ঢাকা ০৮:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বড় চ্যালেঞ্জ আরাকান আর্মি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৭:২৪:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ৩৬ বার পড়া হয়েছে

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. তৌহিদ হোসেন

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধান না হলে মিয়ানমারে কখনোই টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না। তিনি বলেন, সংকট সমাধানে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আরাকান আর্মি, যাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করাও কঠিন, আবার উপেক্ষা করাও সম্ভব নয়।

শুক্রবার ফরেন সার্ভিস দিবস উপলক্ষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

উপদেষ্টা জানান, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা—দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল অ্যান চুলিক এবং পূর্ব এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয়বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যান্ড্রু আর হেরাপ—ঢাকায় সফরকালে তার এবং পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট, বাণিজ্যসহ দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয় উঠে আসে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, “আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছি, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান না হলে, মিয়ানমারে সংঘাত থেমে গেলেও স্থায়ী শান্তি ফিরবে না। বর্তমান বাস্তবতায় আমরা এমন এক প্রতিবেশীর মুখোমুখি, যারা নন-স্টেট অ্যাক্টর। তাদের সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক যোগাযোগ নেই, আবার পুরোপুরি উপেক্ষাও করা যাচ্ছে না।”

তিনি বলেন, “আরাকান আর্মি এখন সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক। তারা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো পক্ষ নয়, ফলে তাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা জটিল। তবে তাদের অগ্রাহ্য করেও সংকটের সমাধান সম্ভব নয়। এ অবস্থাকে আমরা একটি জটিল ও সংবেদনশীল পরিস্থিতি হিসেবে দেখছি।”

বাণিজ্য প্রসঙ্গে উপদেষ্টা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক ও বাণিজ্য বাধা কমানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। “আমি বলেছি, আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি। এবং দুই দেশের মধ্যে যে বাণিজ্যিক ব্যবধান বলে মনে করা হয়, তা আসলে অতটা বড় নয়। বিশেষ করে, বাংলাদেশ সেবা খাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আমদানি করে থাকে,” বলেন তিনি।

ভবিষ্যৎ সমাধানের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে তৌহিদ হোসেন বলেন, “সম্ভবত সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে এবং সমাধানের পথ তৈরি হবে। তখন আমাদের বন্ধুপ্রতিম ও প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর উচিত হবে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা, যেন ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব রোহিঙ্গাদের মানবিক দৃষ্টিতে দেখে তাদের অধিকার ও নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়।”

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বড় চ্যালেঞ্জ আরাকান আর্মি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ০৭:২৪:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধান না হলে মিয়ানমারে কখনোই টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না। তিনি বলেন, সংকট সমাধানে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আরাকান আর্মি, যাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করাও কঠিন, আবার উপেক্ষা করাও সম্ভব নয়।

শুক্রবার ফরেন সার্ভিস দিবস উপলক্ষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

উপদেষ্টা জানান, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা—দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল অ্যান চুলিক এবং পূর্ব এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয়বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যান্ড্রু আর হেরাপ—ঢাকায় সফরকালে তার এবং পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট, বাণিজ্যসহ দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয় উঠে আসে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, “আমরা পরিষ্কারভাবে জানিয়েছি, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান না হলে, মিয়ানমারে সংঘাত থেমে গেলেও স্থায়ী শান্তি ফিরবে না। বর্তমান বাস্তবতায় আমরা এমন এক প্রতিবেশীর মুখোমুখি, যারা নন-স্টেট অ্যাক্টর। তাদের সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক যোগাযোগ নেই, আবার পুরোপুরি উপেক্ষাও করা যাচ্ছে না।”

তিনি বলেন, “আরাকান আর্মি এখন সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক। তারা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো পক্ষ নয়, ফলে তাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা জটিল। তবে তাদের অগ্রাহ্য করেও সংকটের সমাধান সম্ভব নয়। এ অবস্থাকে আমরা একটি জটিল ও সংবেদনশীল পরিস্থিতি হিসেবে দেখছি।”

বাণিজ্য প্রসঙ্গে উপদেষ্টা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক ও বাণিজ্য বাধা কমানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। “আমি বলেছি, আমরা এ বিষয়ে কাজ করছি। এবং দুই দেশের মধ্যে যে বাণিজ্যিক ব্যবধান বলে মনে করা হয়, তা আসলে অতটা বড় নয়। বিশেষ করে, বাংলাদেশ সেবা খাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আমদানি করে থাকে,” বলেন তিনি।

ভবিষ্যৎ সমাধানের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে তৌহিদ হোসেন বলেন, “সম্ভবত সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে এবং সমাধানের পথ তৈরি হবে। তখন আমাদের বন্ধুপ্রতিম ও প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর উচিত হবে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা, যেন ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব রোহিঙ্গাদের মানবিক দৃষ্টিতে দেখে তাদের অধিকার ও নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়।”