খেলাপি ঋণ ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল

- আপডেট সময় : ১১:৩৮:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫
- / 64

ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছে। চলতি বছরের মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকায়, যা বিতরণকৃত মোট ঋণের ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত দেশে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। এর বিপরীতে প্রায় এক-চতুর্থাংশই এখন খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত।
তুলনামূলকভাবে ২০২৪ সালের মার্চে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা, যা তৎকালীন মোট ঋণের ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ—২ লাখ ৩৮ হাজার ৪০ কোটি টাকা।
গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ছিল ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। তিন মাসে বেড়েছে আরও ৭৪ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে গঠিত ঋণ সংস্কৃতির কারণেই এই ঋণ-সংকট তৈরি হয়েছে। জামানতবিহীন ঋণ, অস্বচ্ছ অনুমোদন প্রক্রিয়া এবং রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বহু প্রতিষ্ঠান সহজেই কু-ঋণে পরিণত হয়েছে।
তারা আরও জানান, এস আলম গ্রুপ ও বেক্সিমকোসহ কিছু প্রভাবশালী গ্রুপের ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর প্রকৃত খেলাপির চিত্র স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে গেছে ব্যাপক হারে।
২০০৯ সালে যখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। বর্তমানে তা প্রায় ২০ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ৪ লাখ কোটির ঘর ছাড়িয়েছে।
বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ আশঙ্কা করছেন, যেসব ঋণ এখনও প্রকাশিত হয়নি বা গোপন রাখা হয়েছে, সেগুলো ধরা হলে প্রকৃত খেলাপির অঙ্ক ৭ লাখ কোটি টাকাও ছাড়িয়ে যেতে পারে।