ঢাকা ০২:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনের আগে সংস্কার চায় জামায়াত

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১০:৩২:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
  • / 58

নির্বাচনের আগে সংস্কার চায় জামায়াত

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আসন্ন নির্বাচন ঘিরে উত্তপ্ত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শনিবার রাতে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে অংশ নিয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়—সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। অন্যদিকে, বিএনপি নির্বাচনপূর্ব রোডম্যাপ এবং তিন বিতর্কিত উপদেষ্টার অপসারণের দাবি তোলে।

শনিবার (২৪ মে) রাত সাড়ে ৯টায় বৈঠক শেষে জামায়াতের আমির ড. শফিকুর রহমান বলেন, “সংস্কার এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত না করে নির্বাচনের পথে হাঁটলে জনগণ আশাহত হবে। একটি সুবিধাজনক সময়ে, জনগণের কষ্ট না বাড়িয়ে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।”

জামায়াতের প্রতিনিধিদলে ছিলেন নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

এর আগে রাত পৌনে ৮টায় বিএনপির চার সদস্যের প্রতিনিধিদল খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান জানান, “আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের রোডম্যাপ চাই, একইসঙ্গে বিতর্কিত তিন উপদেষ্টার অপসারণ চাই। তাদের কারণে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।”

বিএনপি যাদের বাদ দেওয়ার দাবি তুলেছে তারা হলেন—জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, ক্রীড়া ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব এবং তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

জামায়াতের সঙ্গে বৈঠকের পর রাতেই প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে বসেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র নেতাদের সঙ্গে। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সরকারের বিরুদ্ধে “আরেকটি এক-এগারোর পাঁয়তারা”র অভিযোগ তোলেন এবং তিন উপদেষ্টা—ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সালেহউদ্দিন আহমেদ ও আসিফ নজরুলের পদত্যাগ দাবি করেন। একইসঙ্গে ঢাকার মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর দাবিও জানান।

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন যখন সেনাপ্রধানের বক্তব্য, নির্বাচনী মতবিরোধ এবং প্রধান উপদেষ্টার ‘পদত্যাগ ভাবনা’ নিয়ে টালমাটাল, তখনই দলগুলোর সঙ্গে এই ধারাবাহিক বৈঠক শুরু করেন ইউনূস।

রাজধানীর যমুনায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনের বাইরে বিক্ষোভ, ‘মব’ তৈরি করে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার অভিযোগ নিয়ে সরকার ইতিমধ্যেই সমালোচনার মুখে। যমুনার সীমানা দেয়াল ঘেঁষে আন্দোলনরত দলগুলো দিনে-রাতে সভা-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছে।

জুলাইয়ের ঘোষিত আন্দোলনের প্রধান শরিক দলগুলোর মধ্যেও এখন মতানৈক্য স্পষ্ট। এসব অস্থিরতা মাথায় রেখে রাজনৈতিক ঐক্য খুঁজতেই ড. ইউনূস এই বৈঠকগুলো করছেন। রোববার আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে, যদিও এখনো দলগুলোর নাম চূড়ান্ত হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

নির্বাচনের আগে সংস্কার চায় জামায়াত

আপডেট সময় : ১০:৩২:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

আসন্ন নির্বাচন ঘিরে উত্তপ্ত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শনিবার রাতে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে অংশ নিয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়—সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। অন্যদিকে, বিএনপি নির্বাচনপূর্ব রোডম্যাপ এবং তিন বিতর্কিত উপদেষ্টার অপসারণের দাবি তোলে।

শনিবার (২৪ মে) রাত সাড়ে ৯টায় বৈঠক শেষে জামায়াতের আমির ড. শফিকুর রহমান বলেন, “সংস্কার এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত না করে নির্বাচনের পথে হাঁটলে জনগণ আশাহত হবে। একটি সুবিধাজনক সময়ে, জনগণের কষ্ট না বাড়িয়ে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।”

জামায়াতের প্রতিনিধিদলে ছিলেন নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

এর আগে রাত পৌনে ৮টায় বিএনপির চার সদস্যের প্রতিনিধিদল খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয়। বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান জানান, “আমরা ডিসেম্বরের মধ্যে একটি স্বচ্ছ নির্বাচনের রোডম্যাপ চাই, একইসঙ্গে বিতর্কিত তিন উপদেষ্টার অপসারণ চাই। তাদের কারণে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।”

বিএনপি যাদের বাদ দেওয়ার দাবি তুলেছে তারা হলেন—জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, ক্রীড়া ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব এবং তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

জামায়াতের সঙ্গে বৈঠকের পর রাতেই প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে বসেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র নেতাদের সঙ্গে। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সরকারের বিরুদ্ধে “আরেকটি এক-এগারোর পাঁয়তারা”র অভিযোগ তোলেন এবং তিন উপদেষ্টা—ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, সালেহউদ্দিন আহমেদ ও আসিফ নজরুলের পদত্যাগ দাবি করেন। একইসঙ্গে ঢাকার মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর দাবিও জানান।

দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন যখন সেনাপ্রধানের বক্তব্য, নির্বাচনী মতবিরোধ এবং প্রধান উপদেষ্টার ‘পদত্যাগ ভাবনা’ নিয়ে টালমাটাল, তখনই দলগুলোর সঙ্গে এই ধারাবাহিক বৈঠক শুরু করেন ইউনূস।

রাজধানীর যমুনায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনের বাইরে বিক্ষোভ, ‘মব’ তৈরি করে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার অভিযোগ নিয়ে সরকার ইতিমধ্যেই সমালোচনার মুখে। যমুনার সীমানা দেয়াল ঘেঁষে আন্দোলনরত দলগুলো দিনে-রাতে সভা-সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছে।

জুলাইয়ের ঘোষিত আন্দোলনের প্রধান শরিক দলগুলোর মধ্যেও এখন মতানৈক্য স্পষ্ট। এসব অস্থিরতা মাথায় রেখে রাজনৈতিক ঐক্য খুঁজতেই ড. ইউনূস এই বৈঠকগুলো করছেন। রোববার আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানানো হয়েছে, যদিও এখনো দলগুলোর নাম চূড়ান্ত হয়নি।