ড. ইউনুসের সাক্ষাৎ পাচ্ছেন না টিউলিপ সিদ্দিক

- আপডেট সময় : ১০:৪৪:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ জুন ২০২৫
- / 28

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়েছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক। ড. ইউনূসের লন্ডন সফরকালে এ সাক্ষাৎ চাইলেও তা হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র।
বিশ্বস্ত একটি সূত্র দেশ আমারকে নিশ্চিত করেছে, টিউলিপের অনুরোধ সত্ত্বেও ড. ইউনূস তার সঙ্গে দেখা করবেন না।
টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহেনার কন্যা। গত বছর বাংলাদেশের ছাত্র–জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর থেকেই টিউলিপ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের অভিযোগ, টিউলিপ ও তার মা অবৈধভাবে ৭,২০০ স্কয়ার ফুটের একটি জমি অধিগ্রহণ করেছেন।
তবে টিউলিপ এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন। তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, লন্ডনে অবস্থানরত টিউলিপের সঙ্গে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো যোগাযোগ করেনি। বরং একটি অজানা ঠিকানায় চিঠিপত্র পাঠিয়ে যাচ্ছেন তারা।
সম্প্রতি দ্য গার্ডিয়ান-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ড. ইউনূসকে এক চিঠির মাধ্যমে সাক্ষাতের অনুরোধ জানান টিউলিপ। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, সাক্ষাতের মাধ্যমে তিনি তার অবস্থান পরিষ্কার করতে চান এবং চলমান ‘ভুল বোঝাবুঝি’ দূর করতে চান।
চিঠিতে টিউলিপ লেখেন, “আমি একজন ব্রিটিশ নাগরিক। জন্মেছি লন্ডনে এবং হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেটের জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে এক দশকের বেশি সময় দায়িত্ব পালন করেছি। বাংলাদেশে আমার কোনো সম্পত্তি বা ব্যবসায়িক আগ্রহ নেই। দেশটি আমার হৃদয়ে থাকলেও এটি আমার নাগরিকত্বের দেশ নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমি দুদকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। কিন্তু তারা আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। স্পষ্টতই তারা ঢাকার একটি এলোমেলো ঠিকানায় নোটিস পাঠাচ্ছে।”
টিউলিপ দাবি করেন, “এটি একটি ফ্যান্টাসি তদন্ত। এ সংক্রান্ত প্রতিটি পদক্ষেপ গণমাধ্যমে প্রচার করা হলেও আমার আইনি দলের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। এতে আমার রাজনৈতিক ও সাংসদীয় দায়িত্ব পালনে বাধা তৈরি হচ্ছে।”
এদিকে, গত মাসে বাংলাদেশে টিউলিপের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। তবে তিনি জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না এবং যুক্তরাজ্য সরকার উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া তাকে বাংলাদেশে পাঠাবে না।
অন্যদিকে, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে কয়েক বিলিয়ন পাউন্ড পাচারের অভিযোগ তুলেছেন তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ববি হাজ্জাজ। এসব অভিযোগ তদন্ত করছে দুদক।
টিউলিপের ভাষ্য, তার খালার রাজনৈতিক বিরোধীরা তাকে টার্গেট করে পরিকল্পিত অপপ্রচার চালাচ্ছে। সেই প্রেক্ষাপটেই তিনি ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে, প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে—সেই সাক্ষাৎ আর হচ্ছে না।