রাত পোহালেই ঈদ, দেশজুড়ে উৎসবের আমেজ

- আপডেট সময় : ১০:৩৬:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫
- / 26

রাত পোহালেই দেশজুড়ে পালিত হবে মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব— পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদের আগের দিন শুক্রবার (৬ জুন) ঢাকাসহ সারাদেশেই বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি— মাংস কাটার সরঞ্জাম কেনা, বাসাবাড়ি পরিষ্কার, মসলা প্রস্তুত করা, ইত্যাদি কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন সবাই।
সকাল থেকেই রাজধানীর শপিংমল ও মার্কেটগুলোতে ছিল ক্রেতাশূন্য অবস্থা। দোকান কর্মচারীরা অলস সময় কাটিয়েছেন। তবে কাঁচাবাজার, মশলার দোকান ও ছুরি-চাকুর দোকানগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। অনেকে আবার কোরবানির পশুর জন্য খড়, পানি ও দড়ি কিনেছেন। বাড়িতে শিশুরা তাদের প্রিয় গরু বা ছাগলের সঙ্গে সময় কাটিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, ঈদের জামাত দেশের প্রতিটি মসজিদ ও ঈদগাহে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীতে জাতীয় ঈদগাহে প্রধান জামাত হবে সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে। তবে আবহাওয়া প্রতিকূল হলে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে বিকল্প জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোরবানির হাট ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মোতায়েন রয়েছে। ঈদের ছুটিতে ঢাকার নিরাপত্তা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন,
“নিরাপত্তা নিয়ে আমি পুরোপুরি আত্মবিশ্বাসী। আল্লাহ সহায় থাকলে শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে, ইনশাআল্লাহ।”
কোরবানির বর্জ্য অপসারণে প্রস্তুত রয়েছে সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় প্রশাসন। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন ঘোষণা দিয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করা হবে। রাজধানীজুড়ে ২০ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী এই কাজে নিয়োজিত থাকবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঈদের দিন দেশে মিশ্র আবহাওয়া থাকতে পারে। কোথাও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি, আবার কোথাও তাপপ্রবাহ ও গুমোট গরম থাকতে পারে। তবে বেশিরভাগ এলাকাতেই আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানান, “ঈদের দিন ঢাকা বিভাগের পূর্বাঞ্চল, সিলেট ও চট্টগ্রামের কিছু এলাকায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। তবে সারাদেশে আবহাওয়া মোটামুটি শুষ্ক ও উষ্ণ থাকবে।”
ঈদ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
এবারের ঈদে অন্যান্য বছরের মতোই বিপুল সংখ্যক মানুষ ঢাকা ছাড়ছেন প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে। প্রায় ১ কোটি মানুষ রাজধানী ত্যাগ করেছেন, এবং প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ঢাকায় এসেছেন। এ বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কোরবানির পশুর হাট ও ঈদযাত্রা কেন্দ্রিক যানচলাচলে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে।
ফলে রাজধানী এখন অনেকটাই ফাঁকা। যানজটহীন, কোলাহলশূন্য শহর যেন একদিনের জন্য হয়ে উঠেছে প্রশান্তির প্রতীক। পাড়া-মহল্লার রাস্তাগুলো নীরব, হকারদের হাঁকডাক নেই, যানবাহনের হর্ন নেই, আর নেই চিরচেনা ভিড়।