ঢাকা ১১:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা

হরমুজ হাফ ডান, টার্গেট বাব আল-মান্দাব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৫৫:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
  • / 54

লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইয়েমেনের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলসংলগ্ন লোহিত সাগরে একটি বাণিজ্যিক জাহাজে সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। ব্রিটেনের সমুদ্র নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থা মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন এজেন্সি (ইউকেএমটিও) জানিয়েছে, রোববার ওই জাহাজটিকে লক্ষ্য করে অন্তত আটটি ছোট নৌকা থেকে গুলি এবং রকেটচালিত গ্রেনেড ছোড়া হয়।

এই হামলার মাধ্যমে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের ক্ষত মুছতে পরিকল্পনা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যেখানে হরমুজ প্রণালী হয়ে উঠেছিল ক্রীড়ানক, সেখানে লোহিত সাগরে উত্তেজনায় নতুন করে টার্গেট করেছে বাব আল-মান্দাব প্রণালীকে। এই প্রণালী দিয়ে বিশ্বের তেল পরিবহনের ১০ শতাংশ হয়ে থাকে। এমনটাই মনে করেন আন্তজার্তিক বিশ্লেষক ড. শাহীনূর রহমান।

যুক্তরাজ্যের সংস্থাটি আরও জানায়, হামলার পর জাহাজে থাকা সশস্ত্র নিরাপত্তাকর্মীরা পাল্টা গুলি চালান এবং এখনও গুলি-পাল্টা গুলি চলছে। তবে হামলার দায় এখনও কেউ স্বীকার করেনি।

চলতি বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ের পর এই প্রথম লোহিত সাগরে বড় ধরনের এমন হামলার ঘটনা ঘটল। ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধ, ১২ দিনের ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সাম্প্রতিক বিমান হামলার পটভূমিতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা এখন চরমে।

ইউকেএমটিও এবং অ্যামব্রে জানায়, ইয়েমেনের হোদাইদা বন্দর থেকে ৫১ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে হামলাটি ঘটে। তবে আক্রান্ত জাহাজের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

উল্লেখ্য, ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত শতাধিক সামুদ্রিক হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনেই এসব হামলা চালানো হচ্ছে।

গাজা যুদ্ধ চলাকালে হুথিরা লোহিত সাগর ও এডেন উপকূলে অন্তত দুটি জাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছে, ছিনতাই করেছে একটি পশ্চিমা জাহাজ এবং অন্তত চারজন নাবিককে হত্যা করেছে। এসব হামলার ফলে সমুদ্রপথে বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে এবং পরিবহন ব্যয়ও বেড়েছে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রও হুথিদের ওপর হামলা জোরদার করেছে।

গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইয়েমেনে হুথিদের ওপর বিমান হামলা বন্ধের ঘোষণা দেন। উভয় পক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য না করার এবং লোহিত সাগর ও বাব আল-মান্দাব প্রণালীতে হামলা স্থগিত রাখার চুক্তিতে সম্মত হয়। এই সমঝোতায় মধ্যস্থতা করে ওমান।

তবে গত জুনে হুথিরা হুমকি দেয়—ইসরায়েল যদি ইরানে হামলা চালায় এবং তাতে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেয়, তাহলে তারা লোহিত সাগরে মার্কিন জাহাজগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু বানাবে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, হুথিদের সেই হুমকি বাস্তবায়নের আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে।

সূত্র: রয়টার্স

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা

হরমুজ হাফ ডান, টার্গেট বাব আল-মান্দাব

আপডেট সময় : ১২:৫৫:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫

ইয়েমেনের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলসংলগ্ন লোহিত সাগরে একটি বাণিজ্যিক জাহাজে সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছে। ব্রিটেনের সমুদ্র নিরাপত্তাবিষয়ক সংস্থা মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন এজেন্সি (ইউকেএমটিও) জানিয়েছে, রোববার ওই জাহাজটিকে লক্ষ্য করে অন্তত আটটি ছোট নৌকা থেকে গুলি এবং রকেটচালিত গ্রেনেড ছোড়া হয়।

এই হামলার মাধ্যমে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের ক্ষত মুছতে পরিকল্পনা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যেখানে হরমুজ প্রণালী হয়ে উঠেছিল ক্রীড়ানক, সেখানে লোহিত সাগরে উত্তেজনায় নতুন করে টার্গেট করেছে বাব আল-মান্দাব প্রণালীকে। এই প্রণালী দিয়ে বিশ্বের তেল পরিবহনের ১০ শতাংশ হয়ে থাকে। এমনটাই মনে করেন আন্তজার্তিক বিশ্লেষক ড. শাহীনূর রহমান।

যুক্তরাজ্যের সংস্থাটি আরও জানায়, হামলার পর জাহাজে থাকা সশস্ত্র নিরাপত্তাকর্মীরা পাল্টা গুলি চালান এবং এখনও গুলি-পাল্টা গুলি চলছে। তবে হামলার দায় এখনও কেউ স্বীকার করেনি।

চলতি বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ের পর এই প্রথম লোহিত সাগরে বড় ধরনের এমন হামলার ঘটনা ঘটল। ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধ, ১২ দিনের ইরান-ইসরায়েল সংঘাত এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সাম্প্রতিক বিমান হামলার পটভূমিতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা এখন চরমে।

ইউকেএমটিও এবং অ্যামব্রে জানায়, ইয়েমেনের হোদাইদা বন্দর থেকে ৫১ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে হামলাটি ঘটে। তবে আক্রান্ত জাহাজের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

উল্লেখ্য, ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত শতাধিক সামুদ্রিক হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনেই এসব হামলা চালানো হচ্ছে।

গাজা যুদ্ধ চলাকালে হুথিরা লোহিত সাগর ও এডেন উপকূলে অন্তত দুটি জাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছে, ছিনতাই করেছে একটি পশ্চিমা জাহাজ এবং অন্তত চারজন নাবিককে হত্যা করেছে। এসব হামলার ফলে সমুদ্রপথে বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে এবং পরিবহন ব্যয়ও বেড়েছে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রও হুথিদের ওপর হামলা জোরদার করেছে।

গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইয়েমেনে হুথিদের ওপর বিমান হামলা বন্ধের ঘোষণা দেন। উভয় পক্ষই একে অপরকে লক্ষ্য না করার এবং লোহিত সাগর ও বাব আল-মান্দাব প্রণালীতে হামলা স্থগিত রাখার চুক্তিতে সম্মত হয়। এই সমঝোতায় মধ্যস্থতা করে ওমান।

তবে গত জুনে হুথিরা হুমকি দেয়—ইসরায়েল যদি ইরানে হামলা চালায় এবং তাতে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেয়, তাহলে তারা লোহিত সাগরে মার্কিন জাহাজগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু বানাবে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালিয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, হুথিদের সেই হুমকি বাস্তবায়নের আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে।

সূত্র: রয়টার্স