মোংলায় নানা আয়োজনে কবি রুদ্রকে স্মরণ

- আপডেট সময় : ০৫:১০:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
- / 44

তারুণ্য, সংগ্রাম ও সাহসিকতার কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মোংলার মিঠাখালীতে শুক্রবার দিনভর নানা আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। সকালে রুদ্র স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে একটি শোভাযাত্রা বের হয়, যা সংসদ চত্বর থেকে শুরু হয়ে কবির সমাধিতে গিয়ে শেষ হয়। এতে অংশ নেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। পরে কবির বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয় দোয়া ও মিষ্টি বিতরণ।
সকাল ১০টায় কবির বাড়িতে আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও কবির ছোট ভাই সুমেল সারাফাত। আলোচনায় অংশ নেন মোংলা উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নূর আলম, চালনা বন্দর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন, রামপাল সরকারি কলেজের প্রভাষক নজরুল ইসলাম এবং রুদ্র স্মৃতি সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান টিটো। আলোচনা শেষে কবির লেখা গান পরিবেশন করেন ‘অন্তর বাজাও’ সংগঠন।
আলোচকরা বলেন, রুদ্র ছিলেন সত্য ও প্রতিবাদের প্রতীক। সাম্প্রদায়িকতা, বৈষম্য ও শোষণের বিরুদ্ধে তিনি নির্ভীকভাবে কলম ধরেছেন। ’৯০-এর গণআন্দোলনের সময়ে তার কবিতা হয়ে উঠেছিল তরুণ প্রজন্মের অস্ত্র। তারুণ্যের শক্তিকে জাগ্রত করতে তার সাহিত্য আজও প্রাসঙ্গিক।
মাত্র ৩৫ বছর বয়সেই রুদ্র রেখে গেছেন সাহিত্যের বিশাল ভাণ্ডার। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে— উপদ্রুত উপকূল (১৯৭৯), ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম (১৯৮১), মানুষের মানচিত্র (১৯৮৪), ছোবল (১৯৮৭), গল্প (১৯৮৭), দিয়েছিলে সকল আকাশ (১৯৮৮) ও মৌলিক মুখোশ (১৯৯০)। তিনি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কাব্যনাট্য বিষ বৃক্ষের বীজ রচনা করেন এবং কয়েকটি গল্পও লিখেছেন।
তার লেখা ও সুরারোপিত “ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো” গানটি দুই বাংলায় অসাধারণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ব্যক্তিজীবনের এক দুঃখগাথা থেকেই ১৯৮৭ সালে মোংলায় বসে গানটি লেখেন তিনি। পরে এই গানটির জন্য তিনি ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) পুরস্কার পান।
সংস্কৃতি চর্চা ও সংগঠন গঠনের ক্ষেত্রেও রুদ্র ছিলেন অগ্রণী। তিনি সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।