সমালোচনার মুখে ডিএনসিসির উপদেষ্টা পদ ছাড়লেন আমিনুল

- আপডেট সময় : ১০:৫৮:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫ ৩১ বার পড়া হয়েছে

তীব্র সমালোচনার মুখে অবশেষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের উপদেষ্টা পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন এস্তোনিয়ার নাগরিক ও লেখক ড. আমিনুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সেখানে সংক্ষিপ্তভাবে তিনি লেখেন, “I already resigned, peace.”
ডিএনসিসি গত ১৭ এপ্রিল এক অফিস আদেশে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯–এর ৫৩ ধারা অনুযায়ী আমিনুল ইসলামকে প্রশাসকের পরামর্শের জন্য উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত করে। এই নিয়োগ ছিল অবৈতনিক এবং “প্রশাসকের ইচ্ছানুসারে” উল্লেখ করে আদেশটি জারি করা হয়।
তবে নিয়োগের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। কারণ, আমিনুল ইসলাম দুই বছর আগে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করে এস্তোনিয়ার নাগরিক হন। অনেকে প্রশ্ন তোলেন, একজন বিদেশি নাগরিক কীভাবে একটি স্থানীয় সরকারের উপদেষ্টা পদে নিযুক্ত হতে পারেন? কেউ কেউ অভিযোগ করেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার ইচ্ছায়ই এই নিয়োগ হয়।
এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, “আসলে তিনি উপদেষ্টা নন, বিশেষজ্ঞ কমিটিতে তাকে যুক্ত করা হয়েছিল। তবে সমালোচনার কারণে তিনি নিজেও থাকতে চাচ্ছিলেন না, আমরাও বাদ দিয়েছি।”
ঢাকায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা আমিনুল ইসলাম নাখালপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ থেকে এইচএসসি এবং সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) থেকে স্নাতক শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য যান সুইডেন ও ইংল্যান্ডে। বর্তমানে তিনি এস্তোনিয়ার এন্টারপ্রেনারশিপ ইউনিভার্সিটিতে টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে সিনিয়র লেকচারার হিসেবে কর্মরত।
শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি একজন জনপ্রিয় লেখক। ২০২৩ সালে তার লেখা প্রবন্ধগ্রন্থ লাইফ অ্যাজ ইট ইজ রকমারি বেস্ট সেলার পুরস্কার পায়। চলতি বছর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত নিলী নীলিমা ও গ্রীষ্মের ছুটিতে দুঃস্বপ্ন বই দুটি পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২০ মার্চ ডেনমার্কে বাংলাদেশের দূতাবাসে পাঠানো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠিতে আমিনুল ইসলামের নাগরিকত্ব পরিত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয় এবং তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট জমা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নাগরিকত্ব ত্যাগের বিষয়টি পুরোনো হলেও ডিএনসিসির এই সাম্প্রতিক নিয়োগে তা নতুন করে আলোচনায় উঠে আসে, এবং শেষ পর্যন্ত ড. আমিনুল ইসলামকে পদত্যাগ করতে হয়।