তিন কোটি টাকার বিল তদবিরে দুই শিক্ষার্থী আটক

- আপডেট সময় : ১১:৪৫:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ অগাস্ট ২০২৫
- / 152

ঝালকাঠি শহরে তিন কোটি টাকার একটি সড়ক ও সেতু নির্মাণ প্রকল্পের বিল তদবিরের অভিযোগে দুই শিক্ষার্থীকে জনতা আটক করে পুলিশে দেয়। তবে পরে রাজনৈতিক নেতা ও সাংবাদিকদের মধ্যস্থতায় তারা মুচলেকা দিয়ে থানার হেফাজত থেকে মুক্তি পান।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে এলজিইডি কার্যালয়ে তদবির করতে গিয়ে ওই দুই তরুণ প্রকৌশলীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বিএনপি-পন্থী কিছু ঠিকাদারের সঙ্গে। এরপর জনতা তাদের ধরে পুলিশে দেয়। আটক দুইজন হলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিলুপ্ত কমিটির সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম (২৪) এবং বরিশাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী (২৫)।
রাত ৯টা ১০ মিনিটে সদর থানায় লিখিত মুচলেকা দেওয়ার পর তারা মুক্তি পান। পুলিশ জানায়, এলজিইডির পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকায় এবং বিএনপি, যুবদল ও এনসিপি নেতাদের উপস্থিতিতে সমঝোতা হওয়ায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ওসির রুমে একাধিক পক্ষের স্বাক্ষরে আপসনামা হয়।
জানা যায়, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক এমপি আমির হোসেন আমুর ব্যক্তিগত কম্পিউটার অপারেটর শাওন খানের নামে থাকা তিন কোটি টাকার একটি প্রকল্পের চূড়ান্ত বিল ছাড় করাতে এসেছিলেন এই দুই শিক্ষার্থী। কিন্তু প্রকল্পের কাজ এখনও সম্পন্ন না হওয়ায় উপজেলা প্রকৌশলী ইকবাল কবীর তদবির প্রত্যাখ্যান করেন।
ইকবাল কবীর অভিযোগ করেন, প্রকৃত ঠিকাদারকে বাদ দিয়ে অন্য লোকজন নিয়ে বিল ছাড়ানোর চেষ্টা করেন সিরাজুল ও মেহেদী, এমনকি ঘুষ প্রস্তাবও দেন। তিনি এতে রাজি না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে হয়রানি চালানো হচ্ছে।
অন্যদিকে, আটক দুই শিক্ষার্থী দাবি করেন, তারা প্রকৌশলীর ঘুষ ও অনিয়ম নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু ঠিকাদাররা ভিন্নভাবে বিষয়টি তুলে ধরে পুলিশে ধরিয়ে দেয়।
পরবর্তীতে ঝালকাঠি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মুবিন, বরিশাল জেলা এনসিপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, বরিশাল মহানগর সংগঠক তুষার খানসহ স্থানীয় নেতারা থানায় গিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে মর্মে লিখিত বিবৃতির মাধ্যমে সমঝোতা করেন।
সন্ধ্যার পর থানার সামনে দুই শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি ছিল নিছক ভুল বোঝাবুঝি, যা সিনিয়র নেতাদের উপস্থিতিতে নিষ্পত্তি হয়েছে।
ঝালকাঠি সদর থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, এলজিইডির মৌখিক অভিযোগ থাকলেও কোনো লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। রাজনৈতিক নেতাদের অনুরোধে মীমাংসার ভিত্তিতে অভিযুক্তদের মুক্তি দেওয়া হয়।