ঢাকা ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মোংলায় নবলোকের উদ্যোগে গৃহহীন ৯৪ পরিবার পেল স্বপ্নের ঘর

মাসুদ রানা, মোংলা (বাগেরহাট)
  • আপডেট সময় : ০৮:৩৮:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
  • / 206

মোংলায় নবলোকের উদ্যোগে গৃহহীন ৯৪ পরিবার পেল স্বপ্নের ঘর

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

“জমি আছে ঘর নেই”—এই বাস্তবতায় জীবনযাপন করা মোংলার ৯৪টি হতদরিদ্র পরিবার অবশেষে পেল স্বপ্নের ঠিকানা। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর সহায়তায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘নবলোক’ জলবায়ু সহনশীল আধাপাকা ঘর নির্মাণ করে এসব পরিবারের হাতে চাবি তুলে দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুরে মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের উলুবুনিয়া এলাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘রেজিলিয়েন্ট হাউজিং ফর লাইভলিহুড’ (RHL) প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে ২০টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। পর্যায়ক্রমে বাকি ঘরগুলোও বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নবলোকের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ও প্রকল্পের ফোকাল পার্সন মো. মোস্তাফিজুর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন সংগঠনটির উপ-নির্বাহী পরিচালক মো. আলতাফ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জোনাল ম্যানেজার মো. মতিউর রহমান এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সঞ্চালনা করেন প্রকল্প সমন্বয়কারী কাজী তোবারক হোসেন।

নবলোক কর্তৃপক্ষ জানায়, মোংলা উপকূলীয় এলাকা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নিয়মিত ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন ও জলাবদ্ধতার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়। ফলে এখানকার দরিদ্র জনগোষ্ঠী বারবার ঘরবাড়ি হারিয়ে চরম মানবিক সংকটে পড়ে। এ বাস্তবতায় ‘RHL’ প্রকল্পের মাধ্যমে দুর্যোগ সহনশীল, টেকসই এবং নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মোংলার পাঁচটি ইউনিয়নে এ ঘর নির্মাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আলতাফ হোসেন বলেন, “এই প্রকল্প কেবল ঘর নির্মাণ নয়, এটি দুর্যোগ মোকাবেলার নতুন একটি মডেল। এটি শুধু গৃহহীনদের মাথা গোঁজার ঠাঁই দেয়নি, বরং তাদের জীবনে স্থিতিশীলতা ও ভবিষ্যতের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে দিয়েছে।”

তিনি আরও জানান, নির্মিত ঘরগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তি ও টেকসই উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে, যা দীর্ঘস্থায়ীত্ব ও দুর্যোগ প্রতিরোধে কার্যকর। পাশাপাশি উপকারভোগীদের সবজি চাষ, হাঁস-মুরগি ও কাঁকড়া পালন, বৃক্ষরোপণসহ নানা প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে।

উপকারভোগীদের একজন রাবেয়া বেগম বলেন, “আগে ঝড়-জলে কতবার ঘর ভেঙেছে, এখন একটা পাকা ঘরে নিশ্চিন্তে থাকতে পারছি। এটা আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো।”

আয়োজকরা আশা করছেন, এই প্রকল্প উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু অভিযোজন এবং টেকসই উন্নয়নের একটি কার্যকর উদাহরণ হয়ে উঠবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি এই ধরনের উদ্যোগ উপকূলবাসীর জন্য আশার আলো হয়ে এসেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মোংলায় নবলোকের উদ্যোগে গৃহহীন ৯৪ পরিবার পেল স্বপ্নের ঘর

আপডেট সময় : ০৮:৩৮:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

“জমি আছে ঘর নেই”—এই বাস্তবতায় জীবনযাপন করা মোংলার ৯৪টি হতদরিদ্র পরিবার অবশেষে পেল স্বপ্নের ঠিকানা। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর সহায়তায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘নবলোক’ জলবায়ু সহনশীল আধাপাকা ঘর নির্মাণ করে এসব পরিবারের হাতে চাবি তুলে দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুরে মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের উলুবুনিয়া এলাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘রেজিলিয়েন্ট হাউজিং ফর লাইভলিহুড’ (RHL) প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে ২০টি ঘর হস্তান্তর করা হয়। পর্যায়ক্রমে বাকি ঘরগুলোও বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নবলোকের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ও প্রকল্পের ফোকাল পার্সন মো. মোস্তাফিজুর রহমান। প্রধান অতিথি ছিলেন সংগঠনটির উপ-নির্বাহী পরিচালক মো. আলতাফ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জোনাল ম্যানেজার মো. মতিউর রহমান এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। সঞ্চালনা করেন প্রকল্প সমন্বয়কারী কাজী তোবারক হোসেন।

নবলোক কর্তৃপক্ষ জানায়, মোংলা উপকূলীয় এলাকা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নিয়মিত ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন ও জলাবদ্ধতার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়। ফলে এখানকার দরিদ্র জনগোষ্ঠী বারবার ঘরবাড়ি হারিয়ে চরম মানবিক সংকটে পড়ে। এ বাস্তবতায় ‘RHL’ প্রকল্পের মাধ্যমে দুর্যোগ সহনশীল, টেকসই এবং নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মোংলার পাঁচটি ইউনিয়নে এ ঘর নির্মাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আলতাফ হোসেন বলেন, “এই প্রকল্প কেবল ঘর নির্মাণ নয়, এটি দুর্যোগ মোকাবেলার নতুন একটি মডেল। এটি শুধু গৃহহীনদের মাথা গোঁজার ঠাঁই দেয়নি, বরং তাদের জীবনে স্থিতিশীলতা ও ভবিষ্যতের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে দিয়েছে।”

তিনি আরও জানান, নির্মিত ঘরগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তি ও টেকসই উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে, যা দীর্ঘস্থায়ীত্ব ও দুর্যোগ প্রতিরোধে কার্যকর। পাশাপাশি উপকারভোগীদের সবজি চাষ, হাঁস-মুরগি ও কাঁকড়া পালন, বৃক্ষরোপণসহ নানা প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে।

উপকারভোগীদের একজন রাবেয়া বেগম বলেন, “আগে ঝড়-জলে কতবার ঘর ভেঙেছে, এখন একটা পাকা ঘরে নিশ্চিন্তে থাকতে পারছি। এটা আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো।”

আয়োজকরা আশা করছেন, এই প্রকল্প উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু অভিযোজন এবং টেকসই উন্নয়নের একটি কার্যকর উদাহরণ হয়ে উঠবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি এই ধরনের উদ্যোগ উপকূলবাসীর জন্য আশার আলো হয়ে এসেছে।