বিএনপি নেতারা অবৈধ বালু উত্তোলনে সক্রিয়

- আপডেট সময় : ০৬:১২:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
- / 65

পাহাড় কাটা শেষে এবার অবৈধ বালু উত্তোলনে সক্রিয় হয়েছেন বিএনপি নেতারা। পাওয়ার গ্রিড নির্মাণের জন্য সাঙ্গু নদীর তীর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে জেলা যুবদলের সদস্য নাজিম উদ্দিন ও সম্রাট নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এই বালু উত্তোলনের ফলে কুহালং হেডম্যান পাড়ার খালের পাড় ও শতবর্ষ পুরাতন শ্মশান ক্ষতির মুখে পড়েছে।
অভিযোগ আছে, মোটা অংকের টাকা নিয়ে পাওয়ার গ্রিড নির্মাণের জায়গায় মাটি ভরাটের কাজের কন্ট্রাক্ট নিয়েছেন নাজিম উদ্দিন ও সম্রাট। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রকাশ্যে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলনের মহোৎসব। এর আগেও তারা থোয়াইগ্যা পাড়া, লেমুঝিড়ি, চড়ুই পাড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কেটে পরিবেশ বিনষ্ট করেছেন। মাটির পর এবার অবৈধ বালু উত্তোলনে সক্রিয় হয়েছেন তারা।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জেলা বিএনপির কিছু নেতা অবৈধ কাজে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। একের পর এক অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছেন তারা। এসব কাজে জড়িত রয়েছে চার থেকে পাঁচজনের একটি সিন্ডিকেট, যারা মিলে বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলন ও পাহাড় কাটায় লিপ্ত।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ভোর থেকেই স্কেভেটর ও ডাম্পার ব্যবহার করে অবৈধ বালু উত্তোলন চলছে। জেলা যুবদলের সদস্য নাজিম উদ্দিনসহ আরও কয়েকজন নেতা এতে জড়িত। অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে শ্মশানঘাট ও আশপাশের বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে। তাদের বেপরোয়া আচরণের কারণে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। এলাকাবাসী অবিলম্বে এই অবৈধ কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আইনকে উপেক্ষা করে কুহালং ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়ার সামনে সাঙ্গু নদীর চর থেকে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন চলছে। সেখানে ব্যবহৃত হচ্ছে দুটি স্কেভেটর ও আটটি ডাম্পার ট্রাক, যা স্বর্ণ মন্দির সংলগ্ন নবনির্মিত পাওয়ার গ্রিড মাঠে বালু সরবরাহ করছে। এর ফলে পাশে থাকা কবরস্থান ও বসতঘর ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
হেডম্যান পাড়ার বাসিন্দা প্রুনু মং মারমা ও সন্তোষ বড়ুয়া বলেন, সকাল থেকে এখানে স্কেভেটর দিয়ে বালু উত্তোলন হচ্ছে এবং ডাম্পার ট্রাক দিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাই, যাতে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়।
স্কেভেটর চালক সুমন জানান, বালু উত্তোলনের কাজ করছে সম্রাট নামে একজন, তার নির্দেশেই কাজ চলছে।
অবৈধ বালু উত্তোলনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা যুবদলের সদস্য নাজিম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমি বালু উত্তোলন করি না, সম্রাট করেন।’ এরপর তিনি ফোনটি কেটে দেন।
সম্রাট বলেন, বাধা দেয়ায় বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম জানান, বর্তমানে ছুটিতে রয়েছি। অফিস খোলার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মারুফা সুলতানা খান হীরামনি জানান, বিষয়টি জানা গেছে এবং আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।