি বাস্তবায়নের পদ্ধতি ও আইনি ভিত্তি নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে গভীর মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। ফলে, এই সনদ চূড়ান্ত না হওয়ায় জাতীয় ঐকমত্যের পথে বড় ধাক্কা লেগেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, তারা আগামী সপ্তাহে আবারও আলোচনা শুরু করবে। প্রথমে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করবে, এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তৃতীয় দফার বৈঠকে বসবে। এ বৈঠকে সনদ ও তার বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করার চেষ্টা হবে।

আগের সময়গুলোতে কমিশন একাধিকবার রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে খসড়া পাঠিয়েছে। সর্বশেষ ২৮ জুলাই সনদের খসড়া পাঠানো হয়। দলগুলো তাদের মতামত জানিয়েছে। কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বিবিসিকে জানিয়েছেন, আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে সনদের পূর্ণাঙ্গ খসড়া পাঠানো হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ছয় মাস মেয়াদে কাজ শুরু করে, যার মেয়াদ ১৫ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা। মূল লক্ষ্য ছিল জুলাইয়ের মধ্যে সনদ চূড়ান্ত করা, যা সম্ভব হয়নি।

সংকটের মূল কারণ: জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি
গত বছরের ৮ আগস্টে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার কার্যক্রম শুরু করে। সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ ১১টি কমিশন গঠন করা হয়। এসব কমিশন সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সুপারিশ দেয়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এসব সুপারিশ নিয়ে ৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

জুলাই সনদে দলগুলো যেসব সুপারিশ বাস্তবায়নে একমত হবে, সেগুলো অন্তর্ভুক্ত হবে। খসড়ায় উল্লেখ আছে, আগামী নির্বাচনের পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে এসব সংস্কার বাস্তবায়নের অঙ্গীকার থাকবে।

বিএনপি এতে আপত্তি না করলেও জামায়াত ও এনসিপি দাবি করছে, এসব সংস্কার নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাস্তবায়িত হোক এবং সনদ আইনি ভিত্তি পাক। তাদের সন্দেহ, নির্বাচিত সরকারের অধীনে দায়িত্ব গেলে প্রকৃত বাস্তবায়ন হবে কিনা তা অনিশ্চিত।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, “যেসব বিষয়ে সবাই একমত, সেগুলো জাতির সামনে ঘোষণা করে নির্বাচনের পূর্বে সনদে স্বাক্ষর করিয়ে আইনি রূপ দেওয়া জরুরি।”

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীবের বক্তব্যও একই। তিনি বলেন, “নির্বাচনের আগে সনদ আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তি পেয়ে নির্বাচন হওয়া উচিত।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, স্বাক্ষর নিয়ে দলগুলো একমত, কিন্তু বাস্তবায়ন ও আইনি ভিত্তি স্পষ্ট না হলে স্বাক্ষর ব্যাহত হতে পারে। তিনি বলেন, “সাংবিধানিক সংশোধন ছাড়া অন্যান্য সংস্কার এ সরকারের সময়ের মধ্যে অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়ন সম্ভব।”

একমত না হলে কী হবে?
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ শেষের পথে। কিন্তু দলগুলো এখনও সনদ চূড়ান্ত করার বিষয়ে একমত হতে পারেনি। এই অবস্থায় প্রশ্ন জাগছে; যদি দলগুলো এই সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করতে না পারে, তাহলে কী হবে?

জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ বলছেন, এই সংকট মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে বলিষ্ঠ ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, “জুলাই সনদ কোনো একক দলের বিষয় নয়। এটা জাতীয় স্বার্থের একটি বিষয়। দলগুলোর মধ্যে যদি বিভিন্ন বিষয়ে একমত হওয়ার সুযোগ না হয়, তবে সে বিষয়গুলো সনদে স্পষ্ট উল্লেখ থাকবে।” তার ভাষায়, “এই সনদ দ্রুত স্বাক্ষর করে ঘোষণা দেওয়া উচিত এবং এর ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া দরকার।”

তিনি আরও জানান, জামায়াত কোনো ছাড় দেওয়ার পক্ষে নয়। উদাহরণস্বরূপ, তারা বলেছে একই ব্যক্তি একই সময়ে প্রধানমন্ত্রী ও সরকারপ্রধান হিসেবে থাকতে পারবেন না। এই বিষয়ে একটি জাতীয় দল একমত নয়। সে ক্ষেত্রে সরকারকে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে হবে, প্রয়োজনে গণভোট নিতে হবে।

অন্যদিকে, এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেছেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া, বিশেষ করে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে ভোটদান, দলীয় পদে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতি, এবং দুই সংসদের নির্বাচিত সদস্যদের গোপন ভোটে রাষ্ট্রপতির নির্বাচন ইত্যাদি বিষয়ে একমত না হলে তারা সনদে স্বাক্ষর করবে না।

বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমদ বলছেন, স্বাক্ষর কোনো বাধা নয়, আসল বিষয় হলো সনদ কিভাবে বাস্তবায়িত হবে এবং তার আইনি ভিত্তি কী হবে। সাংবিধানিক সংশোধন ছাড়া অন্যান্য প্রস্তাব সরকার এখনই অধ্যাদেশ, নির্বাহী বা অফিস আদেশে বাস্তবায়ন করতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ মনে করেন, নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘোষণার পর যা আলোচনা হয়েছে, তার ভিত্তিতেই স্বাক্ষর হওয়া উচিত। তিনি দলগুলোর মতপার্থক্যকে সংকট হিসেবে না দেখে রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্যের অংশ মনে করেন। তার মতে, কেউ কেউ নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করতে পারে, আবার কেউ স্বার্থ হাসিলের জন্য চাপ দিচ্ছে।

তার ভাষায়, “বিএনপি মনে করছে তারা সরকার গঠন করবে, তাই ক্ষমতা অবাধে প্রয়োগ করতে চায়, আর সেখানে বাধা দিতে পারে এমন প্রস্তাবে আপত্তি করছে। তবে বেশিরভাগ দল যা চায়, বিএনপি তা চায় না, এতে জনগণের ধারণা হতে পারে বিএনপি সংস্কার চায় না; এটা তাদের জন্য ঝুঁকি।”

এই পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে যদি দলগুলো একমত হতে না পারে, তবে কমিশনের পরবর্তী বৈঠকেই এই সংকট সমাধানের দিকনির্দেশনা স্পষ্ট হতে পারে।

সূত্র: বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জুলাই সনদ চূড়ান্তে ভিন্নমত, ঐকমত্যের পথে বড় ধাক্কা

আপডেট সময় : ০২:২১:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ অগাস্ট ২০২৫

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ শেষের দিকে আসছে, কিন্তু এখনো চূড়ান্ত করা যায়নি রাজনৈতিক সংস্কারের ‘জুলাই সনদ’। সনদটি বাস্তবায়নের পদ্ধতি ও আইনি ভিত্তি নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে গভীর মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। ফলে, এই সনদ চূড়ান্ত না হওয়ায় জাতীয় ঐকমত্যের পথে বড় ধাক্কা লেগেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, তারা আগামী সপ্তাহে আবারও আলোচনা শুরু করবে। প্রথমে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করবে, এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তৃতীয় দফার বৈঠকে বসবে। এ বৈঠকে সনদ ও তার বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করার চেষ্টা হবে।

আগের সময়গুলোতে কমিশন একাধিকবার রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে খসড়া পাঠিয়েছে। সর্বশেষ ২৮ জুলাই সনদের খসড়া পাঠানো হয়। দলগুলো তাদের মতামত জানিয়েছে। কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বিবিসিকে জানিয়েছেন, আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে সনদের পূর্ণাঙ্গ খসড়া পাঠানো হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ছয় মাস মেয়াদে কাজ শুরু করে, যার মেয়াদ ১৫ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা। মূল লক্ষ্য ছিল জুলাইয়ের মধ্যে সনদ চূড়ান্ত করা, যা সম্ভব হয়নি।

সংকটের মূল কারণ: জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি
গত বছরের ৮ আগস্টে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার কার্যক্রম শুরু করে। সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ ১১টি কমিশন গঠন করা হয়। এসব কমিশন সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সুপারিশ দেয়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এসব সুপারিশ নিয়ে ৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

জুলাই সনদে দলগুলো যেসব সুপারিশ বাস্তবায়নে একমত হবে, সেগুলো অন্তর্ভুক্ত হবে। খসড়ায় উল্লেখ আছে, আগামী নির্বাচনের পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে এসব সংস্কার বাস্তবায়নের অঙ্গীকার থাকবে।

বিএনপি এতে আপত্তি না করলেও জামায়াত ও এনসিপি দাবি করছে, এসব সংস্কার নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাস্তবায়িত হোক এবং সনদ আইনি ভিত্তি পাক। তাদের সন্দেহ, নির্বাচিত সরকারের অধীনে দায়িত্ব গেলে প্রকৃত বাস্তবায়ন হবে কিনা তা অনিশ্চিত।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, “যেসব বিষয়ে সবাই একমত, সেগুলো জাতির সামনে ঘোষণা করে নির্বাচনের পূর্বে সনদে স্বাক্ষর করিয়ে আইনি রূপ দেওয়া জরুরি।”

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীবের বক্তব্যও একই। তিনি বলেন, “নির্বাচনের আগে সনদ আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তি পেয়ে নির্বাচন হওয়া উচিত।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, স্বাক্ষর নিয়ে দলগুলো একমত, কিন্তু বাস্তবায়ন ও আইনি ভিত্তি স্পষ্ট না হলে স্বাক্ষর ব্যাহত হতে পারে। তিনি বলেন, “সাংবিধানিক সংশোধন ছাড়া অন্যান্য সংস্কার এ সরকারের সময়ের মধ্যে অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়ন সম্ভব।”

একমত না হলে কী হবে?
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ শেষের পথে। কিন্তু দলগুলো এখনও সনদ চূড়ান্ত করার বিষয়ে একমত হতে পারেনি। এই অবস্থায় প্রশ্ন জাগছে; যদি দলগুলো এই সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করতে না পারে, তাহলে কী হবে?

জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ বলছেন, এই সংকট মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে বলিষ্ঠ ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন, “জুলাই সনদ কোনো একক দলের বিষয় নয়। এটা জাতীয় স্বার্থের একটি বিষয়। দলগুলোর মধ্যে যদি বিভিন্ন বিষয়ে একমত হওয়ার সুযোগ না হয়, তবে সে বিষয়গুলো সনদে স্পষ্ট উল্লেখ থাকবে।” তার ভাষায়, “এই সনদ দ্রুত স্বাক্ষর করে ঘোষণা দেওয়া উচিত এবং এর ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া দরকার।”

তিনি আরও জানান, জামায়াত কোনো ছাড় দেওয়ার পক্ষে নয়। উদাহরণস্বরূপ, তারা বলেছে একই ব্যক্তি একই সময়ে প্রধানমন্ত্রী ও সরকারপ্রধান হিসেবে থাকতে পারবেন না। এই বিষয়ে একটি জাতীয় দল একমত নয়। সে ক্ষেত্রে সরকারকে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে হবে, প্রয়োজনে গণভোট নিতে হবে।

অন্যদিকে, এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেছেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া, বিশেষ করে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে ভোটদান, দলীয় পদে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতি, এবং দুই সংসদের নির্বাচিত সদস্যদের গোপন ভোটে রাষ্ট্রপতির নির্বাচন ইত্যাদি বিষয়ে একমত না হলে তারা সনদে স্বাক্ষর করবে না।

বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমদ বলছেন, স্বাক্ষর কোনো বাধা নয়, আসল বিষয় হলো সনদ কিভাবে বাস্তবায়িত হবে এবং তার আইনি ভিত্তি কী হবে। সাংবিধানিক সংশোধন ছাড়া অন্যান্য প্রস্তাব সরকার এখনই অধ্যাদেশ, নির্বাহী বা অফিস আদেশে বাস্তবায়ন করতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ মনে করেন, নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় ঘোষণার পর যা আলোচনা হয়েছে, তার ভিত্তিতেই স্বাক্ষর হওয়া উচিত। তিনি দলগুলোর মতপার্থক্যকে সংকট হিসেবে না দেখে রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্যের অংশ মনে করেন। তার মতে, কেউ কেউ নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করতে পারে, আবার কেউ স্বার্থ হাসিলের জন্য চাপ দিচ্ছে।

তার ভাষায়, “বিএনপি মনে করছে তারা সরকার গঠন করবে, তাই ক্ষমতা অবাধে প্রয়োগ করতে চায়, আর সেখানে বাধা দিতে পারে এমন প্রস্তাবে আপত্তি করছে। তবে বেশিরভাগ দল যা চায়, বিএনপি তা চায় না, এতে জনগণের ধারণা হতে পারে বিএনপি সংস্কার চায় না; এটা তাদের জন্য ঝুঁকি।”

এই পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে যদি দলগুলো একমত হতে না পারে, তবে কমিশনের পরবর্তী বৈঠকেই এই সংকট সমাধানের দিকনির্দেশনা স্পষ্ট হতে পারে।

সূত্র: বিবিসি