উত্তাল সাগরে ভাঙছে স্বপ্নের মেরিন ড্রাইভ

- আপডেট সময় : ১০:০৯:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
- / 141

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ঘণীভূত হয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও পরে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে সাগর উত্তাল এবং জোয়ারের পানি বেড়েছে। এই ঢেউয়ের আঘাতে কক্সবাজারের টেকনাফের মেরিন ড্রাইভের আড়াই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার সকালে সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়া ঘাট থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভের বিভিন্ন অংশে ভাঙনের চিত্র দেখা গেছে। আগে জিও ব্যাগ দিয়ে রক্ষা করার চেষ্টা হলেও সেগুলোর ওপর দিয়েও ঢেউয়ের ধাক্কায় অন্তত ১০টি স্থানে সড়কের বিভিন্ন অংশ ধসে পড়েছে।
কক্সবাজার আঞ্চলিক আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানান, নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ২৬৫ কিমি পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার বন্দর থেকে ২৬৫ কিমি পশ্চিমে, মোংলা বন্দর থেকে ১৩০ কিমি এবং পায়রা থেকে ১১০ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে। এটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার বিকালে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এর প্রভাবে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অমাবস্যা ও নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১-৩ ফুট উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভের আড়াই কিলোমিটার অংশে অন্তত ১০টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত বছরও এই এলাকায় পূর্ণিমার জোয়ারে ভাঙন দেখা দিয়েছিল। তখন সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর জিও ব্যাগ দিয়ে মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে, যার ফলে প্রায় দুই হাজার পরিবার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন আহমদ বলেন, মেরিন ড্রাইভের ভাঙনে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এ অঞ্চলের প্রায় দেড় হাজার একরের বেশি জমিতে চাষাবাদ হয়, যা হুমকির মুখে পড়েছে।
একজন জনপ্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তত ১০টি স্থানে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেনাবাহিনীর আগের উদ্যোগে কিছুটা রক্ষা হলেও বর্তমানে পরিস্থিতি আবারও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। সড়ক ভেঙে গেলে ফসলি জমি প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. সেলিম ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ছিদ্দিক জানান, স্থানীয় লোকজন মুঠোফোনে ভাঙনের তথ্য দিয়েছেন এবং তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউএনওকে অবহিত করেছেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, বিষয়টি তিনি জেনেছেন এবং কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।