চোরতন্ত্র উচ্ছেদই দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশের পথ

- আপডেট সময় : ১০:২৪:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
- / 53

চোরতন্ত্র উচ্ছেদ করতে পারলেই দুর্নীতিমুক্ত একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব—এমনটাই মনে করেন বক্তারা। তাদের মতে, দেশে শুধু লুটেরা পুঁজিবাদ নয়, বরং রাজনীতি, আমলাতন্ত্র, বিচারব্যবস্থা এমনকি সামরিক প্রশাসনের একাংশও দীর্ঘদিন ধরে গড়ে তুলেছে এক ধরণের চোরতন্ত্র। গত দেড় দশকে অন্তত ২৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা। এই প্রেক্ষাপটে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তরুণদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা।
সোমবার (২৬ মে) বেলা ১২টায় মোংলা সরকারি কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত দুর্নীতি বিরোধী বিতর্ক ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আলোচকরা।
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মোংলা উপজেলা প্রশাসন, মোংলা সরকারি কলেজ, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বাগেরহাট জেলা কার্যালয় এবং উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি।
প্রতিযোগিতার মূল প্রতিপাদ্য ছিল— “শুধুমাত্র প্রবীণদের দিয়ে নয়, সততা ও তারুণ্যই গড়তে পারে সমৃদ্ধির বাংলাদেশ”।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোংলা উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. নূর আলম শেখ।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোংলা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কে এম রব্বানী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মনিরুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ড. অসিত বসু, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য নরেশ চন্দ্র হালদার, স্বদেশ মণ্ডল, মোল্লা আল মামুন, সুনীতি রায়, রীতা সরকার ও রোহিনী বরন রায়। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন প্রভাষক এস এম মাহবুবুর রহমান।
বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফাইনালে অংশ নেয় মোংলা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান ও মানবিক শাখার দুটি দল।
পক্ষ দলের নেতৃত্ব দেন অথৈ মিস্ত্রী এবং সদস্য ছিলেন লিমন ও সাইবা আক্তার ইতি। বিপক্ষ দলের নেতৃত্ব দেন প্যানিলা বৈরাগী এবং সদস্য ছিলেন জিল্লুর রহমান ও তানু খানম।
বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন প্রভাষক শ্যামা প্রসাদ সেন, প্রদীপ অধিকারী এবং সাহারা বেগম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ কে এম রব্বানী বলেন, “নীতি কথা সবাই জানি, কিন্তু মানি না। কৃষক যদি ন্যায্য মূল্য না পায়, শ্রমিক যদি তার শ্রমের যথার্থ মূল্য না পায়—তাহলে কোনোভাবেই একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়।”
বিতর্কে একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক নির্বাচিত হন প্যানিলা বৈরাগী।
অনুষ্ঠানের শেষপর্বে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথি অধ্যক্ষ প্রফেসর কে এম রব্বানী।
এই আয়োজনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার বার্তা দেন আয়োজকরা। বক্তারা মনে করেন, তারুণ্যই পারে চোরতন্ত্রের বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তুলে একটি সৎ, শক্তিশালী ও আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ নির্মাণ করতে।