ঢাকা ০৮:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডিসেম্বরে নির্বাচন হওয়া উচিত

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১১:৫৬:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
  • / 48

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান পুনরায় জানিয়েছেন, তাঁর মতে জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বর মাসেই অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। নির্বাচন নিয়ে তাঁর পূর্বের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে বলেও তিনি স্পষ্ট করেন।

বুধবার (২১ মে) ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এই অনুষ্ঠানে ঢাকায় কর্মরত সেনা কর্মকর্তারা সরাসরি উপস্থিত ছিলেন এবং দেশের অন্যান্য স্থানে থাকা কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

সেনাপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনোই এমন কোনো কর্মকাণ্ডে জড়াবে না, যা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হতে পারে। তিনি সেনাবাহিনীর নিরপেক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ববোধের প্রশংসা করেন এবং বলেন, সেনাবাহিনী অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে এবং প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও তা করবে।

জেনারেল ওয়াকার বলেন, ৫ আগস্ট থেকে সেনাবাহিনী নিরলসভাবে দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। এরপরও কিছু দেশি-বিদেশি মহল বাহিনীকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি সকল সদস্যকে সতর্ক ও দায়িত্বশীল থাকার আহ্বান জানান, যাতে কোনো স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী সংকটকে ঘনীভূত করতে না পারে।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনীকে দীর্ঘ সময় ধরে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষায় মোতায়েন রাখা হলে জাতীয় প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি ব্যাহত হতে পারে। তাই নির্বাচনের পরপরই রাজনৈতিক সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করলে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে আনা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আলোচনায় থাকা ‘মানবিক করিডর’ বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন, জাতীয় স্বার্থই এখানে প্রধান বিবেচ্য। এ ধরনের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক মতৈক্যের ভিত্তিতে নেওয়া উচিত এবং এর সঙ্গে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টিও যুক্ত করা দরকার।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে স্থানীয় জনগণ ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের মতামত নেওয়া জরুরি। একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের মাধ্যমেই কেবল এরকম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য ও বৈধভাবে নেওয়া যেতে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম সম্পর্কে সেনাপ্রধান বলেন, “কী ধরনের সংস্কার হচ্ছে বা কীভাবে হচ্ছে, সে বিষয়ে আমি অবগত নই।” তিনি জানান, এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে কোনো আলোচনা বা পরামর্শ হয়নি।

জাতিসংঘের জুলাই-আগস্ট সময়কালের সহিংসতা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে জেনারেল ওয়াকার বলেন, “এই বিষয়েও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো মতামত নেওয়া হয়নি।”

সামনের কোরবানির ঈদ উপলক্ষে তিনি সকল সেনা সদস্যকে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করার আহ্বান জানান, যাতে মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারে।

সেনাপ্রধান অনুষ্ঠানে সকল পর্যায়ের সেনাসদস্যদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়ে বলেন, “একটি রাজনৈতিক সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সেনাবাহিনীকে দ্রুত ব্যারাকে ফিরিয়ে নিতে হবে, অন্যথায় জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।”

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ডিসেম্বরে নির্বাচন হওয়া উচিত

আপডেট সময় : ১১:৫৬:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান পুনরায় জানিয়েছেন, তাঁর মতে জাতীয় নির্বাচন ডিসেম্বর মাসেই অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। নির্বাচন নিয়ে তাঁর পূর্বের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে বলেও তিনি স্পষ্ট করেন।

বুধবার (২১ মে) ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এই অনুষ্ঠানে ঢাকায় কর্মরত সেনা কর্মকর্তারা সরাসরি উপস্থিত ছিলেন এবং দেশের অন্যান্য স্থানে থাকা কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

সেনাপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনোই এমন কোনো কর্মকাণ্ডে জড়াবে না, যা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হতে পারে। তিনি সেনাবাহিনীর নিরপেক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ববোধের প্রশংসা করেন এবং বলেন, সেনাবাহিনী অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে এবং প্রয়োজনে ভবিষ্যতেও তা করবে।

জেনারেল ওয়াকার বলেন, ৫ আগস্ট থেকে সেনাবাহিনী নিরলসভাবে দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। এরপরও কিছু দেশি-বিদেশি মহল বাহিনীকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি সকল সদস্যকে সতর্ক ও দায়িত্বশীল থাকার আহ্বান জানান, যাতে কোনো স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী সংকটকে ঘনীভূত করতে না পারে।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনীকে দীর্ঘ সময় ধরে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষায় মোতায়েন রাখা হলে জাতীয় প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি ব্যাহত হতে পারে। তাই নির্বাচনের পরপরই রাজনৈতিক সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করলে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে আনা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আলোচনায় থাকা ‘মানবিক করিডর’ বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন, জাতীয় স্বার্থই এখানে প্রধান বিবেচ্য। এ ধরনের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক মতৈক্যের ভিত্তিতে নেওয়া উচিত এবং এর সঙ্গে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টিও যুক্ত করা দরকার।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে স্থানীয় জনগণ ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের মতামত নেওয়া জরুরি। একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকারের মাধ্যমেই কেবল এরকম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য ও বৈধভাবে নেওয়া যেতে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম সম্পর্কে সেনাপ্রধান বলেন, “কী ধরনের সংস্কার হচ্ছে বা কীভাবে হচ্ছে, সে বিষয়ে আমি অবগত নই।” তিনি জানান, এ নিয়ে তাঁর সঙ্গে কোনো আলোচনা বা পরামর্শ হয়নি।

জাতিসংঘের জুলাই-আগস্ট সময়কালের সহিংসতা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে জেনারেল ওয়াকার বলেন, “এই বিষয়েও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো মতামত নেওয়া হয়নি।”

সামনের কোরবানির ঈদ উপলক্ষে তিনি সকল সেনা সদস্যকে জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করার আহ্বান জানান, যাতে মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারে।

সেনাপ্রধান অনুষ্ঠানে সকল পর্যায়ের সেনাসদস্যদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়ে বলেন, “একটি রাজনৈতিক সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সেনাবাহিনীকে দ্রুত ব্যারাকে ফিরিয়ে নিতে হবে, অন্যথায় জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।”