অপহরণের ছয় দিনেও খোঁজ মিলেনি চবির ৫ শিক্ষার্থীর

- আপডেট সময় : ১০:৫২:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ ৪৪ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের ছয় দিন পার হলেও তাদের কোনো খোঁজ মেলেনি। অপহৃতদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ, সোমবার (২১ এপ্রিল) ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার পূর্ণচন্দ্র কার্বারিপাড়া এলাকায় ইউপিডিএফের একটি কথিত গোপন আস্তানায় অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে ইউপিডিএফের ব্যবহৃত বেশ কিছু সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে গুলি, তিন জোড়া পোশাক, ১৯টি ইউনিফর্মের প্যান্ট, একটি ল্যাপটপ, ওয়াকিটকি সেট, দুটি মোবাইল ফোন, মাইক্রোফোন, ক্যামেরা, প্রিন্টার, সেলাই মেশিন, তাঁবু, নেট এবং জিম্মিদের আটকে রাখার লোহার চেইন।
অভিযান শেষে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন খাগড়াছি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান। যৌথবাহিনীর নেতৃত্বে থাকা এক কর্মকর্তা জানান, “অপহৃতদের উদ্ধারে প্রয়োজনে প্রতিটি এলাকা চিরুনি অভিযানের আওতায় আনা হবে।”
খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল জানান, “গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে বেশ কিছু সরঞ্জাম উদ্ধার করা হলেও শিক্ষার্থীদের পাওয়া যায়নি। সন্দেহভাজন কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
এদিকে এই অপহরণের জন্য শুরু থেকেই ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-কে দায়ী করে আসছে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতি ও তাদের সহযোগী সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ। তবে ইউপিডিএফ অপহরণের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, “পাঁচ শিক্ষার্থী উদ্ধারের নামে পরিচালিত অভিযান সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ইউপিডিএফের কোনো গোপন আস্তানা নেই—এই প্রচারণা আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা।”
প্রসঙ্গত, গত ১৬ এপ্রিল ভোরে বৈসাবি উৎসব শেষে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার কুকিছড়া এলাকা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার পথে পাঁচ শিক্ষার্থী এবং একজন অটোরিকশাচালককে অপহরণ করে অস্ত্রধারীরা। পরে চালককে ছেড়ে দিলেও শিক্ষার্থীরা এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। অপহৃতরা হলেন: অলড্রিন ত্রিপুরা, মৈত্রীময় চাকমা, দিব্যি চাকমা, রিশন চাকমা এবং লংঙি ম্রো।
ঘটনার প্রতিবাদে রোববার খাগড়াছড়িসহ তিন পার্বত্য জেলায় বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশের ডাক দিয়েছে খাগড়াছড়ি আদিবাসী ছাত্র সমাজ। অপহৃতদের পরিবারের সদস্য ও সহপাঠীরা দ্রুত তাদের অক্ষত অবস্থায় ফেরত চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।