ঢাকা ০১:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

“ট্রাম্প ইরানের পরমাণু প্রকল্প ধ্বংসের নামে সত্য আড়াল করেছিলেন?”

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:২৩:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
  • / 43
দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস হয়নি বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি। তাঁর মতে, তেহরান চাইলে কয়েক মাসের মধ্যেই আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম শুরু করতে সক্ষম হবে।

গ্রোসির এই মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ওই হামলার ফলে ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ‘দশকের পর দশক পিছিয়ে গেছে’ এবং দেশটির পারমাণবিক সক্ষমতা ‘সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন’ করা হয়েছে।

তবে বাস্তবতা ভিন্ন চিত্র তুলে ধরছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিআইএ)-এর প্রাথমিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র যে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, সেগুলোর কেন্দ্রীয় অবকাঠামো ধ্বংস হয়নি। এতে ইরানের কর্মসূচি কেবল সাময়িকভাবে – সম্ভবত কয়েক মাসের জন্য – বিলম্বিত হয়েছে।

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের গোপন বার্তালাপের সূত্র ধরে জানা গেছে, তারা নিজেরাও হামলার ধ্বংসাত্মক প্রভাব নিয়ে হতাশ। তারা স্বীকার করেছেন, ক্ষয়ক্ষতি তাদের আশঙ্কার তুলনায় অনেক কম হয়েছে।

এ বিষয়ে জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির-সাঈদ ইরাভানি বলেছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম কখনোই বন্ধ হবে না। কারণ, শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি ইরানের একটি ‘অপরিহার্য অধিকার’।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুন মাসের শুরুর দিকে ইসরায়েলের নজিরবিহীন বিমান হামলার জবাবে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে টানা ১২ দিনের সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষের মাঝেই যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। হামলার লক্ষ্য ছিল ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে বাধা দেওয়া।

এখনো চূড়ান্ত সামরিক ও গোয়েন্দা মূল্যায়ন প্রকাশ করা হয়নি, তবে সাম্প্রতিক মন্তব্য ও তথ্য বিশ্লেষণে স্পষ্ট যে, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি। এতে করে ট্রাম্পের আগের দাবি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে যদি ইরান তার পরমাণু কার্যক্রম আবার শুরু করে এবং পশ্চিমা দেশগুলো এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

“ট্রাম্প ইরানের পরমাণু প্রকল্প ধ্বংসের নামে সত্য আড়াল করেছিলেন?”

আপডেট সময় : ১২:২৩:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস হয়নি বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি। তাঁর মতে, তেহরান চাইলে কয়েক মাসের মধ্যেই আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম শুরু করতে সক্ষম হবে।

গ্রোসির এই মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ওই হামলার ফলে ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ‘দশকের পর দশক পিছিয়ে গেছে’ এবং দেশটির পারমাণবিক সক্ষমতা ‘সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন’ করা হয়েছে।

তবে বাস্তবতা ভিন্ন চিত্র তুলে ধরছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিআইএ)-এর প্রাথমিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র যে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, সেগুলোর কেন্দ্রীয় অবকাঠামো ধ্বংস হয়নি। এতে ইরানের কর্মসূচি কেবল সাময়িকভাবে – সম্ভবত কয়েক মাসের জন্য – বিলম্বিত হয়েছে।

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের গোপন বার্তালাপের সূত্র ধরে জানা গেছে, তারা নিজেরাও হামলার ধ্বংসাত্মক প্রভাব নিয়ে হতাশ। তারা স্বীকার করেছেন, ক্ষয়ক্ষতি তাদের আশঙ্কার তুলনায় অনেক কম হয়েছে।

এ বিষয়ে জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির-সাঈদ ইরাভানি বলেছেন, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম কখনোই বন্ধ হবে না। কারণ, শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি ইরানের একটি ‘অপরিহার্য অধিকার’।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুন মাসের শুরুর দিকে ইসরায়েলের নজিরবিহীন বিমান হামলার জবাবে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে টানা ১২ দিনের সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষের মাঝেই যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। হামলার লক্ষ্য ছিল ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে বাধা দেওয়া।

এখনো চূড়ান্ত সামরিক ও গোয়েন্দা মূল্যায়ন প্রকাশ করা হয়নি, তবে সাম্প্রতিক মন্তব্য ও তথ্য বিশ্লেষণে স্পষ্ট যে, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি। এতে করে ট্রাম্পের আগের দাবি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে যদি ইরান তার পরমাণু কার্যক্রম আবার শুরু করে এবং পশ্চিমা দেশগুলো এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়।