মোংলা বন্দরের আধুনিয়কায়নে চীনা সহায়তায় বড় প্রকল্প

- আপডেট সময় : ১১:২১:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫ ৪৩ বার পড়া হয়েছে

মোংলা বন্দরের আধুনিকায়ন ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এই লক্ষ্যে বন্দরের জেটি সম্প্রসারণ, কন্টেইনার ইয়ার্ড ও কার্গো হ্যান্ডলিং সুবিধা বৃদ্ধিসহ পণ্য খালাস ও ওঠানামার জন্য নতুন ক্রেন ও জলযান সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অবকাঠামোগত এসব ঘাটতি পূরণে চীন সরকারের সহায়তায় একটি বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, “মোংলা বন্দরের সুবিধাদির সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন” শীর্ষক এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে জিটুজি ভিত্তিক সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম)। এ লক্ষ্যে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (CCECC) এবং মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে একটি কমার্শিয়াল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তিতে চীনের পক্ষে সিসিইসিসির প্রতিনিধি মি. কে চেংলিয়াং এবং মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষে চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান স্বাক্ষর করেন।
বন্দর ব্যবহারকারী ও ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান মানিক বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই বন্দরে ব্যবসা করছি, কিন্তু উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নয়ন চোখে পড়েনি। শুধু অবকাঠামো নয়, ব্যবসায়ীদের জন্য সুযোগ-সুবিধাও বাড়াতে হবে। না হলে এই উন্নয়ন অর্থহীন হয়ে যাবে।” তিনি আরও বলেন, “অন্য বন্দরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ব্যবসায়ীদের আকৃষ্ট করতে হলে প্রয়োজন বাস্তব সম্মত উদ্যোগ।”

বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, “মোংলা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর। এটিকে আঞ্চলিক বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করতে সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। নতুন এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে মোংলা বন্দর একটি আধুনিক, অটোমেটেড ও পরিবেশবান্ধব ‘গ্রিন পোর্ট’-এ পরিণত হবে।”
প্রকল্পটির মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬৮ কোটি ২২ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এই অর্থ সরকারি তহবিল ও প্রকল্প ঋণের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে। বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য হলো আধুনিক কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা তৈরি করা। এর আওতায় ৩৬৮ মিটার দৈর্ঘ্যের দুটি কন্টেইনার জেটি, লোডেড ও খালি কন্টেইনারের জন্য পৃথক ইয়ার্ড এবং জেটি ও ইকুইপমেন্ট পরিচালনায় অটোমেশন সুবিধা নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
২০২৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি একনেকে এবং ১১ মার্চ উপদেষ্টা পরিষদের ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছে।
চেয়ারম্যান আরও জানান, “চীনের সহায়তায় এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দর আর পিছনে তাকাতে হবে না। এটি হবে আন্তর্জাতিক মানের একটি ব্যবসাবান্ধব বন্দর—যেখানে ব্যবসায়ীদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।”