আন্দোলন দমনে এনবিআরের বিতর্কিত বদলি আদেশ

- আপডেট সময় : ১২:২২:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫
- / 65

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংস্কার ঐক্য পরিষদের আন্দোলন দমনে এবার কর্মকর্তাদের ঢাকার বাইরে তড়িঘড়ি করে বদলি করা হয়েছে। যদিও এনবিআর এটি ‘রুটিন কাজ’ হিসেবে দাবি করছে, তবে আন্দোলনরত কর্মকর্তারা বলছেন, এসব বদলি সরকারি নীতিমালার লঙ্ঘন।
রোববার (২২ জুন) রাতে জারি করা আদেশে এনবিআরের পাঁচজন উপ কর কমিশনারকে তাৎক্ষণিক ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়। এই আদেশ অনুযায়ী, কর্মকর্তাদের সোমবারের মধ্যেই দায়িত্ব হস্তান্তর এবং মঙ্গলবারের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়—যা বর্তমান বদলি নীতিমালার পরিপন্থী বলে অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে। সরকারি বিধি অনুযায়ী, ভিন্ন জেলায় বদলির জন্য পাঁচ কর্মদিবস সময় দেওয়া বাধ্যতামূলক।
বদলিকৃত কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন—শাহ্ মো. ফজলে এলাহী (ময়মনসিংহ কর অঞ্চল), মো. শিহাবুল ইসলাম (খুলনা কর অঞ্চল), মো. আব্দুল্লাহ ইউসুফ (বগুড়া কর অঞ্চল), ইমাম তৌহিদ হাসান শাকিল (কুমিল্লা কর অঞ্চল), এবং নুসরাত জাহান শমী (রংপুর কর অঞ্চল)। এছাড়া ভ্যাট প্রশাসনের প্রথম সচিব আমীনুল ইহসানকে সরিয়ে নতুন দায়িত্বে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এই বদলির পেছনে চলমান আন্দোলনই মূল কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ ও মধ্যরাতের অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সোমবার (২৩ জুন) কাফনের কাপড় পরে প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
এর আগে, এনবিআরের রাজস্ব প্রশাসন ভেঙে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি পৃথক বিভাগ গঠনের অধ্যাদেশ জারির পর থেকে প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে এনবিআর ভবন। কর্মকর্তারা দাবি করেন, এই অধ্যাদেশটি এনবিআরের স্বাধীনতা খর্ব করবে এবং কর্মকর্তাদের পদোন্নতির সুযোগ সংকুচিত করবে।
আন্দোলনকারীরা সরকারের আশ্বাসে কাজে ফিরলেও এনবিআর চেয়ারম্যানকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে দাবি তোলেন—তিনি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তবে এনবিআর চেয়ারম্যান এখনও দায়িত্বে বহাল এবং তাকে পুলিশি নিরাপত্তায় কার্যালয়ে আনা হচ্ছে।
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই একতরফা বদলি আদেশ প্রশাসনিক জটিলতা বাড়াতে পারে এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে এনবিআর নেতৃত্বের দূরত্ব আরও প্রকট হতে পারে।