ঢাকা ০২:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ভারত থেকে উদ্ধার দুই বাংলাদেশি তরুণী মাদাগাস্কারে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬, স্বজনদের আহাজারি বিশ্ব খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে রোম গেলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস পূর্বের নির্বাচনী কর্মকর্তারা এবার দায়িত্বে থাকছেন না: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তারুণ্যের অঙ্গীকারে প্রবাসী নেতৃত্ব—জাপান কানসাই ইউনিট জাতীয়তাবাদী দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত নরসিংদীর আশিক খন্দকার বিমানবন্দরে সোহেল তাজের বিদেশযাত্রায় বাধা শ্যামনগরের ৭০ মণ্ডপে তারেক রহমানের আর্থিক উপহার নির্বাচন নিয়ে ‘নীলনকশা’ হলে জনগণ ছেড়ে দেবে না লাদাখ বিক্ষোভের নেতা সোনম ওয়াংচুক গ্রেপ্তার

ভারত থেকে উদ্ধার দুই বাংলাদেশি তরুণী

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:১২:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
  • / 42

ভারত থেকে উদ্ধার দুই বাংলাদেশি তরুণী

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চাকরির প্রলোভনে ভারতে গিয়ে মানবপাচারের জালে ফেঁসে গিয়েছিলেন দুই বাংলাদেশি তরুণী। ‘বিউটি পার্লারে চাকরি’ করার প্রলোভনে তাদের দেহব্যবসার অন্ধকার জগতে ফেলে রাখা হয়েছিল। তবে পুনের পুলিশের দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। দুই তরুণীর বয়স ২২ ও ২০ বছর।

ঘটনাটি প্রকাশ পায়, যখন কাত্রজ এলাকার এক তরুণী নিজেই পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন করে সাহায্য চেয়েছিলেন। পুলিশ তার অবস্থান শনাক্ত করে দ্রুত অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে। একই তথ্যের ভিত্তিতে আম্বেগাঁও-পাঠার এলাকার একটি ফ্ল্যাটে গিয়ে আরও এক তরুণীকে উদ্ধার করা হয়।

এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রজু পাটিল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি পুনের ধনকাওয়াদি এলাকার বাসিন্দা। আদালত তাকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে। তদন্তকারীরা এখন তার স্ত্রীকেও খুঁজছেন, যিনি এই মানবপাচারচক্রের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উদ্ধার অভিযান পুনের ভারতী বিদ্যাপীঠ থানায় নথিভুক্ত করা হয়েছে। সহকারী পুলিশ ইন্সপেক্টর স্বপ্নিল পাটিল এবং সিনিয়র ইন্সপেক্টর রাহুলকুমার খিলারের নেতৃত্বে দ্রুত পদক্ষেপে দুই তরুণী নিরাপদে উদ্ধার হয়েছেন।

পুলিশের ধারণা, এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। গত কয়েক মাসে শহরের বুধওয়ার পেথ, কাত্রজ ও আম্বেগাঁও এলাকায় একই ধরনের পাচারচক্র সক্রিয় রয়েছে। এই নেটওয়ার্ক সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে তরুণীদের ভারতে পাচারে ভূমিকা রাখছে। ভুয়া নথি, অবৈধ এজেন্ট এবং স্থানীয় হোস্টদের সহায়তায় গড়ে উঠেছে এ আন্তঃদেশীয় মানবপাচার সিন্ডিকেট।

উদ্ধার হওয়া দুই তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তাদের মানসিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় এনজিও ও সামাজিক সেবা দপ্তর তাদের নিরাপত্তা ও আইনি সুরক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা শুধু অপরাধ নয়, এটি মানবিক সংকটেরও প্রতিফলন। চাকরির আশায় সীমান্ত পেরোনো তরুণীরা যেন প্রতারণার শিকার না হয়, এজন্য সীমান্ত নজরদারি, অনলাইন বিজ্ঞাপনের যাচাই-বাছাই এবং স্থানীয় নিয়োগদাতাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি।

এই ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়, কখনো একটি ফোনকল জীবন বাঁচাতে পারে, তবে দুঃস্বপ্ন থেকে মুক্ত থাকতে প্রয়োজন সমাজের সম্মিলিত সজাগতা, প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর আন্তরিক সহযোগিতা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ভারত থেকে উদ্ধার দুই বাংলাদেশি তরুণী

আপডেট সময় : ১০:১২:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

চাকরির প্রলোভনে ভারতে গিয়ে মানবপাচারের জালে ফেঁসে গিয়েছিলেন দুই বাংলাদেশি তরুণী। ‘বিউটি পার্লারে চাকরি’ করার প্রলোভনে তাদের দেহব্যবসার অন্ধকার জগতে ফেলে রাখা হয়েছিল। তবে পুনের পুলিশের দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। দুই তরুণীর বয়স ২২ ও ২০ বছর।

ঘটনাটি প্রকাশ পায়, যখন কাত্রজ এলাকার এক তরুণী নিজেই পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন করে সাহায্য চেয়েছিলেন। পুলিশ তার অবস্থান শনাক্ত করে দ্রুত অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে। একই তথ্যের ভিত্তিতে আম্বেগাঁও-পাঠার এলাকার একটি ফ্ল্যাটে গিয়ে আরও এক তরুণীকে উদ্ধার করা হয়।

এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রজু পাটিল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি পুনের ধনকাওয়াদি এলাকার বাসিন্দা। আদালত তাকে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে। তদন্তকারীরা এখন তার স্ত্রীকেও খুঁজছেন, যিনি এই মানবপাচারচক্রের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উদ্ধার অভিযান পুনের ভারতী বিদ্যাপীঠ থানায় নথিভুক্ত করা হয়েছে। সহকারী পুলিশ ইন্সপেক্টর স্বপ্নিল পাটিল এবং সিনিয়র ইন্সপেক্টর রাহুলকুমার খিলারের নেতৃত্বে দ্রুত পদক্ষেপে দুই তরুণী নিরাপদে উদ্ধার হয়েছেন।

পুলিশের ধারণা, এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। গত কয়েক মাসে শহরের বুধওয়ার পেথ, কাত্রজ ও আম্বেগাঁও এলাকায় একই ধরনের পাচারচক্র সক্রিয় রয়েছে। এই নেটওয়ার্ক সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে তরুণীদের ভারতে পাচারে ভূমিকা রাখছে। ভুয়া নথি, অবৈধ এজেন্ট এবং স্থানীয় হোস্টদের সহায়তায় গড়ে উঠেছে এ আন্তঃদেশীয় মানবপাচার সিন্ডিকেট।

উদ্ধার হওয়া দুই তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তাদের মানসিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় এনজিও ও সামাজিক সেবা দপ্তর তাদের নিরাপত্তা ও আইনি সুরক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে।

মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা শুধু অপরাধ নয়, এটি মানবিক সংকটেরও প্রতিফলন। চাকরির আশায় সীমান্ত পেরোনো তরুণীরা যেন প্রতারণার শিকার না হয়, এজন্য সীমান্ত নজরদারি, অনলাইন বিজ্ঞাপনের যাচাই-বাছাই এবং স্থানীয় নিয়োগদাতাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি।

এই ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়, কখনো একটি ফোনকল জীবন বাঁচাতে পারে, তবে দুঃস্বপ্ন থেকে মুক্ত থাকতে প্রয়োজন সমাজের সম্মিলিত সজাগতা, প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর আন্তরিক সহযোগিতা।