চট্টগ্রামে আবারও নালায় প্রাণহানি
নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর শিশুর মরদেহ উদ্ধার

- আপডেট সময় : ১২:১৮:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ৮৮ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রামের চকবাজারে নালায় পড়ে নিখোঁজ হওয়া ছয় মাস বয়সী শিশু সেহেরিজের মরদেহ ১৪ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে কাপাসগোলা এলাকায় খালের পানির নিচ থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
শুক্রবার রাত ৮টার দিকে প্যাডেলচালিত একটি রিকশায় করে মা, দাদি ও শিশুসহ তিনজন আসাদগঞ্জ থেকে মামার বাসায় যাওয়ার পথে রাস্তায় জমে থাকা পানিতে রিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালের পানিতে পড়ে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় মা সালমা বেগম ও দাদি আয়েশা বেগমকে উদ্ধার করা গেলেও শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
শিশুর মামা মারুফ জানান, রাস্তায় পানি থাকায় তারা রিকশা নেয়, কিন্তু নালার পাশে থাকা নিরাপত্তা ব্যারিকেড তুলে নেওয়ার কারণে রিকশাটি খালে পড়ে যায়। রাতভর উদ্ধার চেষ্টা চালিয়ে শনিবার সকালে উদ্ধার করা হয় শিশুটির মরদেহ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সিটি কর্পোরেশন ‘খাল পরিষ্কারের’ অজুহাতে নালার পাশে থাকা বাঁশের ব্যারিকেড খুলে নেয়। এর ফলে বৃষ্টির পানিতে রাস্তা ও খাল একাকার হয়ে দুর্ঘটনার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তারা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) অব্যবস্থাপনা ও গাফিলতিকেই এই মৃত্যুর জন্য দায়ী করছেন।
ঘটনার পরই চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন ঘটনাস্থলে যান। তিনি ডুবুরি দলকে তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশ দেন এবং উদ্ধারকারী দলকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন। পাশাপাশি দ্রুত অরক্ষিত নালাগুলোর পাশে নিরাপত্তা ব্যারিকেড বসানোর প্রতিশ্রুতি দেন।
চট্টগ্রামে নালায় পড়ে মৃত্যু নতুন কিছু নয়। ২০২১ সালের আগস্টে সবজি বিক্রেতা সালেহ আহমেদ, একই বছরের সেপ্টেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া, ২০২২ সালে শিশু কামাল, ২০২৩ সালে শিশু ইয়াছিন এবং ২০২৪ সালে শিশু সাইদুল ইসলাম—all নালায় পড়ে মারা যায়।
সর্বশেষ ঘটনাটি আরও একবার নগরীর অরক্ষিত নালা ব্যবস্থাপনার ভয়াবহ চিত্র সামনে নিয়ে এসেছে। মায়ের চোখের সামনে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ছয় মাসের শিশুটির মৃত্যু শুধু একটি দুর্ঘটনা নয়—এটি নগর ব্যবস্থাপনার করুণ ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।