তিন ছেলের ঘরেও ঠাঁই হলো না ৯০ বছরের মায়ের

- আপডেট সময় : ১১:১৮:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
- / 41

বয়সের ভারে নুয়ে পড়া, চোখে ঠিকমতো দেখতে পান না, কানে শুনতেও সমস্যা—তবুও ৯০ বছর বয়সী বিমলা রানীর জায়গা হয়নি গর্ভে ধারণ করা তিন ছেলের ঘরে। একেকদিন বাড়ির কোণে, কখনোবা বাঁশঝাড়ের নিচে দিন কাটে তাঁর। দু’বেলা খাবার জোটে না ঠিকঠাক। এমন করুণ পরিণতির শিকার হয়েছেন বগুড়ার সদর উপজেলার বড়কুমিড়া হিন্দুপাড়ার বাসিন্দা বিমলা রানী।
স্বামী হরিপদ চন্দ্র মারা যাওয়ার পর থেকেই শুরু হয় তাঁর দুর্দশার অধ্যায়। তিন ছেলের দুজন কাঠমিস্ত্রি ও একজন দর্জির কাজ করেন, কিন্তু মায়ের দেখভালে কেউই আগ্রহী নন। বরং প্রতিদিন সকালে তাঁকে বাড়ি থেকে দূরে কোথাও রেখে আসা হয়। রাতে না খেয়ে কাটে, কারও দিক থেকে জোটে না সামান্য সহানুভূতিও।
গত সোমবার রাতে মেজো ছেলে বৃদ্ধা মাকে ঘর থেকে বের করে দেন। পরদিন মঙ্গলবার স্থানীয়দের চাপে ফের তাঁকে ঘরে তোলা হলেও সকালে আবার বের করে দেওয়া হয়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত ধূপছায়া রোদের নিচে পড়ে থাকেন বিমলা রানী। এ সময় এক ফোঁটা পানিও জোটেনি তাঁর কপালে।
এমন মানবিক সংকটের খবর পেয়ে বগুড়ায় সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তাঁরা প্রথমে খাবার কিনে দেন, পরে বিমলা রানীকে ছেলেদের ঘরে তুলে দেন। এক পর্যায়ে এক সেনা কর্মকর্তা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। ছেলেরা তাঁদের ভুল স্বীকার করেন এবং মা’কে ঘরে ফিরিয়ে নেন।
ঘটনার সময় সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ফাহাদ নিজ হাতে বৃদ্ধাকে খাবার খাওয়ান এবং ছেলেদের সতর্ক করেন। তিনি জানান, “আমরা মানবিক দিক থেকে পদক্ষেপ নিয়েছি। পরিবারটি আর্থিক সমস্যায় থাকলে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বৃদ্ধার সন্তানদের অমানবিক ব্যবহারের নিন্দা জানান।