ঢাকা ০৮:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তারেক রহমান বললেন

ভোট ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় যেকোনো মূল্য চুকাতে প্রস্তুত বিএনপি

প্রতিনিধি, দিনাজপুর
  • আপডেট সময় : ১১:৩২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ৩৪ বার পড়া হয়েছে

তারেক রহমান (ফাইল ফটো)

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দেশে গণতন্ত্র এবং মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপি যেকোনো মূল্য দিতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলা বিএনপির আয়োজিত একটি কর্মশালায় বক্তব্য দেন তিনি। এ সময় ৩১ দফা দাবির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়।

তারেক রহমান বলেন, “বিএনপি এবং এর প্রতিটি নেতাকর্মী আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ—বাংলাদেশে যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত না হলে অর্থনৈতিক মুক্তিও অসম্ভব। জনগণের অংশগ্রহণ ও অধিকার প্রতিষ্ঠাই আমাদের সংগ্রামের মূল লক্ষ্য।”

তিনি বলেন, “গত ১৫ বছর ধরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে রাজপথে রয়েছে বিএনপি। এই সংগ্রামে বহু নেতাকর্মী গুম হয়েছেন, কেউ খুন হয়েছেন, আবার অনেকে পঙ্গু হয়ে জীবন পার করছেন। তাদের এই আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া হবে না।”

তারেক রহমান আরও বলেন, “গত বছরের আন্দোলনে প্রায় ১০০ শিশু হত্যা হয়েছে—এটা ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায়। কোনো যুদ্ধ ছাড়াই শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় শিশুদের প্রাণহানি হয়েছে, যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।”

বিএনপির সংস্কার উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় থেকেই আমরা দলের কাঠামোতে সংস্কার এনেছি। আজ আমরা ৩১ দফা দিচ্ছি, কিন্তু এটিই শেষ নয়—সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া।”

তিনি জানান, “দেশের ৭০ ভাগ উন্নয়নমূলক কাজ বিএনপির শাসনামলেই হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, নারী উন্নয়ন ও পরিবেশ নিয়ে মানুষের প্রশ্ন এবং আগ্রহ প্রমাণ করে, মানুষ এখনো বিএনপির প্রতি আস্থাশীল।”

তারেক রহমান বলেন, “গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করলে দেশের সামগ্রিক অগ্রগতি থেমে যায়। তাই যেকোনো মূল্যে এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জনগণের কাছে না গিয়ে কেউ ভোট পাবে না—এটাই বাস্তবতা। জনগণের সঙ্গে মিশে কাজ করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বিএনপির ওপর জনগণের আস্থা রয়েছে। আমাদেরকে সেই আস্থা ধরে রাখতে হবে। মিছিল-মিটিংয়ের পর এবার জনগণকে সংগঠিত করে দেশ গঠনের কাজে নামতে হবে।”

দলের তরুণ নেতৃত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অনেক তরুণ আন্দোলনের কারণে এখন বয়স পেরিয়ে গেছেন, তাদের মূল্যায়ন করতে হবে। শুধু ছাত্রদল নয়, অনেক সাধারণ মানুষও চাকরি হারিয়েছেন সরকারবিরোধী অবস্থানের কারণে—এই বাস্তবতা উপলব্ধি করতে হবে।”

স্বাস্থ্য ও নারী শিক্ষায় বিএনপির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, “স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে যাবে ঘরে ঘরে। নারীদের জন্য পুনরায় ফ্রি শিক্ষা চালু হবে, নারীদের আসন ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করা হবে।”

তিনি সতর্ক করে বলেন, “বিএনপির বিরুদ্ধে একটি অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে, যারা ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। তারা নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে, এতে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। বিএনপি এ ধরনের প্রতিপক্ষ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন। ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, কেন্দ্রীয় নেতা ফরহাদ হোসেন আজাদ এবং দিনাজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোফাজ্জল হোসেন দুলাল প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তারেক রহমান বললেন

ভোট ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় যেকোনো মূল্য চুকাতে প্রস্তুত বিএনপি

আপডেট সময় : ১১:৩২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

দেশে গণতন্ত্র এবং মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপি যেকোনো মূল্য দিতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও দিনাজপুর জেলা বিএনপির আয়োজিত একটি কর্মশালায় বক্তব্য দেন তিনি। এ সময় ৩১ দফা দাবির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়।

তারেক রহমান বলেন, “বিএনপি এবং এর প্রতিটি নেতাকর্মী আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ—বাংলাদেশে যেকোনো মূল্যে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত না হলে অর্থনৈতিক মুক্তিও অসম্ভব। জনগণের অংশগ্রহণ ও অধিকার প্রতিষ্ঠাই আমাদের সংগ্রামের মূল লক্ষ্য।”

তিনি বলেন, “গত ১৫ বছর ধরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে রাজপথে রয়েছে বিএনপি। এই সংগ্রামে বহু নেতাকর্মী গুম হয়েছেন, কেউ খুন হয়েছেন, আবার অনেকে পঙ্গু হয়ে জীবন পার করছেন। তাদের এই আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া হবে না।”

তারেক রহমান আরও বলেন, “গত বছরের আন্দোলনে প্রায় ১০০ শিশু হত্যা হয়েছে—এটা ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায়। কোনো যুদ্ধ ছাড়াই শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় শিশুদের প্রাণহানি হয়েছে, যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।”

বিএনপির সংস্কার উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় থেকেই আমরা দলের কাঠামোতে সংস্কার এনেছি। আজ আমরা ৩১ দফা দিচ্ছি, কিন্তু এটিই শেষ নয়—সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া।”

তিনি জানান, “দেশের ৭০ ভাগ উন্নয়নমূলক কাজ বিএনপির শাসনামলেই হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, নারী উন্নয়ন ও পরিবেশ নিয়ে মানুষের প্রশ্ন এবং আগ্রহ প্রমাণ করে, মানুষ এখনো বিএনপির প্রতি আস্থাশীল।”

তারেক রহমান বলেন, “গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করলে দেশের সামগ্রিক অগ্রগতি থেমে যায়। তাই যেকোনো মূল্যে এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জনগণের কাছে না গিয়ে কেউ ভোট পাবে না—এটাই বাস্তবতা। জনগণের সঙ্গে মিশে কাজ করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বিএনপির ওপর জনগণের আস্থা রয়েছে। আমাদেরকে সেই আস্থা ধরে রাখতে হবে। মিছিল-মিটিংয়ের পর এবার জনগণকে সংগঠিত করে দেশ গঠনের কাজে নামতে হবে।”

দলের তরুণ নেতৃত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অনেক তরুণ আন্দোলনের কারণে এখন বয়স পেরিয়ে গেছেন, তাদের মূল্যায়ন করতে হবে। শুধু ছাত্রদল নয়, অনেক সাধারণ মানুষও চাকরি হারিয়েছেন সরকারবিরোধী অবস্থানের কারণে—এই বাস্তবতা উপলব্ধি করতে হবে।”

স্বাস্থ্য ও নারী শিক্ষায় বিএনপির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, “স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে যাবে ঘরে ঘরে। নারীদের জন্য পুনরায় ফ্রি শিক্ষা চালু হবে, নারীদের আসন ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করা হবে।”

তিনি সতর্ক করে বলেন, “বিএনপির বিরুদ্ধে একটি অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে, যারা ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। তারা নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে, এতে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। বিএনপি এ ধরনের প্রতিপক্ষ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন। ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, কেন্দ্রীয় নেতা ফরহাদ হোসেন আজাদ এবং দিনাজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোফাজ্জল হোসেন দুলাল প্রমুখ।