সুন্দরবনে ছয় শতাধিক ফাঁদ উদ্ধার, ধরাছোঁয়ার বাইরে শিকারি চক্র

- আপডেট সময় : ১১:১০:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
- / 69

সুন্দরবনের পূর্বাঞ্চলে হরিণ শিকারের নিষ্ঠুরতা কোনোভাবেই থামছে না। একের পর এক অভিযানে শত শত ফাঁদ উদ্ধার হলেও শিকারি চক্রের সদস্যরা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
সাম্প্রতিক অভিযানে পূর্ব সুন্দরবনের কোকিলমনি টহল ফাঁড়ি ও টিয়ারচর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হরিণ শিকারের ছয় শতাধিক ফাঁদ এবং কাঁকড়া ধরার ১৬টি নিষিদ্ধ চারু। তবে অভিযানে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
সোমবার (১৬ জুন) সন্ধ্যায় এসব উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
তিনি বলেন, “ফুট প্যাট্রোলের আওতায় রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বনকর্মীরা কোকিলমনি টহল ফাঁড়ির টিয়ারচর এলাকায় গোপন অভিযানে যান। এ সময় বনের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা ছয় শতাধিক মালা ফাঁদ ও ১৬টি নিষিদ্ধ চারু উদ্ধার করা হয়।”
তিনি আরও জানান, বন বিভাগের নিয়মিত টহলের খবর পেয়ে শিকারিরা আগেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। নিজেদের রক্ষার জন্য তারা ফাঁদগুলো মাটির নিচে পুঁতে রেখে যায়। উদ্ধার করা এসব সরঞ্জাম বর্তমানে কোকিলমনি টহল ফাঁড়িতে হেফাজতে রাখা হয়েছে।
এর আগে, ১৩ জুন পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ঢাংমারী স্টেশন এলাকায় গোপন অভিযানে বন প্রহরীরা ১৩৫টি মালা ফাঁদ উদ্ধার করেন। এর মধ্যে হুলার ভারানী সংলগ্ন খাল থেকে ৮২টি ও সূর্যমুখী খাল সংলগ্ন এলাকা থেকে ৫৩টি ফাঁদ পাওয়া যায়। পরে এসব ফাঁদ পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
অভিযান নিয়মিত হলেও শিকারিরা বারবার ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাওয়ায় বন বিভাগের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বনের ভেতরে দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী শিকারি চক্র সক্রিয় রয়েছে। তারা আগাম খবর পেয়ে নিরাপদে সরে পড়ে।
পরিবেশবিদদের মতে, সুন্দরবনে হরিণ শিকার বন্ধ না হলে জীববৈচিত্র্য ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়বে। শুধু আইন প্রয়োগ নয়, স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততা ও প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি এখন সময়ের দাবি।
বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “যেকোনও ধরনের বন অপরাধ দমনে আমাদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আশা করছি, আমাদের এই কঠোরতা বন অপরাধ রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।”