পর্তুগালে প্রবাসী বাংলাদেশির আত্মহত্যা

- আপডেট সময় : ০১:৪৪:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
- / 39

ইউরোপের নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে দামি দামি অট্টালিকা, বাহারি রঙের বাড়ি আর বিলাসী জীবনযাপনের ছবি। কিন্তু এই বিলাসী জীবনযাপন আর দামী দামী অট্টালিকার পেছনে থাকে হাজারো প্রবাসীর বুকফাটা আর্তনাদ, দুঃখ-কষ্টের গল্প।
যারা শুধুমাত্র পরিবার-পরিজনকে সুখে রাখার জন্য বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন, নিজের সবকিছু বিসর্জন দিয়ে—তাদের আবেগগুলো কখনো কেউ বুঝতে চায়নি। মোহাম্মদ আলী, উত্তরবঙ্গের সিরাজগঞ্জে যার জন্ম। একটু উন্নত জীবন ও জীবিকার সন্ধানে পাঁচ বছর আগে ইউরোপের দেশ পর্তুগালে পাড়ি জমান। চোখে ছিল হাজারো স্বপ্ন, হাজারো আশা। কিন্তু হঠাৎ সবকিছু বিসর্জন দিয়ে বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার পথ!
গত ২৫ জুন, পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে চলন্ত মেট্রো লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। এই ঘটনায় পর্তুগালে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে, বাংলাদেশ কমিউনিটিতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
মোহাম্মদ আলীর দীর্ঘদিনের সহকর্মী জানান, তিনি খুবই ভালো মানুষ ছিলেন। কেন তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন, তা জানা নেই। তবে পারিবারিক অশান্তি ও মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পর্তুগাল প্রবাসী শহিন আহমদ বলেন, ‘‘এই মৃত্যু কোনো সাধারণ মৃত্যু নয়, এটা হাজারো প্রবাসীর বুকফাটা কান্নার প্রতীক।’’
পরিবার থেকে দূরে, স্ত্রীর অবহেলা, কাজের অনিশ্চয়তা, টাকাপয়সার টানাপোড়েন এবং সর্বোপরি পেপারস বা ডকুমেন্ট বৈধতা নিয়ে প্রতিদিনের সংগ্রাম—প্রবাস জীবন যেন এক নীরব যুদ্ধক্ষেত্র। প্রবাস মানে শুধু টাকা নয়, প্রবাস মানে নিজের মনকে প্রতিদিন নতুন করে বোঝানো, নতুন করে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকা।
দিন দিন নতুন নতুন আইন, কঠোর ডানপন্থীদের অভিবাসী-বিরোধী মনোভাব, কাজের অনিশ্চয়তা, কম বেতন—সব মিলিয়ে প্রবাসে থাকা মানুষদের দিন দিন মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন।