ঢাকা ১২:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরানজুড়ে বিজয় উৎসব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৮:২৩:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
  • / 39

ইরানজুড়ে বিজয় উৎসব

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে বিজয় মিছিল করেছে হাজারো মানুষ। ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতেই শুরু হয় এই গণউল্লাস। যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক ও সামরিক মহলে ছড়িয়ে পড়ে উচ্ছ্বাস।

রাজধানী তেহরানে মানুষ স্লোগানে মুখরিত হয়ে আগুন জ্বালিয়ে ‘জয়’ উদযাপন করেছে। আল জাজিরার খবরে জানানো হয়, ঘোষণার পরপরই দেশব্যাপী সমাবেশ, র‍্যালি ও বিজয় উৎসব শুরু হয়। এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যার পরেই ইরানের শীর্ষ নেতারা একে ‘ঐতিহাসিক জয়’ হিসেবে আখ্যা দেন।

ইরানের উপ-রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ রেজা আরেফ বলেছেন, এই বিজয় শুধু সামরিক নয়— কূটনৈতিকভাবেও যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা জোটকে কড়া বার্তা দিয়েছে। এটি ইরানের প্রকৃত শক্তির প্রতিফলন।

ইরানের পার্লামেন্ট স্পিকারের উপদেষ্টা মাহদি মোহাম্মাদি এটিকে “যুগান্তকারী বিজয়” বলে আখ্যা দেন এবং বলেন, “একটি নতুন যুগের সূচনা হলো।” একইসঙ্গে পারমাণবিক শক্তি সংক্রান্ত অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি বলেন, “আমাদের কর্মসূচি কেউ থামাতে পারবে না।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই যুদ্ধবিরতি কৌশলগত দিক থেকে ইরানের বড় একটি অর্জন। সরাসরি যুদ্ধ থেকে সরে এসে আলোচনায় অংশ নেওয়ার সুযোগ তৈরি করেছে তারা। একইসঙ্গে জনগণের কাছে নিজেদের প্রতিরক্ষা ও কূটনৈতিক সাফল্য তুলে ধরারও এক অনন্য উপলক্ষ হয়ে উঠেছে এই মুহূর্ত।

সাধারণ মানুষ পতাকা মিছিল, বিপ্লবী স্লোগান ও ধর্মীয় সংগীতের মাধ্যমে বিজয় উদযাপন করে। ‘আমেরিকা নিপাত যাক’, ‘ইসরায়েল ধ্বংস হোক’— এমন স্লোগানে মুখর হয়ে উঠে শহরের রাজপথ।

তবে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়ে এখনও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। দীর্ঘদিনের ইরান-ইসরায়েল বৈরিতা খুব সহজে থামবে না বলেই অনেকের মত।

ঘটনার শুরু হয় ১৩ জুন, যখন ইসরায়েল ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। জবাবে ইরানও পালটা হামলা করে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে ইরানের তিনটি স্থাপনায় হামলা চালালে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। তখনই ইরান কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।

শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। ইরানের মতে, এটি কোনো সামান্য বিরতি নয়, বরং এটি বিশ্ববাসীকে তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতার একটি বড় বার্তা দিয়েছে। তেহরান এখন মনে করছে— তারা আরও আত্মবিশ্বাসী, আরও দৃঢ়।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ইরানজুড়ে বিজয় উৎসব

আপডেট সময় : ০৮:২৩:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে বিজয় মিছিল করেছে হাজারো মানুষ। ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতেই শুরু হয় এই গণউল্লাস। যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক ও সামরিক মহলে ছড়িয়ে পড়ে উচ্ছ্বাস।

রাজধানী তেহরানে মানুষ স্লোগানে মুখরিত হয়ে আগুন জ্বালিয়ে ‘জয়’ উদযাপন করেছে। আল জাজিরার খবরে জানানো হয়, ঘোষণার পরপরই দেশব্যাপী সমাবেশ, র‍্যালি ও বিজয় উৎসব শুরু হয়। এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যার পরেই ইরানের শীর্ষ নেতারা একে ‘ঐতিহাসিক জয়’ হিসেবে আখ্যা দেন।

ইরানের উপ-রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ রেজা আরেফ বলেছেন, এই বিজয় শুধু সামরিক নয়— কূটনৈতিকভাবেও যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা জোটকে কড়া বার্তা দিয়েছে। এটি ইরানের প্রকৃত শক্তির প্রতিফলন।

ইরানের পার্লামেন্ট স্পিকারের উপদেষ্টা মাহদি মোহাম্মাদি এটিকে “যুগান্তকারী বিজয়” বলে আখ্যা দেন এবং বলেন, “একটি নতুন যুগের সূচনা হলো।” একইসঙ্গে পারমাণবিক শক্তি সংক্রান্ত অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি বলেন, “আমাদের কর্মসূচি কেউ থামাতে পারবে না।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই যুদ্ধবিরতি কৌশলগত দিক থেকে ইরানের বড় একটি অর্জন। সরাসরি যুদ্ধ থেকে সরে এসে আলোচনায় অংশ নেওয়ার সুযোগ তৈরি করেছে তারা। একইসঙ্গে জনগণের কাছে নিজেদের প্রতিরক্ষা ও কূটনৈতিক সাফল্য তুলে ধরারও এক অনন্য উপলক্ষ হয়ে উঠেছে এই মুহূর্ত।

সাধারণ মানুষ পতাকা মিছিল, বিপ্লবী স্লোগান ও ধর্মীয় সংগীতের মাধ্যমে বিজয় উদযাপন করে। ‘আমেরিকা নিপাত যাক’, ‘ইসরায়েল ধ্বংস হোক’— এমন স্লোগানে মুখর হয়ে উঠে শহরের রাজপথ।

তবে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই যুদ্ধবিরতির স্থায়িত্ব নিয়ে এখনও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। দীর্ঘদিনের ইরান-ইসরায়েল বৈরিতা খুব সহজে থামবে না বলেই অনেকের মত।

ঘটনার শুরু হয় ১৩ জুন, যখন ইসরায়েল ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। জবাবে ইরানও পালটা হামলা করে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে ইরানের তিনটি স্থাপনায় হামলা চালালে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। তখনই ইরান কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।

শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। ইরানের মতে, এটি কোনো সামান্য বিরতি নয়, বরং এটি বিশ্ববাসীকে তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতার একটি বড় বার্তা দিয়েছে। তেহরান এখন মনে করছে— তারা আরও আত্মবিশ্বাসী, আরও দৃঢ়।