ঢাকা ০২:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ভারত থেকে উদ্ধার দুই বাংলাদেশি তরুণী মাদাগাস্কারে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬, স্বজনদের আহাজারি বিশ্ব খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে রোম গেলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস পূর্বের নির্বাচনী কর্মকর্তারা এবার দায়িত্বে থাকছেন না: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তারুণ্যের অঙ্গীকারে প্রবাসী নেতৃত্ব—জাপান কানসাই ইউনিট জাতীয়তাবাদী দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত নরসিংদীর আশিক খন্দকার বিমানবন্দরে সোহেল তাজের বিদেশযাত্রায় বাধা শ্যামনগরের ৭০ মণ্ডপে তারেক রহমানের আর্থিক উপহার নির্বাচন নিয়ে ‘নীলনকশা’ হলে জনগণ ছেড়ে দেবে না লাদাখ বিক্ষোভের নেতা সোনম ওয়াংচুক গ্রেপ্তার

আমেরিকার টেক্সাসে বন্যায় ৭৮ জনের প্রাণহানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:১২:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
  • / 141
দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে আকস্মিক ও ভয়াবহ বন্যায় এখন পর্যন্ত ৭৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ৪১ জন। শুক্রবার শুরু হওয়া এই দুর্যোগের ভয়াবহতা সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে কার কাউন্টিতে, যেখানে একাই ৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ২৮ জনই শিশু।

কার কাউন্টিতে গুয়ারডালুপ নদীর তীরে অবস্থিত খ্রিস্টান মেয়েদের গ্রীষ্মকালীন প্রশিক্ষণকেন্দ্র ‘ক্যাম্প মিস্টিক’ সম্পূর্ণভাবে প্লাবিত হয়েছে। ক্যাম্পের ১০ জন কিশোরী ও তাদের একজন পরামর্শক এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
উদ্ধারকাজে নিয়োজিত এক কর্মকর্তা বলেন, “জায়গাটা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা আশা করছি, কেউ যদি আশেপাশে আশ্রয় নিতে পেরে থাকে—তাহলেই বেঁচে থাকতে পারে।”

আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় আরও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হতে পারে এবং প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কর্তৃপক্ষ।

উদ্ধারকারীরা কাদামাটির স্তূপ ও বিধ্বস্ত স্থাপনাগুলোর মধ্য দিয়ে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন। বিষাক্ত সাপ ও বিপজ্জনক অবকাঠামো উদ্ধারকর্মীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বন্যার তিন দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও উদ্ধার অভিযান পুরোপুরি থামেনি। তবে কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, অভিযান এখন ধীরে ধীরে উদ্ধার-পরবর্তী পুনরুদ্ধার পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।

কার কাউন্টিতে উদ্ধার করা মরদেহগুলোর মধ্যে এখনও ১৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক১০ জন শিশুর পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট জানিয়েছেন,

“নিখোঁজ প্রত্যেককে খুঁজে বের করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কারো জন্যই কমতি থাকবে না।”

রোববার, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কার কাউন্টিকে ‘দুর্যোগ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং ফেডারেল জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থাকে (FEMA) জরুরি সহায়তার নির্দেশ দিয়েছেন।

সরকারি সহায়তার পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরাই ত্রাণ সহায়তায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। কেউ খাবার সরবরাহ করছেন, কেউ আশ্রয় দিচ্ছেন, আবার কেউ জামাকাপড় ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পৌঁছে দিচ্ছেন দুর্গতদের কাছে।

এক বাসিন্দা বলেন,

“এখানে সবাই এখন একে অন্যের পাশে। যেভাবে পারি, আমরা একে অপরকে বাঁচাতে চাই।”

বন্যায় নদীর পাশের দুই লেনের মহাসড়ক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আশপাশের ভাঙা বাড়ি, উপড়ে পড়া গাছ, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আসবাবপত্র, বিদ্যুৎ খুঁটি—সব মিলিয়ে এক মৃত্যুপুরীর চেহারা নিয়েছে পুরো এলাকা।

এই দুর্যোগ কেবল টেক্সাস নয়, পুরো যুক্তরাষ্ট্রকেই কাঁপিয়ে দিয়েছে। এখনো চলছে জীবন বাঁচানোর লড়াই। নিখোঁজদের ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় পরিবারগুলো কাটাচ্ছে মুহূর্তকে মুহূর্ত। এই সময়েই প্রমাণ হচ্ছে—মানুষের পাশে মানুষই শেষ ভরসা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

আমেরিকার টেক্সাসে বন্যায় ৭৮ জনের প্রাণহানি

আপডেট সময় : ১০:১২:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে আকস্মিক ও ভয়াবহ বন্যায় এখন পর্যন্ত ৭৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ৪১ জন। শুক্রবার শুরু হওয়া এই দুর্যোগের ভয়াবহতা সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে কার কাউন্টিতে, যেখানে একাই ৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ২৮ জনই শিশু।

কার কাউন্টিতে গুয়ারডালুপ নদীর তীরে অবস্থিত খ্রিস্টান মেয়েদের গ্রীষ্মকালীন প্রশিক্ষণকেন্দ্র ‘ক্যাম্প মিস্টিক’ সম্পূর্ণভাবে প্লাবিত হয়েছে। ক্যাম্পের ১০ জন কিশোরী ও তাদের একজন পরামর্শক এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।
উদ্ধারকাজে নিয়োজিত এক কর্মকর্তা বলেন, “জায়গাটা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা আশা করছি, কেউ যদি আশেপাশে আশ্রয় নিতে পেরে থাকে—তাহলেই বেঁচে থাকতে পারে।”

আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় আরও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হতে পারে এবং প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কর্তৃপক্ষ।

উদ্ধারকারীরা কাদামাটির স্তূপ ও বিধ্বস্ত স্থাপনাগুলোর মধ্য দিয়ে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন। বিষাক্ত সাপ ও বিপজ্জনক অবকাঠামো উদ্ধারকর্মীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বন্যার তিন দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও উদ্ধার অভিযান পুরোপুরি থামেনি। তবে কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, অভিযান এখন ধীরে ধীরে উদ্ধার-পরবর্তী পুনরুদ্ধার পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।

কার কাউন্টিতে উদ্ধার করা মরদেহগুলোর মধ্যে এখনও ১৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক১০ জন শিশুর পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট জানিয়েছেন,

“নিখোঁজ প্রত্যেককে খুঁজে বের করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কারো জন্যই কমতি থাকবে না।”

রোববার, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কার কাউন্টিকে ‘দুর্যোগ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং ফেডারেল জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থাকে (FEMA) জরুরি সহায়তার নির্দেশ দিয়েছেন।

সরকারি সহায়তার পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরাই ত্রাণ সহায়তায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। কেউ খাবার সরবরাহ করছেন, কেউ আশ্রয় দিচ্ছেন, আবার কেউ জামাকাপড় ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পৌঁছে দিচ্ছেন দুর্গতদের কাছে।

এক বাসিন্দা বলেন,

“এখানে সবাই এখন একে অন্যের পাশে। যেভাবে পারি, আমরা একে অপরকে বাঁচাতে চাই।”

বন্যায় নদীর পাশের দুই লেনের মহাসড়ক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আশপাশের ভাঙা বাড়ি, উপড়ে পড়া গাছ, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আসবাবপত্র, বিদ্যুৎ খুঁটি—সব মিলিয়ে এক মৃত্যুপুরীর চেহারা নিয়েছে পুরো এলাকা।

এই দুর্যোগ কেবল টেক্সাস নয়, পুরো যুক্তরাষ্ট্রকেই কাঁপিয়ে দিয়েছে। এখনো চলছে জীবন বাঁচানোর লড়াই। নিখোঁজদের ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায় পরিবারগুলো কাটাচ্ছে মুহূর্তকে মুহূর্ত। এই সময়েই প্রমাণ হচ্ছে—মানুষের পাশে মানুষই শেষ ভরসা।