শখ পূরণের জন্য বিক্রি: অবশেষে উদ্ধার হলো সেই শিশু

- আপডেট সময় : ০৭:৩৩:০৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ৪৩ বার পড়া হয়েছে

টাঙ্গাইলের মধুপুরে পারিবারিক কলহের জেরে মায়ের হাতে বিক্রি হয়ে যাওয়া চার মাস বয়সী শিশু তামিমকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে ঘাটাইল উপজেলার ছুনটিয়া গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল কবীর জানান, শিশুটিকে বিক্রির বিষয়টি জানার পর পরই অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মধুপুর উপজেলার পুন্ডুরা শেওড়াতলা এলাকার আজম আলীর ছেলে রবিউল ইসলামের সঙ্গে দুই বছর আগে গোপালপুরের বলাটা গ্রামের লিটন মিয়ার মেয়ে লাবনী আক্তারের বিয়ে হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের সম্পর্ক বিয়েতে গড়ায়। তবে বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই সংসারে টানাপড়েন শুরু হয়। একপর্যায়ে রবিউল নিজে বাড়ির পাশে ঘর ভাড়া নিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ আলাদা থাকতে শুরু করেন। চার মাস আগে তাদের ঘরে জন্ম নেয় ছেলে তামিম।
রবিউল জানান, কিছুদিন আগে লাবনী ছেলে তামিমকে নিয়ে তার বোনের বাড়ি ভূঞাপুরে যান। পরে তাকে বাড়ি ফিরতে বললে সে অস্বীকৃতি জানায় এবং জানিয়ে দেয়, আর সংসার করবে না। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) লাবনী ফোন করে জানায়, সে তার সন্তানকে বিক্রি করেছে।
রবিউল কৌশলে লাবনীকে ঘাটাইলের পাকুটিয়ায় ডেকে এনে তাকে নিয়ে আসে এবং পুলিশকে অবহিত করে। লাবনী স্বীকার করে যে, গত ১০ এপ্রিল মনির নামে এক ব্যক্তির সহায়তায় সিরাজগঞ্জের এক ব্যক্তির কাছে ৪০ হাজার টাকায় তামিমকে বিক্রি করেছে। সেই টাকায় মোবাইল ফোন, নুপুর ও নাকফুল কিনেছে।
লাবনী বলেন, “আমার মাথা ঠিক ছিল না। এটা আমার ভুল হয়েছে।”
শিশুটির ফুপু রাজিয়া জানান, বিয়ের পর থেকেই লাবনী প্রায়ই ঝগড়া করত এবং বলে আসত যে সে দরিদ্র ঘরে থাকতে চায় না। “আমরা কখনো ভাবিনি, সে নিজের সন্তানকেই বিক্রি করে দেবে,” বলেন রাজিয়া।
মধুপুর থানার ওসি আরও জানান, লাবনী সন্তান বিক্রির সময় ক্রেতার নাম-ঠিকানা গোপন রাখায় উদ্ধার অভিযানে সময় বেশি লেগেছে। তবে শেষ পর্যন্ত শিশুটিকে নিরাপদে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।