ঢাকা ০৫:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ভারত থেকে উদ্ধার দুই বাংলাদেশি তরুণী মাদাগাস্কারে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬, স্বজনদের আহাজারি বিশ্ব খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে রোম গেলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস পূর্বের নির্বাচনী কর্মকর্তারা এবার দায়িত্বে থাকছেন না: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তারুণ্যের অঙ্গীকারে প্রবাসী নেতৃত্ব—জাপান কানসাই ইউনিট জাতীয়তাবাদী দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত নরসিংদীর আশিক খন্দকার বিমানবন্দরে সোহেল তাজের বিদেশযাত্রায় বাধা শ্যামনগরের ৭০ মণ্ডপে তারেক রহমানের আর্থিক উপহার নির্বাচন নিয়ে ‘নীলনকশা’ হলে জনগণ ছেড়ে দেবে না লাদাখ বিক্ষোভের নেতা সোনম ওয়াংচুক গ্রেপ্তার

আদালতের বারান্দায় তোয়া ও ফুয়াদ, মা তুমি কোথায়?

ইয়ারুল ইসলাম, সাতক্ষীরা
  • আপডেট সময় : ১১:৩৬:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
  • / 154

আদালতের বারান্দায় তোয়া ও ফুয়াদ, মা তুমি কোথায়?

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বয়স মাত্র ৬ ও ৫। এই বয়সে অন্য শিশুরা যেখানে খেলাধুলায় মেতে থাকে, সেখানে তোয়া ও ফুয়াদ সাতক্ষীরার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে মায়ের খোঁজে। তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তাদের মা আনজুয়ারা খাতুন আইভী হঠাৎ করেই সংসার ত্যাগ করেন। সেই থেকে বাবা সোহেল রানার হাত ধরে দুই শিশু আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরছে মায়ের ফিরে আসার আশায়।

সোহেল রানা সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি হিসেবে কর্মরত। সংসার চালাতে তিনি মাছ চাষও করেন। তার অভিযোগ, আইভী একই গ্রামের বিবাহিত ও বখাটে রবিউল ইসলাম গাজীর প্ররোচনায় পড়ে স্বামী-সন্তান ফেলে পালিয়ে যান। এ সময় তিনি স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান সামগ্রীও সঙ্গে করে নিয়ে যান, যা পরবর্তীতে রবিউলের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এমনকি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে রবিউল আইভীর ফোনটিও নষ্ট করে দেয় বলে দাবি করেন সোহেল রানা।

জানা যায়, গত রমজানের ১৩ তারিখে আইভী যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার পুরন্তপুরে তার বাবার বাড়িতে গিয়ে সেখান থেকেই রবিউলের সঙ্গে পালিয়ে যান। এরপর থেকে তোয়া ও ফুয়াদ নিখোঁজ মাকে খুঁজতে শহরের গলি গলি ঘুরছে। তারা দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার লাগিয়ে বলছে—”মা, তুমি কোথায়?”

সাতক্ষীরা জেলা লিগ্যাল এইডের আইনজীবী মুনীর উদ্দিন জানান, দুই শিশুর আকুতি শুনে আদালতের সহায়তা চাওয়া হয়। এরপর আদালত অভিযুক্ত রবিউল ইসলামকে একাধিকবার হাজিরার নির্দেশ দিলেও এখনো আইভীর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

সন্তানদের মানুষ করতে চাওয়া সোহেল রানা এখন একাই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। ভাই না থাকায় একমাত্র খুলনায় থাকা বোনই তার ভরসা। তারপরও তিনি বিশ্বাস করেন, একদিন তার স্ত্রী ফিরে আসবেন, এবং সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে আবার একটি নতুন জীবন শুরু করবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আদালতের বারান্দায় তোয়া ও ফুয়াদ, মা তুমি কোথায়?

আপডেট সময় : ১১:৩৬:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫

বয়স মাত্র ৬ ও ৫। এই বয়সে অন্য শিশুরা যেখানে খেলাধুলায় মেতে থাকে, সেখানে তোয়া ও ফুয়াদ সাতক্ষীরার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে মায়ের খোঁজে। তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় তাদের মা আনজুয়ারা খাতুন আইভী হঠাৎ করেই সংসার ত্যাগ করেন। সেই থেকে বাবা সোহেল রানার হাত ধরে দুই শিশু আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরছে মায়ের ফিরে আসার আশায়।

সোহেল রানা সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি হিসেবে কর্মরত। সংসার চালাতে তিনি মাছ চাষও করেন। তার অভিযোগ, আইভী একই গ্রামের বিবাহিত ও বখাটে রবিউল ইসলাম গাজীর প্ররোচনায় পড়ে স্বামী-সন্তান ফেলে পালিয়ে যান। এ সময় তিনি স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান সামগ্রীও সঙ্গে করে নিয়ে যান, যা পরবর্তীতে রবিউলের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এমনকি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে রবিউল আইভীর ফোনটিও নষ্ট করে দেয় বলে দাবি করেন সোহেল রানা।

জানা যায়, গত রমজানের ১৩ তারিখে আইভী যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার পুরন্তপুরে তার বাবার বাড়িতে গিয়ে সেখান থেকেই রবিউলের সঙ্গে পালিয়ে যান। এরপর থেকে তোয়া ও ফুয়াদ নিখোঁজ মাকে খুঁজতে শহরের গলি গলি ঘুরছে। তারা দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার লাগিয়ে বলছে—”মা, তুমি কোথায়?”

সাতক্ষীরা জেলা লিগ্যাল এইডের আইনজীবী মুনীর উদ্দিন জানান, দুই শিশুর আকুতি শুনে আদালতের সহায়তা চাওয়া হয়। এরপর আদালত অভিযুক্ত রবিউল ইসলামকে একাধিকবার হাজিরার নির্দেশ দিলেও এখনো আইভীর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

সন্তানদের মানুষ করতে চাওয়া সোহেল রানা এখন একাই সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। ভাই না থাকায় একমাত্র খুলনায় থাকা বোনই তার ভরসা। তারপরও তিনি বিশ্বাস করেন, একদিন তার স্ত্রী ফিরে আসবেন, এবং সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে আবার একটি নতুন জীবন শুরু করবেন।