ঢাকা ০৮:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথিপত্র পুড়ে গেছে

সিনিয়র প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০২:০০:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫ ৩৫ বার পড়া হয়েছে

সাগর-রুনি হত্যা মামলা

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনির বহুল আলোচিত হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ৫ আগস্টের অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে হাইকোর্টে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরসাদুর রউফ বলেন, তদন্তে আমরা অগ্রসর হচ্ছি, তবে অগ্নিকাণ্ডে ডিবির হেফাজতে থাকা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব কারণে তদন্ত সম্পন্ন করতে আরও নয় মাস সময় প্রয়োজন।

আদালত পরে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন।

এর আগে, ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট র‌্যাবকে এই মামলার তদন্ত থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে ৬ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তবে ওই সময় উচ্চ আদালতের অবকাশকালীন ছুটির কারণে এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত চার সদস্যের টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক করা হয় পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ও পিবিআই প্রধানকে। বাকি সদস্যরা হলেন, পুলিশ সদর দপ্তর ও সিআইডির একজন করে অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক এবং র‌্যাবের একজন পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজ বাসায় নির্মমভাবে খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। পরদিন সকালে তাদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এরপর ১২ ফেব্রুয়ারি রুনির ভাই নওশের আলী রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব প্রথমে থানার একজন কর্মকর্তা এবং পরে ডিবির পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলমের ওপর পড়ে।

তবে দুই মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় র‌্যাবকে। দীর্ঘ এক যুগ পার হয়ে গেলেও র‌্যাব এখনও কোনো তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে পারেনি। একাধিকবার সময় নেওয়া সত্ত্বেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি তদন্তে।

২০১২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ সংগঠনের দায়ের করা রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চায়, সাগর-রুনির হত্যাকারীদের শনাক্ত করে তাদের কেন আইনের আওতায় আনা হবে না।

এদিকে, মামলার বাদী পক্ষের আইনি লড়াইকে গতিশীল করতে ২০২৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর আইনজীবী শিশির মনিরকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

এক দশক পেরিয়ে গেলেও সাগর-রুনি হত্যার বিচার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ ও হতাশ সাংবাদিক সমাজসহ সারাদেশের মানুষ এখনও এই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির প্রত্যাশায় রয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথিপত্র পুড়ে গেছে

আপডেট সময় : ০২:০০:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনির বহুল আলোচিত হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ৫ আগস্টের অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে হাইকোর্টে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরসাদুর রউফ বলেন, তদন্তে আমরা অগ্রসর হচ্ছি, তবে অগ্নিকাণ্ডে ডিবির হেফাজতে থাকা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব কারণে তদন্ত সম্পন্ন করতে আরও নয় মাস সময় প্রয়োজন।

আদালত পরে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন।

এর আগে, ২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট র‌্যাবকে এই মামলার তদন্ত থেকে সরিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে ৬ এপ্রিলের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তবে ওই সময় উচ্চ আদালতের অবকাশকালীন ছুটির কারণে এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত চার সদস্যের টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক করা হয় পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ও পিবিআই প্রধানকে। বাকি সদস্যরা হলেন, পুলিশ সদর দপ্তর ও সিআইডির একজন করে অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক এবং র‌্যাবের একজন পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজ বাসায় নির্মমভাবে খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারওয়ার এবং এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। পরদিন সকালে তাদের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এরপর ১২ ফেব্রুয়ারি রুনির ভাই নওশের আলী রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তের দায়িত্ব প্রথমে থানার একজন কর্মকর্তা এবং পরে ডিবির পুলিশ পরিদর্শক মো. রবিউল আলমের ওপর পড়ে।

তবে দুই মাস পর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় র‌্যাবকে। দীর্ঘ এক যুগ পার হয়ে গেলেও র‌্যাব এখনও কোনো তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে পারেনি। একাধিকবার সময় নেওয়া সত্ত্বেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি তদন্তে।

২০১২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ সংগঠনের দায়ের করা রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চায়, সাগর-রুনির হত্যাকারীদের শনাক্ত করে তাদের কেন আইনের আওতায় আনা হবে না।

এদিকে, মামলার বাদী পক্ষের আইনি লড়াইকে গতিশীল করতে ২০২৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর আইনজীবী শিশির মনিরকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

এক দশক পেরিয়ে গেলেও সাগর-রুনি হত্যার বিচার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ ও হতাশ সাংবাদিক সমাজসহ সারাদেশের মানুষ এখনও এই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির প্রত্যাশায় রয়েছেন।