লর্ডসে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ইতিহাস রচনা
অবশেষে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা

- আপডেট সময় : ০৬:১৭:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫
- / 67

“দেখিস, একদিন আমরাও…” — দীর্ঘদিন ধরে যে স্বপ্ন বহন করে চলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, সেই একদিন অবশেষে এসে ধরা দিলো লর্ডসের ঐতিহাসিক মাঠে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো বৈশ্বিক শিরোপা নিজেদের করে নিলো প্রোটিয়ারা।
প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৩৮ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পরও দক্ষিণ আফ্রিকা যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তা নিঃসন্দেহে ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা প্রত্যাবর্তনের গল্প। চতুর্থ ইনিংসে ২৮২ রানের কঠিন লক্ষ্য—যেটি টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ ইনিংসে জয়ের জন্য মাত্র ৫০ বারই পেরোনো গেছে—সেটিকে জয় করে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রমাণ করলো, তারা আর আগের মতো ভেঙে পড়া দল নয়।
ম্যাচের নায়ক এইডেন মার্করাম। ছয় মাস পর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ফিরে অসাধারণ এক ইনিংস খেলে ১৩৬ রান করেন তিনি। ব্যাটিংয়ের সময় তাঁর দৃঢ়তা ও আত্মবিশ্বাস যেন পুরো দলের প্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছিল। যদিও জয় থেকে মাত্র ছয় রান দূরে থাকতে তিনি আউট হন, কিন্তু ততক্ষণে মূল কাজটুকু সম্পন্ন।
অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাও অসাধারণ লড়াই করেছেন। হ্যামস্ট্রিং চোট নিয়ে খুঁড়িয়ে খেলেও ৬৬ রানের মূল্যবান ইনিংস খেলেন তিনি। মার্করামের সঙ্গে তাঁর ১৪৭ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। দিনের শুরুতে বাভুমার দ্রুত বিদায়ের পরও মুল্ডার, বেডিংহাম ও ভেরেইনা দৃঢ়তা ধরে রাখেন।

এই জয় শুধু একটি ম্যাচের ফল নয়, এটি দক্ষিণ আফ্রিকার দীর্ঘ বঞ্চনার, বারবার ভেঙে পড়ার, এবং আবার উঠে দাঁড়ানোর এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। ১৯৯২ সালে টেস্টে প্রত্যাবর্তনের পর ৩৩ বছরের পথচলায় এই প্রথম, সত্যিকারের ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন’ হলো দক্ষিণ আফ্রিকা।
লর্ডসের ড্রেসিংরুমে আনন্দে আত্মহারা ছিলেন খেলোয়াড়রা। কারো চোখে জল, কারো মুখে হাঁসি—এই জয়ের তাৎপর্য ছিল অনুভূতির সবটুকুই। আর সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তে কাইল ভেরেইনার ব্যাট থেকে আসা শেষ রানটিই যেন ছিল একটি যুগের শেষ এবং আরেকটি যুগের শুরু।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ২১২ ও ২০৭
দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৩৮ ও ২৮২/৫ (৮৩.৪ ওভারে)
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ উইকেটে জয়ী