ঢাকা ০৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেষ হয়নি সংগ্রাম, শুরু হয়েছে আরেক নতুন পথচলা

সিনিয়র প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১০:২০:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ ৩৪ বার পড়া হয়েছে

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, এখনও সংগ্রামের পথ শেষ হয়নি, সজাগ ও সচেতন থাকার কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, “গণতন্ত্র এখনো পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি, তাই আমাদের লড়াই চলতেই থাকবে।”

রোববার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর আইডিইবি মিলনায়তনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রয়াত আবদুল্লাহ আল নোমান স্মরণে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের এখনো একটি জনগণের সরকার পাইনি। নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত একটি গ্রহণযোগ্য পার্লামেন্ট এখনও হয়নি। সেই কারণে আমাদের আরও দায়িত্বশীল হয়ে দলকে সুসংগঠিত করতে হবে, সতর্কভাবে পথ চলতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এই সময়টা হচ্ছে আমাদের জন্য একটি পরীক্ষা। দেশে এক ধরনের অস্থিরতা চলছে, যা সংবাদপত্র, টকশোসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিফলিত হচ্ছে। সংস্কার, নির্বাচন—এসব বিষয় এখন বারবার আলোচনায় আসছে, অথচ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের কোনো আলোচনা নেই।”

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, “আমরা আমাদের প্রস্তাব দিয়েছি। আলোচনার মাধ্যমেই একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান বেরিয়ে আসবে বলে আশা করি। জনগণ যেন তাদের সত্যিকারের প্রতিনিধিকে বেছে নিতে পারে, সেই লক্ষ্যে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের দিকে এগোতে হবে।”

প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলামের মৃত্যু নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, “জাহিদুলকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। কে বা কারা করেছে, তা আমরা জানি না। তবে এটুকু স্পষ্ট যে যারা এই সময় একজন ত্যাগী ছাত্রনেতাকে হত্যা করতে পারে, তারা দেশের পরিবর্তনের শক্তির অংশ হতে পারে না।”

শ্রমজীবী মানুষের দুরবস্থার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “যেখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন সংস্কার নিয়ে কথা বলছে, সেখানে কৃষক-শ্রমিকদের নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। কৃষকরা পণ্যের ন্যায্যমূল্য পান না, প্রয়োজনীয় পানি পান না। শ্রমজীবী মানুষের সন্তানরা ভালো শিক্ষা পায় না, অনেক সময় বইও পায় না।”

তিনি অভিযোগ করেন, “গণমাধ্যমে, নাটকে, এমনকি টকশোতেও সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শ্রমজীবী শ্রেণি অনুপস্থিত। তারা যেন সমাজের বাইরে থাকা একটি অবহেলিত শ্রেণি।”

আবদুল্লাহ আল নোমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ফখরুল বলেন, “এই অনিশ্চয়তার সময়ে নোমানের মতো নেতার খুব প্রয়োজন ছিল। তিনি ছিলেন সেই মানুষ, যিনি প্রতিকূল অবস্থাতেও আন্দোলনের আগুন জ্বালাতে পারতেন। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস এবং প্রয়াত আবদুল্লাহ আল নোমানের পুত্র সাঈদ আল নোমান প্রমুখ।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

শেষ হয়নি সংগ্রাম, শুরু হয়েছে আরেক নতুন পথচলা

আপডেট সময় : ১০:২০:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, এখনও সংগ্রামের পথ শেষ হয়নি, সজাগ ও সচেতন থাকার কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, “গণতন্ত্র এখনো পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি, তাই আমাদের লড়াই চলতেই থাকবে।”

রোববার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর আইডিইবি মিলনায়তনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রয়াত আবদুল্লাহ আল নোমান স্মরণে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমাদের এখনো একটি জনগণের সরকার পাইনি। নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত একটি গ্রহণযোগ্য পার্লামেন্ট এখনও হয়নি। সেই কারণে আমাদের আরও দায়িত্বশীল হয়ে দলকে সুসংগঠিত করতে হবে, সতর্কভাবে পথ চলতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এই সময়টা হচ্ছে আমাদের জন্য একটি পরীক্ষা। দেশে এক ধরনের অস্থিরতা চলছে, যা সংবাদপত্র, টকশোসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিফলিত হচ্ছে। সংস্কার, নির্বাচন—এসব বিষয় এখন বারবার আলোচনায় আসছে, অথচ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের কোনো আলোচনা নেই।”

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, “আমরা আমাদের প্রস্তাব দিয়েছি। আলোচনার মাধ্যমেই একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান বেরিয়ে আসবে বলে আশা করি। জনগণ যেন তাদের সত্যিকারের প্রতিনিধিকে বেছে নিতে পারে, সেই লক্ষ্যে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের দিকে এগোতে হবে।”

প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলামের মৃত্যু নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, “জাহিদুলকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। কে বা কারা করেছে, তা আমরা জানি না। তবে এটুকু স্পষ্ট যে যারা এই সময় একজন ত্যাগী ছাত্রনেতাকে হত্যা করতে পারে, তারা দেশের পরিবর্তনের শক্তির অংশ হতে পারে না।”

শ্রমজীবী মানুষের দুরবস্থার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “যেখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন সংস্কার নিয়ে কথা বলছে, সেখানে কৃষক-শ্রমিকদের নিয়ে কোনো আলোচনা নেই। কৃষকরা পণ্যের ন্যায্যমূল্য পান না, প্রয়োজনীয় পানি পান না। শ্রমজীবী মানুষের সন্তানরা ভালো শিক্ষা পায় না, অনেক সময় বইও পায় না।”

তিনি অভিযোগ করেন, “গণমাধ্যমে, নাটকে, এমনকি টকশোতেও সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শ্রমজীবী শ্রেণি অনুপস্থিত। তারা যেন সমাজের বাইরে থাকা একটি অবহেলিত শ্রেণি।”

আবদুল্লাহ আল নোমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ফখরুল বলেন, “এই অনিশ্চয়তার সময়ে নোমানের মতো নেতার খুব প্রয়োজন ছিল। তিনি ছিলেন সেই মানুষ, যিনি প্রতিকূল অবস্থাতেও আন্দোলনের আগুন জ্বালাতে পারতেন। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস এবং প্রয়াত আবদুল্লাহ আল নোমানের পুত্র সাঈদ আল নোমান প্রমুখ।