ঢাকা ১২:০০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র হচ্ছেন মমদানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:১৪:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫
  • / 29

জোহরান মমদানি

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে প্রাথমিকভাবে ডেমোক্রেটিক দলের মনোনয়ন পেয়ে ইতিহাস গড়লেন প্রগতিশীল রাজনীতিক জোহরান মমদানি। মাত্র ৩৩ বছর বয়সেই এই মুসলিম ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাজনীতিক নিউইয়র্কের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন যুগের সূচনা করলেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

গত মঙ্গলবার রাতে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে মমদানি বলেন, “আজ আমরা ইতিহাস গড়েছি। আমি এখন নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র পদে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী।” তার এই বিজয়ে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো আনুষ্ঠানিকভাবে পরাজয় স্বীকার করে তাকে ফোনে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

যদিও ‘র‍্যাঙ্কড চয়েস’ পদ্ধতির পূর্ণ গণনা এখনও শেষ হয়নি, তবুও প্রথম পছন্দের ভোটে বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন মমদানি। নিউইয়র্ক নির্বাচনী বোর্ড জানিয়েছে, প্রায় দুই লাখ ভোটার শুধুমাত্র একজন প্রার্থী হিসেবে মমদানিকেই বেছে নিয়েছেন—যা চূড়ান্ত বিজয়ের ইঙ্গিত দেয়।

মাত্র এক বছর আগেও মমদানি ছিলেন মূলধারার রাজনীতির বাইরে। কিন্তু তার ‘ফ্রি পাবলিক ট্রান্সপোর্ট’, ‘চাইল্ড কেয়ার’, ‘সাশ্রয়ী আবাসন’ এবং ‘ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির’ মতো প্রস্তাব তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করে। নির্বাচনী প্রচারণায় তার পোস্টার ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে।

বিজয়ের রাতে তিনি বলেন, “নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছিলেন, সবকিছু অসম্ভব মনে হয় যতক্ষণ না তা সম্ভব হয়। আমরা তা বাস্তবে দেখিয়ে দিয়েছি।”

অন্যদিকে, অভিজ্ঞ রাজনীতিক অ্যান্ড্রু কুওমো তার জনপ্রিয়তা, রাজনৈতিক অর্থবল ও পরিচিতি নিয়েও এই তরুণ প্রার্থীর সঙ্গে পেরে ওঠেননি। ২০১৮ সালে গভর্নর হিসেবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা কুওমো যৌন হয়রানির একাধিক অভিযোগে পদত্যাগে বাধ্য হন এবং এরপর থেকেই তার রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন নিয়ে প্রশ্ন উঠে।

এই নির্বাচনের মাধ্যমে ডেমোক্রেটিক পার্টির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব ও আদর্শগত অভিমুখও অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে। একদিকে অভিজ্ঞ, প্রতিষ্ঠানের অনুগত নেতৃত্ব; অন্যদিকে তরুণ, প্রগতিশীল এবং মাঠপর্যায়ের সংযোগে বিশ্বাসী এক নতুন প্রজন্ম—যার মুখ হয়ে উঠছেন জোহরান মমদানি।

তার সম্ভাব্য মেয়র নির্বাচিত হওয়াকে অনেকে নিউইয়র্ক সিটির রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিত্বের এক নতুন মাইলফলক হিসেবে দেখছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র হচ্ছেন মমদানি

আপডেট সময় : ০৪:১৪:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে প্রাথমিকভাবে ডেমোক্রেটিক দলের মনোনয়ন পেয়ে ইতিহাস গড়লেন প্রগতিশীল রাজনীতিক জোহরান মমদানি। মাত্র ৩৩ বছর বয়সেই এই মুসলিম ও ভারতীয় বংশোদ্ভূত রাজনীতিক নিউইয়র্কের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন যুগের সূচনা করলেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

গত মঙ্গলবার রাতে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া বক্তব্যে মমদানি বলেন, “আজ আমরা ইতিহাস গড়েছি। আমি এখন নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র পদে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী।” তার এই বিজয়ে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো আনুষ্ঠানিকভাবে পরাজয় স্বীকার করে তাকে ফোনে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

যদিও ‘র‍্যাঙ্কড চয়েস’ পদ্ধতির পূর্ণ গণনা এখনও শেষ হয়নি, তবুও প্রথম পছন্দের ভোটে বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন মমদানি। নিউইয়র্ক নির্বাচনী বোর্ড জানিয়েছে, প্রায় দুই লাখ ভোটার শুধুমাত্র একজন প্রার্থী হিসেবে মমদানিকেই বেছে নিয়েছেন—যা চূড়ান্ত বিজয়ের ইঙ্গিত দেয়।

মাত্র এক বছর আগেও মমদানি ছিলেন মূলধারার রাজনীতির বাইরে। কিন্তু তার ‘ফ্রি পাবলিক ট্রান্সপোর্ট’, ‘চাইল্ড কেয়ার’, ‘সাশ্রয়ী আবাসন’ এবং ‘ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির’ মতো প্রস্তাব তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করে। নির্বাচনী প্রচারণায় তার পোস্টার ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে।

বিজয়ের রাতে তিনি বলেন, “নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছিলেন, সবকিছু অসম্ভব মনে হয় যতক্ষণ না তা সম্ভব হয়। আমরা তা বাস্তবে দেখিয়ে দিয়েছি।”

অন্যদিকে, অভিজ্ঞ রাজনীতিক অ্যান্ড্রু কুওমো তার জনপ্রিয়তা, রাজনৈতিক অর্থবল ও পরিচিতি নিয়েও এই তরুণ প্রার্থীর সঙ্গে পেরে ওঠেননি। ২০১৮ সালে গভর্নর হিসেবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা কুওমো যৌন হয়রানির একাধিক অভিযোগে পদত্যাগে বাধ্য হন এবং এরপর থেকেই তার রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন নিয়ে প্রশ্ন উঠে।

এই নির্বাচনের মাধ্যমে ডেমোক্রেটিক পার্টির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব ও আদর্শগত অভিমুখও অনেকটাই স্পষ্ট হয়েছে। একদিকে অভিজ্ঞ, প্রতিষ্ঠানের অনুগত নেতৃত্ব; অন্যদিকে তরুণ, প্রগতিশীল এবং মাঠপর্যায়ের সংযোগে বিশ্বাসী এক নতুন প্রজন্ম—যার মুখ হয়ে উঠছেন জোহরান মমদানি।

তার সম্ভাব্য মেয়র নির্বাচিত হওয়াকে অনেকে নিউইয়র্ক সিটির রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিত্বের এক নতুন মাইলফলক হিসেবে দেখছেন।