ঢাকা ১১:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তেহরানে শহীদদের জানাজায় জনতার ঢল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:৪৬:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
  • / 46

তেহরানে শহীদদের জানাজায় জনতার ঢল

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলায় নিহত ইরানিদের জানাজায় অংশ নিতে তেহরানের রাস্তায় নেমে এসেছেন হাজারো মানুষ। শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর ইঙ্গেলাব স্কয়ার ও তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকা শোকাহত জনতার উপস্থিতিতে ভরে ওঠে।

নিহতদের মধ্যে ছিলেন সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সাধারণ বেসামরিক নাগরিকসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিন বহনের সময় অনেকের চোখ ছিল অশ্রুসজল, কণ্ঠে ছিল ‘আল্লাহু আকবর’ ও ‘শহীদরা অমর’ ধ্বনি। আবেগঘন এই জানাজা ছিল শুধু বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং একটি প্রতিরোধের বার্তাও।

জনগণ স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন—ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইরান ঐক্যবদ্ধ এবং শহীদদের আত্মত্যাগ কখনোই বৃথা যাবে না। অনেকে এই ত্যাগকে গৌরবের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে বলছেন, শহীদদের রক্ত ইরানিদের সাহস ও প্রতিরোধে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।

জানাজা শেষে মরদেহগুলো পাঠানো হয় নিহতদের নিজ নিজ শহরে দাফনের জন্য। এদিকে, এই হামলার পেছনে যারা রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের শীর্ষ নেতারা।

১৩ জুন ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ইরানের সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনাগুলোতে চালানো হামলার পর তেহরানও জবাব দেয়। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর এয়ারোস্পেস ইউনিটের নেতৃত্বে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ চালিয়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়।

এই পাল্টা হামলায় অধিকৃত ফিলিস্তিনের বেশ কয়েকটি শহরে বড় ধরনের ক্ষতি হয় এবং ইসরায়েলি নিরাপত্তাব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ পায়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, এসব ঘটনায় ইসরায়েল শুধু নিরাপত্তাহীনতাই নয়, বড় ধরনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে।

পরবর্তীতে, ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের নাতানজ, ফোরদো এবং ইসফাহান নামক তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্রে বিমান হামলা চালায়। এতে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনায় যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি জড়িয়ে পড়া পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

সবশেষে, ২৪ জুন যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে সংঘাতের আনুষ্ঠানিক ইতি ঘটে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই বিরতি সাময়িক হতে পারে এবং মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার নতুন পর্ব যে কোনো সময় শুরু হতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তেহরানে শহীদদের জানাজায় জনতার ঢল

আপডেট সময় : ০৪:৪৬:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলায় নিহত ইরানিদের জানাজায় অংশ নিতে তেহরানের রাস্তায় নেমে এসেছেন হাজারো মানুষ। শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর ইঙ্গেলাব স্কয়ার ও তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকা শোকাহত জনতার উপস্থিতিতে ভরে ওঠে।

নিহতদের মধ্যে ছিলেন সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সাধারণ বেসামরিক নাগরিকসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিন বহনের সময় অনেকের চোখ ছিল অশ্রুসজল, কণ্ঠে ছিল ‘আল্লাহু আকবর’ ও ‘শহীদরা অমর’ ধ্বনি। আবেগঘন এই জানাজা ছিল শুধু বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং একটি প্রতিরোধের বার্তাও।

জনগণ স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন—ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইরান ঐক্যবদ্ধ এবং শহীদদের আত্মত্যাগ কখনোই বৃথা যাবে না। অনেকে এই ত্যাগকে গৌরবের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে বলছেন, শহীদদের রক্ত ইরানিদের সাহস ও প্রতিরোধে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।

জানাজা শেষে মরদেহগুলো পাঠানো হয় নিহতদের নিজ নিজ শহরে দাফনের জন্য। এদিকে, এই হামলার পেছনে যারা রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের শীর্ষ নেতারা।

১৩ জুন ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ইরানের সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনাগুলোতে চালানো হামলার পর তেহরানও জবাব দেয়। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর এয়ারোস্পেস ইউনিটের নেতৃত্বে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ চালিয়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়।

এই পাল্টা হামলায় অধিকৃত ফিলিস্তিনের বেশ কয়েকটি শহরে বড় ধরনের ক্ষতি হয় এবং ইসরায়েলি নিরাপত্তাব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ পায়। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, এসব ঘটনায় ইসরায়েল শুধু নিরাপত্তাহীনতাই নয়, বড় ধরনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে।

পরবর্তীতে, ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের নাতানজ, ফোরদো এবং ইসফাহান নামক তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্রে বিমান হামলা চালায়। এতে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনায় যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি জড়িয়ে পড়া পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

সবশেষে, ২৪ জুন যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে সংঘাতের আনুষ্ঠানিক ইতি ঘটে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই বিরতি সাময়িক হতে পারে এবং মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার নতুন পর্ব যে কোনো সময় শুরু হতে পারে।