ঢাকা ০২:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকারি নির্ধারিত দামেও বিক্রি হচ্ছে না চামড়া

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১১:৪৫:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫
  • / 28

সরকারি নির্ধারিত দামেও বিক্রি হচ্ছে না চামড়া

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কোরবানি শেষে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে পশুর চামড়া আসতে শুরু করেছে সাভারে। তবে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না চামড়া। বিক্রেতাদের দাবি, চামড়ার মান তুলনামূলক ভালো হলেও ন্যায্য মূল্য মিলছে না। অন্যদিকে, লোকসানের অজুহাতে নির্ধারিত দামেও চামড়া কিনতে চাইছেন না আড়তদাররা।

শনিবার (৭ জুন) রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও হাজারীবাগ ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবারের মতো এবারও ঢাকায় কোরবানির গরুর কাঁচা চামড়া মানভেদে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একাধিক আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীর ভাষ্য, না বুঝেই মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বেশি দামে চামড়া কিনে নিয়ে আসেন। তবে চামড়ার বাজার ভালো নয়।

রাজধানীর লালবাগে কয়েকজন চামড়া ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা মানভেদে গরুর চামড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় কিনছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি, কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে (লবণ ও শ্রমিকের মজুরি) প্রায় ৪০০ টাকা খরচ পড়ে। বর্তমানে বাজার ভালো না হওয়ায় আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কম দামে চামড়া কিনছেন তারা।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর কোরবানির ঈদে ৮০ থেকে ৮৫ লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন ট্যানারি মালিকেরা। এ জন্য বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্যানারি প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি কাঁচা চামড়া কিনছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, চলতি বছর চামড়ার সরবরাহ ভালো হলেও ছোট গরুর চামড়াই বেশি। তবে গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিটি চামড়ায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি দাম রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

সাভার কাঁচা চামড়া আড়ত মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. এমদাদুল হক (সোহরাব) বলেন, সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কেনা সম্ভব নয়। কারণ, চামড়ার সঙ্গে লবণ ও শ্রমিক খরচ যুক্ত হয়। নির্ধারিত দামে চামড়া কিনলে লোকসান হবে।

বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল মোশারফ হোসেন দেশ আমারকে বলেন, কোরবানির পশুর চামড়া ভারতে পাচার রোধে বিজিবি কঠোর নজরদারিতে রয়েছে। সীমান্তে নিয়মিত টহল ও গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।

এর আগে, গত ২৫ মে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চামড়ার নতুন দাম নির্ধারণ করে সরকার। রাজধানীতে কাঁচা চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ১,৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া রাজধানীর বাইরে চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ১,১৫০ টাকা। পাশাপাশি, খাসির লবণযুক্ত চামড়া ২২ থেকে ২৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ২০ থেকে ২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা এবং বকরির চামড়ার দাম ছিল ১৮ থেকে ২০ টাকা।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সরকারি নির্ধারিত দামেও বিক্রি হচ্ছে না চামড়া

আপডেট সময় : ১১:৪৫:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫

কোরবানি শেষে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে পশুর চামড়া আসতে শুরু করেছে সাভারে। তবে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না চামড়া। বিক্রেতাদের দাবি, চামড়ার মান তুলনামূলক ভালো হলেও ন্যায্য মূল্য মিলছে না। অন্যদিকে, লোকসানের অজুহাতে নির্ধারিত দামেও চামড়া কিনতে চাইছেন না আড়তদাররা।

শনিবার (৭ জুন) রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও হাজারীবাগ ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবারের মতো এবারও ঢাকায় কোরবানির গরুর কাঁচা চামড়া মানভেদে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একাধিক আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীর ভাষ্য, না বুঝেই মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বেশি দামে চামড়া কিনে নিয়ে আসেন। তবে চামড়ার বাজার ভালো নয়।

রাজধানীর লালবাগে কয়েকজন চামড়া ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা মানভেদে গরুর চামড়া ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় কিনছেন। ব্যবসায়ীদের দাবি, কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে (লবণ ও শ্রমিকের মজুরি) প্রায় ৪০০ টাকা খরচ পড়ে। বর্তমানে বাজার ভালো না হওয়ায় আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কম দামে চামড়া কিনছেন তারা।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর কোরবানির ঈদে ৮০ থেকে ৮৫ লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন ট্যানারি মালিকেরা। এ জন্য বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্যানারি প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি কাঁচা চামড়া কিনছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, চলতি বছর চামড়ার সরবরাহ ভালো হলেও ছোট গরুর চামড়াই বেশি। তবে গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিটি চামড়ায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি দাম রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

সাভার কাঁচা চামড়া আড়ত মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. এমদাদুল হক (সোহরাব) বলেন, সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কেনা সম্ভব নয়। কারণ, চামড়ার সঙ্গে লবণ ও শ্রমিক খরচ যুক্ত হয়। নির্ধারিত দামে চামড়া কিনলে লোকসান হবে।

বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল মোশারফ হোসেন দেশ আমারকে বলেন, কোরবানির পশুর চামড়া ভারতে পাচার রোধে বিজিবি কঠোর নজরদারিতে রয়েছে। সীমান্তে নিয়মিত টহল ও গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।

এর আগে, গত ২৫ মে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চামড়ার নতুন দাম নির্ধারণ করে সরকার। রাজধানীতে কাঁচা চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ১,৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া রাজধানীর বাইরে চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ১,১৫০ টাকা। পাশাপাশি, খাসির লবণযুক্ত চামড়া ২২ থেকে ২৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ২০ থেকে ২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা এবং বকরির চামড়ার দাম ছিল ১৮ থেকে ২০ টাকা।