ঢাকা ০৩:০১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ভারত থেকে উদ্ধার দুই বাংলাদেশি তরুণী মাদাগাস্কারে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬, স্বজনদের আহাজারি বিশ্ব খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে রোম গেলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস পূর্বের নির্বাচনী কর্মকর্তারা এবার দায়িত্বে থাকছেন না: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তারুণ্যের অঙ্গীকারে প্রবাসী নেতৃত্ব—জাপান কানসাই ইউনিট জাতীয়তাবাদী দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত নরসিংদীর আশিক খন্দকার বিমানবন্দরে সোহেল তাজের বিদেশযাত্রায় বাধা শ্যামনগরের ৭০ মণ্ডপে তারেক রহমানের আর্থিক উপহার নির্বাচন নিয়ে ‘নীলনকশা’ হলে জনগণ ছেড়ে দেবে না লাদাখ বিক্ষোভের নেতা সোনম ওয়াংচুক গ্রেপ্তার

পর্তুগালে প্রবাসী বাংলাদেশির আত্মহত্যা

হাফিজ আল আসাদ, পর্তুগাল
  • আপডেট সময় : ০১:৪৪:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
  • / 198

আত্মহত্যা

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইউরোপের নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে দামি দামি অট্টালিকা, বাহারি রঙের বাড়ি আর বিলাসী জীবনযাপনের ছবি। কিন্তু এই বিলাসী জীবনযাপন আর দামী দামী অট্টালিকার পেছনে থাকে হাজারো প্রবাসীর বুকফাটা আর্তনাদ, দুঃখ-কষ্টের গল্প।

যারা শুধুমাত্র পরিবার-পরিজনকে সুখে রাখার জন্য বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন, নিজের সবকিছু বিসর্জন দিয়ে—তাদের আবেগগুলো কখনো কেউ বুঝতে চায়নি। মোহাম্মদ আলী, উত্তরবঙ্গের সিরাজগঞ্জে যার জন্ম। একটু উন্নত জীবন ও জীবিকার সন্ধানে পাঁচ বছর আগে ইউরোপের দেশ পর্তুগালে পাড়ি জমান। চোখে ছিল হাজারো স্বপ্ন, হাজারো আশা। কিন্তু হঠাৎ সবকিছু বিসর্জন দিয়ে বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার পথ!

গত ২৫ জুন, পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে চলন্ত মেট্রো লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। এই ঘটনায় পর্তুগালে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে, বাংলাদেশ কমিউনিটিতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

মোহাম্মদ আলীর দীর্ঘদিনের সহকর্মী জানান, তিনি খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। কেন তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন, তা জানা নেই। তবে পারিবারিক অশান্তি ও মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পর্তুগাল প্রবাসী শহিন আহমদ বলেন, ‘‘এই মৃত্যু কোনো সাধারণ মৃত্যু নয়, এটা হাজারো প্রবাসীর বুকফাটা কান্নার প্রতীক।’’

পরিবার থেকে দূরে, স্ত্রীর অবহেলা, কাজের অনিশ্চয়তা, টাকাপয়সার টানাপোড়েন এবং সর্বোপরি পেপারস বা ডকুমেন্ট বৈধতা নিয়ে প্রতিদিনের সংগ্রাম—প্রবাস জীবন যেন এক নীরব যুদ্ধক্ষেত্র। প্রবাস মানে শুধু টাকা নয়, প্রবাস মানে নিজের মনকে প্রতিদিন নতুন করে বোঝানো, নতুন করে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকা।

দিন দিন নতুন নতুন আইন, কঠোর ডানপন্থীদের অভিবাসী-বিরোধী মনোভাব, কাজের অনিশ্চয়তা, কম বেতন—সব মিলিয়ে প্রবাসে থাকা মানুষদের দিন দিন মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

পর্তুগালে প্রবাসী বাংলাদেশির আত্মহত্যা

আপডেট সময় : ০১:৪৪:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

ইউরোপের নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে দামি দামি অট্টালিকা, বাহারি রঙের বাড়ি আর বিলাসী জীবনযাপনের ছবি। কিন্তু এই বিলাসী জীবনযাপন আর দামী দামী অট্টালিকার পেছনে থাকে হাজারো প্রবাসীর বুকফাটা আর্তনাদ, দুঃখ-কষ্টের গল্প।

যারা শুধুমাত্র পরিবার-পরিজনকে সুখে রাখার জন্য বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন, নিজের সবকিছু বিসর্জন দিয়ে—তাদের আবেগগুলো কখনো কেউ বুঝতে চায়নি। মোহাম্মদ আলী, উত্তরবঙ্গের সিরাজগঞ্জে যার জন্ম। একটু উন্নত জীবন ও জীবিকার সন্ধানে পাঁচ বছর আগে ইউরোপের দেশ পর্তুগালে পাড়ি জমান। চোখে ছিল হাজারো স্বপ্ন, হাজারো আশা। কিন্তু হঠাৎ সবকিছু বিসর্জন দিয়ে বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার পথ!

গত ২৫ জুন, পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে চলন্ত মেট্রো লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। এই ঘটনায় পর্তুগালে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে, বাংলাদেশ কমিউনিটিতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

মোহাম্মদ আলীর দীর্ঘদিনের সহকর্মী জানান, তিনি খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। কেন তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন, তা জানা নেই। তবে পারিবারিক অশান্তি ও মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পর্তুগাল প্রবাসী শহিন আহমদ বলেন, ‘‘এই মৃত্যু কোনো সাধারণ মৃত্যু নয়, এটা হাজারো প্রবাসীর বুকফাটা কান্নার প্রতীক।’’

পরিবার থেকে দূরে, স্ত্রীর অবহেলা, কাজের অনিশ্চয়তা, টাকাপয়সার টানাপোড়েন এবং সর্বোপরি পেপারস বা ডকুমেন্ট বৈধতা নিয়ে প্রতিদিনের সংগ্রাম—প্রবাস জীবন যেন এক নীরব যুদ্ধক্ষেত্র। প্রবাস মানে শুধু টাকা নয়, প্রবাস মানে নিজের মনকে প্রতিদিন নতুন করে বোঝানো, নতুন করে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকা।

দিন দিন নতুন নতুন আইন, কঠোর ডানপন্থীদের অভিবাসী-বিরোধী মনোভাব, কাজের অনিশ্চয়তা, কম বেতন—সব মিলিয়ে প্রবাসে থাকা মানুষদের দিন দিন মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন।