ঢাকা ০৮:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আদালতে তুরিন আফরোজের কান্না-হাসি!

সিনিয়র প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৩:০১:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ৩৫ বার পড়া হয়েছে

ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের ডক্টরেট ডিগ্রি ভুয়া

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়।

আদালত চত্বরে প্রবেশের সময় তাকে হাসিমুখে দেখা গেলেও, কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর পর কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। উপস্থিত অনেকের চোখে ছিল বিস্ময়—এক সময় রাষ্ট্রের পক্ষে যুদ্ধাপরাধের বিচার করা মানুষ এখন নিজেই আসামির কাঠগড়ায়।

তুরিন আফরোজকে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে আদালতে আনা হয়। তার মাথায় হেলমেট এবং গায়ে ছিল বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি নিঃশব্দে ফুঁপিয়ে কাঁদছিলেন। তাকে সান্ত্বনা দিতে এগিয়ে যান সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক শহীদুল হক এবং ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তানভীর হাসান সৈকত।

শুনানির সময় তার আইনজীবী অভিযোগ করেন, গ্রেপ্তারের পর তুরিন আফরোজ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বিচারকের অনুমতি নিয়ে তুরিন আফরোজ নিজেই বলেন, “আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি ন্যায়বিচার চাই। কোনোদিন কোনো রাজনৈতিক পদে ছিলাম না। কেবল পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছি। এখন আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ, হাঁটতেও পারি না।”

জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী অভিযোগ করেন, তুরিন আফরোজ মিথ্যাচার করছেন এবং মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, “তিনি আদালতে ভীতি সৃষ্টি করছেন।”

তখন তুরিন আফরোজ নিজের পায়ে নির্যাতনের চিহ্ন দেখান বিচারকের সামনে। সব শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমান উত্তরা পশ্চিম থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।

আদালত থেকে হাজতে নেওয়ার সময় আবারও তাকে হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়। তবে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি।

এর আগে ৭ এপ্রিল রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে অভিযান চালিয়ে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক শিক্ষার্থী, আব্দুল জব্বারকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ৮ এপ্রিল আদালত তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে ১২ এপ্রিল তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আদালতে তুরিন আফরোজের কান্না-হাসি!

আপডেট সময় : ০৩:০১:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে বুধবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়।

আদালত চত্বরে প্রবেশের সময় তাকে হাসিমুখে দেখা গেলেও, কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর পর কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। উপস্থিত অনেকের চোখে ছিল বিস্ময়—এক সময় রাষ্ট্রের পক্ষে যুদ্ধাপরাধের বিচার করা মানুষ এখন নিজেই আসামির কাঠগড়ায়।

তুরিন আফরোজকে সকাল ৯টা ৫৫ মিনিটে আদালতে আনা হয়। তার মাথায় হেলমেট এবং গায়ে ছিল বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি নিঃশব্দে ফুঁপিয়ে কাঁদছিলেন। তাকে সান্ত্বনা দিতে এগিয়ে যান সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক শহীদুল হক এবং ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তানভীর হাসান সৈকত।

শুনানির সময় তার আইনজীবী অভিযোগ করেন, গ্রেপ্তারের পর তুরিন আফরোজ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বিচারকের অনুমতি নিয়ে তুরিন আফরোজ নিজেই বলেন, “আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি ন্যায়বিচার চাই। কোনোদিন কোনো রাজনৈতিক পদে ছিলাম না। কেবল পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছি। এখন আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ, হাঁটতেও পারি না।”

জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী অভিযোগ করেন, তুরিন আফরোজ মিথ্যাচার করছেন এবং মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, “তিনি আদালতে ভীতি সৃষ্টি করছেন।”

তখন তুরিন আফরোজ নিজের পায়ে নির্যাতনের চিহ্ন দেখান বিচারকের সামনে। সব শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুবুর রহমান উত্তরা পশ্চিম থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।

আদালত থেকে হাজতে নেওয়ার সময় আবারও তাকে হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়। তবে সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি তিনি।

এর আগে ৭ এপ্রিল রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে অভিযান চালিয়ে তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক শিক্ষার্থী, আব্দুল জব্বারকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ৮ এপ্রিল আদালত তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে ১২ এপ্রিল তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।