ঢাকা ০৮:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উৎকণ্ঠায় পরিবার

কক্সবাজারে গিয়ে নিখোঁজ জকিগঞ্জের ছয় নির্মাণশ্রমিক 

প্রতিনিধি, কক্সবাজার
  • আপডেট সময় : ১২:২৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫ ৩৫ বার পড়া হয়েছে

কক্সবাজারে গিয়ে নিখোঁজ জকিগঞ্জের ছয় নির্মাণশ্রমিক 

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ছয়জন নির্মাণশ্রমিক কক্সবাজারে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। ১৬ এপ্রিল সেখানে পৌঁছানোর পর থেকে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে, পরিবারগুলোর সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। এতে তীব্র উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন স্বজনরা।

নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন—রশিদ আহমদ, মারুফ আহমদ, শাহিন আহমদ, এমাদ উদ্দিন, খালেদ হাসান ও আব্দুল জলিল। তাদের বয়স ১৮ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে। জানা গেছে, ১৫ এপ্রিল সকালে তারা জকিগঞ্জ থেকে কক্সবাজারে রওনা দেন এবং পরদিন গন্তব্যে পৌঁছান। উদ্দেশ্য ছিল নির্মাণকাজে যোগ দেওয়া। তবে এরপর থেকেই তারা নিখোঁজ।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় এমাদ উদ্দিন পরিবারের সঙ্গে শেষবারের মতো ফোনে কথা বলেন। জানান, তারা সবাই কর্মস্থলে পৌঁছেছেন। সেই ফোন কলের পর থেকে আর কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

রশিদ আহমদের ভাই বলেন, “ও আগে চট্টগ্রামে একটি ঠিকাদারের অধীনে কাজ করত, সেখান থেকেই এবার কক্সবাজারে গেছে। কিন্তু ঠিকাদারের নাম-নম্বর আমাদের জানা ছিল না। এখন যেটা ছিল, সেটাও বন্ধ।”

নিখোঁজ খালেদ হাসানের বাবা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সফর উদ্দিন বলেন, “ছেলেকে নিয়ে যিনি গেছেন, তার নাম জানা থাকলেও এখন ফোন বন্ধ। তার সঙ্গী বাবুলের নম্বরও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।”

পরিবারগুলো প্রথমে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে যোগাযোগ হয়নি বলে ধরে নিয়েছিল। কিন্তু এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কোনো খোঁজ না পাওয়ায় এখন তারা ভীষণ উদ্বিগ্ন।

পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজদের মধ্যে দুজনের শেষ মোবাইল লোকেশন ছিল কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকায়। জকিগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করা হলে পুলিশ কক্সবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেয়।

জকিগঞ্জ থানার ওসি জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, “পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা বিষয়টি জেনেছি। কক্সবাজার পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি। গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।”

অন্যদিকে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, “এখন পর্যন্ত কেউ সরাসরি থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা কক্সবাজারে রওনা দিয়েছেন। তারা ধারণা করছেন, যদি অপহরণ বা জিম্মি করে রাখার ঘটনা হতো, তবে এতদিনে কেউ না কেউ যোগাযোগ করত। কিন্তু কোনো দাবি না আসায় বিষয়টি আরও রহস্যজনক হয়ে উঠেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

উৎকণ্ঠায় পরিবার

কক্সবাজারে গিয়ে নিখোঁজ জকিগঞ্জের ছয় নির্মাণশ্রমিক 

আপডেট সময় : ১২:২৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের ছয়জন নির্মাণশ্রমিক কক্সবাজারে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। ১৬ এপ্রিল সেখানে পৌঁছানোর পর থেকে তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে, পরিবারগুলোর সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি। এতে তীব্র উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন স্বজনরা।

নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন—রশিদ আহমদ, মারুফ আহমদ, শাহিন আহমদ, এমাদ উদ্দিন, খালেদ হাসান ও আব্দুল জলিল। তাদের বয়স ১৮ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে। জানা গেছে, ১৫ এপ্রিল সকালে তারা জকিগঞ্জ থেকে কক্সবাজারে রওনা দেন এবং পরদিন গন্তব্যে পৌঁছান। উদ্দেশ্য ছিল নির্মাণকাজে যোগ দেওয়া। তবে এরপর থেকেই তারা নিখোঁজ।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় এমাদ উদ্দিন পরিবারের সঙ্গে শেষবারের মতো ফোনে কথা বলেন। জানান, তারা সবাই কর্মস্থলে পৌঁছেছেন। সেই ফোন কলের পর থেকে আর কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

রশিদ আহমদের ভাই বলেন, “ও আগে চট্টগ্রামে একটি ঠিকাদারের অধীনে কাজ করত, সেখান থেকেই এবার কক্সবাজারে গেছে। কিন্তু ঠিকাদারের নাম-নম্বর আমাদের জানা ছিল না। এখন যেটা ছিল, সেটাও বন্ধ।”

নিখোঁজ খালেদ হাসানের বাবা ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সফর উদ্দিন বলেন, “ছেলেকে নিয়ে যিনি গেছেন, তার নাম জানা থাকলেও এখন ফোন বন্ধ। তার সঙ্গী বাবুলের নম্বরও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।”

পরিবারগুলো প্রথমে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে যোগাযোগ হয়নি বলে ধরে নিয়েছিল। কিন্তু এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও কোনো খোঁজ না পাওয়ায় এখন তারা ভীষণ উদ্বিগ্ন।

পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজদের মধ্যে দুজনের শেষ মোবাইল লোকেশন ছিল কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকায়। জকিগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করা হলে পুলিশ কক্সবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেয়।

জকিগঞ্জ থানার ওসি জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, “পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা বিষয়টি জেনেছি। কক্সবাজার পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি। গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।”

অন্যদিকে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, “এখন পর্যন্ত কেউ সরাসরি থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা কক্সবাজারে রওনা দিয়েছেন। তারা ধারণা করছেন, যদি অপহরণ বা জিম্মি করে রাখার ঘটনা হতো, তবে এতদিনে কেউ না কেউ যোগাযোগ করত। কিন্তু কোনো দাবি না আসায় বিষয়টি আরও রহস্যজনক হয়ে উঠেছে।