ঢাকা ০৬:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানে হামলার পর যে বার্তা দিলেন জয়শঙ্কর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৪২:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫ ২২ বার পড়া হয়েছে

পাকিস্তানে হামলার পর যে বার্তা দিলেন জয়শঙ্কর

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার জেরে তৈরি উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার ভোররাতে পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি শহরে একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। ভারতীয় সামরিক সূত্র জানিয়েছে, দেশটির তিন বাহিনী- স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনী সমন্বিতভাবে এ অপারেশন চালিয়েছে। পাকিস্তানে এই অপারেশনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’।

হামলার পর সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বিশ্ববাসীর উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা দেখাতে হবে।’

ভারতের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, এই অভিযানে জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তইয়্যেবা এবং হিজবুল মুজাহিদিন-এর অন্তত ৯টি ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার মতে, সবচেয়ে বড় দুটি হামলা হয়েছে বাহাওয়ালপুর এবং মুরিদকেতে, যেখানে প্রায় ২৫-৩০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। ভারতীয় সামরিক সূত্রের দবি, অভিযানে মোট ৮০ জনের বেশি নিহত হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, বিশেষ করে মুরিদকেতে অবস্থিত ‘মসজিদ ও মারকাজ তাইয়্যেবা’, যা লস্কর-ই-তইয়্যেবার আদর্শিক কেন্দ্র এবং দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের ‘সন্ত্রাসের নার্সারি’ হিসেবে পরিচিত, সেটিকে সফলভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়।

ভারত বলছে, হামলা চালানো এই ৯টি স্থানের মধ্যে ৪টি পাকিস্তানের ভেতরে এবং ৫টি আজাদ কাশ্মীরে অবস্থিত। ভারতের দাবি, এই অভিযানে পাকিস্তানি কোনো সেনাঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি। ভারতীয় সূত্র দাবি করেছে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী, আইএসআই এবং স্পেশাল সার্ভিসেস গ্রুপ (এসএসজি) সরাসরি এই জঙ্গি ঘাঁটিগুলোর সহায়তায় যুক্ত ছিল।

এর আগেও ভারত বারবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসের মদদদাতা বলে অভিযুক্ত করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর সম্প্রতি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। সেসব ফোনালাপে পেহেলগামে হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে ভারতের অঙ্গীকারের কথাও জানান তিনি।

ভারতীয় বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ ভারতের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটি আবেগঘন, কৌশলগত ও সাংস্কৃতিক বার্তা। এটি একদিকে শহীদদের স্ত্রীদের সম্মান জানায়, অন্যদিকে শত্রুকে স্পষ্ট করে দেয় যে, ভারত তার নাগরিকদের হত্যার জবাব দিতে পিছপা নয়।

তবে, এই ঘটনার পর উপমহাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা কতটা বজায় থাকবে, তা সময়ই বলবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

পাকিস্তানে হামলার পর যে বার্তা দিলেন জয়শঙ্কর

আপডেট সময় : ১২:৪২:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার জেরে তৈরি উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার ভোররাতে পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি শহরে একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। ভারতীয় সামরিক সূত্র জানিয়েছে, দেশটির তিন বাহিনী- স্থল, নৌ ও বিমানবাহিনী সমন্বিতভাবে এ অপারেশন চালিয়েছে। পাকিস্তানে এই অপারেশনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’।

হামলার পর সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে বিশ্ববাসীর উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা দেখাতে হবে।’

ভারতের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, এই অভিযানে জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তইয়্যেবা এবং হিজবুল মুজাহিদিন-এর অন্তত ৯টি ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার মতে, সবচেয়ে বড় দুটি হামলা হয়েছে বাহাওয়ালপুর এবং মুরিদকেতে, যেখানে প্রায় ২৫-৩০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। ভারতীয় সামরিক সূত্রের দবি, অভিযানে মোট ৮০ জনের বেশি নিহত হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, বিশেষ করে মুরিদকেতে অবস্থিত ‘মসজিদ ও মারকাজ তাইয়্যেবা’, যা লস্কর-ই-তইয়্যেবার আদর্শিক কেন্দ্র এবং দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের ‘সন্ত্রাসের নার্সারি’ হিসেবে পরিচিত, সেটিকে সফলভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়।

ভারত বলছে, হামলা চালানো এই ৯টি স্থানের মধ্যে ৪টি পাকিস্তানের ভেতরে এবং ৫টি আজাদ কাশ্মীরে অবস্থিত। ভারতের দাবি, এই অভিযানে পাকিস্তানি কোনো সেনাঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি। ভারতীয় সূত্র দাবি করেছে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী, আইএসআই এবং স্পেশাল সার্ভিসেস গ্রুপ (এসএসজি) সরাসরি এই জঙ্গি ঘাঁটিগুলোর সহায়তায় যুক্ত ছিল।

এর আগেও ভারত বারবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসের মদদদাতা বলে অভিযুক্ত করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর সম্প্রতি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। সেসব ফোনালাপে পেহেলগামে হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে ভারতের অঙ্গীকারের কথাও জানান তিনি।

ভারতীয় বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ ভারতের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটি আবেগঘন, কৌশলগত ও সাংস্কৃতিক বার্তা। এটি একদিকে শহীদদের স্ত্রীদের সম্মান জানায়, অন্যদিকে শত্রুকে স্পষ্ট করে দেয় যে, ভারত তার নাগরিকদের হত্যার জবাব দিতে পিছপা নয়।

তবে, এই ঘটনার পর উপমহাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা কতটা বজায় থাকবে, তা সময়ই বলবে।