ঢাকা ১০:৫৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রায়পুরায় ডিলার নিয়োগ স্থগিত, পুনর্বহালের দাবি বিএনপির

মোঃ হাছানুর ইমাম জুয়েল
  • আপডেট সময় : ০৪:১৯:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
  • / 72
দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নরসিংদীর রায়পুরায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় নিয়োগপ্রাপ্ত ডিলারদের কার্যক্রম হঠাৎ করে স্থগিত করেছে উপজেলা প্রশাসন। ফেসবুকে দেওয়া একটি বিতর্কিত পোস্টকে কেন্দ্র করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও নিয়ম অনুসরণ করেই ডিলার নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছিল, তাই এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

জানা গেছে, উপজেলার ২৪টি ইউনিয়নের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছিল। তবে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন সাগর তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেন: “রায়পুরা উপজেলার যেসব নেতা ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার বিনিময়ে খাদ্যের ডিলারশিপ লাইসেন্স বিক্রি করেছেন, তাদের মুখোশ শিগগির উন্মোচন করা হবে।”
এই পোস্টটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং জাতীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ফলস্বরূপ, গত ১১ জুন রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিতের ঘোষণা দেন।

রায়পুরা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান খোকন বলেন, “যুবদলের ওই নেতা বিকারগ্রস্ত। তার পছন্দের প্রার্থী মনোনয়ন না পাওয়ায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই অপপ্রচার চালানো হয়েছে। আমি কারও কাছ থেকে এক পয়সাও নিইনি। যদি প্রমাণ হয়, রাজনীতি ছেড়ে দেব।”

তিনি আরও বলেন, “এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জনকল্যাণমূলক প্রকল্প। এখানে নেতাকর্মীদের মধ্যে সমন্বয় করে স্বচ্ছভাবে নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে।”

উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আলফাজ উদ্দিন মিঠু বলেন, “ডিলার নিয়োগ পুরোপুরি অফিসিয়াল প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করেই ইউএনও সাহেব নিয়োগ দিয়েছেন। অভিযোগটি ভিত্তিহীন।”

নিয়োগপ্রাপ্ত একাধিক ডিলার জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তারা আবেদন জমা দিয়ে যাচাই-বাছাই শেষে নিয়োগ পেয়েছেন। একজন ডিলার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা কোনো অনিয়ম করিনি। শুধুমাত্র একটি ফেসবুক পোস্টের কারণে আমাদের নিয়োগ বাতিল হলে সেটা অবিচার হবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, “স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেই ডিলার নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছিল। তবে সংবাদমাধ্যমে উঠে আসা বিতর্ক ও পরিস্থিতি বিবেচনায় আপাতত নিয়োগ স্থগিত রাখা হয়েছে।”

স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা একযোগে দাবি জানিয়েছেন, “যথাযথ প্রক্রিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত ডিলারদের দ্রুত পুনর্বহাল করতে হবে। একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পোস্টের ভিত্তিতে এমন জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি স্থগিত হওয়া কাম্য নয়।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রায়পুরায় ডিলার নিয়োগ স্থগিত, পুনর্বহালের দাবি বিএনপির

আপডেট সময় : ০৪:১৯:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

নরসিংদীর রায়পুরায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় নিয়োগপ্রাপ্ত ডিলারদের কার্যক্রম হঠাৎ করে স্থগিত করেছে উপজেলা প্রশাসন। ফেসবুকে দেওয়া একটি বিতর্কিত পোস্টকে কেন্দ্র করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও নিয়ম অনুসরণ করেই ডিলার নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছিল, তাই এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

জানা গেছে, উপজেলার ২৪টি ইউনিয়নের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছিল। তবে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন সাগর তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেন: “রায়পুরা উপজেলার যেসব নেতা ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার বিনিময়ে খাদ্যের ডিলারশিপ লাইসেন্স বিক্রি করেছেন, তাদের মুখোশ শিগগির উন্মোচন করা হবে।”
এই পোস্টটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং জাতীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ফলস্বরূপ, গত ১১ জুন রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিতের ঘোষণা দেন।

রায়পুরা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান খোকন বলেন, “যুবদলের ওই নেতা বিকারগ্রস্ত। তার পছন্দের প্রার্থী মনোনয়ন না পাওয়ায় উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই অপপ্রচার চালানো হয়েছে। আমি কারও কাছ থেকে এক পয়সাও নিইনি। যদি প্রমাণ হয়, রাজনীতি ছেড়ে দেব।”

তিনি আরও বলেন, “এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জনকল্যাণমূলক প্রকল্প। এখানে নেতাকর্মীদের মধ্যে সমন্বয় করে স্বচ্ছভাবে নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে।”

উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আলফাজ উদ্দিন মিঠু বলেন, “ডিলার নিয়োগ পুরোপুরি অফিসিয়াল প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করেই ইউএনও সাহেব নিয়োগ দিয়েছেন। অভিযোগটি ভিত্তিহীন।”

নিয়োগপ্রাপ্ত একাধিক ডিলার জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তারা আবেদন জমা দিয়ে যাচাই-বাছাই শেষে নিয়োগ পেয়েছেন। একজন ডিলার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা কোনো অনিয়ম করিনি। শুধুমাত্র একটি ফেসবুক পোস্টের কারণে আমাদের নিয়োগ বাতিল হলে সেটা অবিচার হবে।”

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, “স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেই ডিলার নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছিল। তবে সংবাদমাধ্যমে উঠে আসা বিতর্ক ও পরিস্থিতি বিবেচনায় আপাতত নিয়োগ স্থগিত রাখা হয়েছে।”

স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা একযোগে দাবি জানিয়েছেন, “যথাযথ প্রক্রিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত ডিলারদের দ্রুত পুনর্বহাল করতে হবে। একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পোস্টের ভিত্তিতে এমন জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি স্থগিত হওয়া কাম্য নয়।”