ঢাকা ১১:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতে সংশোধিত ওয়াকফ আইন স্থগিতের ঘোষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:২১:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ৩৫ বার পড়া হয়েছে

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বাস্তবায়ন স্থগিত করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এই আইনের বিরুদ্ধে করা পিটিশনের শুনানির পর গতকাল বৃহস্পতিবার স্থগিত রাখার ঘোষণা আসে। এতে বলা হয়, পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত ঘোষিত ওয়াকফ সম্পত্তিতে বদল ঘটানো যাবে না। ওয়াকফ বোর্ড বা পর্ষদেও নিয়োগ করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্ট যে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে, তা কেন্দ্রকে মানতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৫ মে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, বৃহস্পতিবার শুনানির শুরুতে সওয়াল করেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি জানান, কেন্দ্রের কাছে প্রচুর তথ্য জমা পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বহু জমি ‘ওয়াকফ’ হিসেবে নথিভুক্ত রয়েছে। নিজেদের সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বহু মানুষের।

এরপরই সুপ্রিম কোর্টের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য সময় চায় কেন্দ্র। তার ভিত্তিতে কেন্দ্রকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

নতুন ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে জবাব দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপরই বিচারপতি বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি, এই আইনে কিছু ভালো দিক অবশ্যই রয়েছে। তাই পুরোপুরি স্থগিত করে দেওয়ার কথা কখনোই বলা হয়নি। কিন্তু আমরা চাই না, এখন যা পরিস্থিতি, তা বদলে যাক। বিষয়টি এখনো আদালতে বিচারাধীন। পরিস্থিতি যাতে না বদলায়, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।’

এর আগে গতকাল বুধবার এই আইনের বিরুদ্ধে করা ৭৩টি পিটিশনের শুনানি শুরু হয়। আজ বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ সংশোধিত ওয়াক্ফ আইন স্থগিতের ঘোষণা দেন। তবে আদালতের এই সিদ্ধান্তের পরও দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে মুসলমানরা দীর্ঘদিন ধর্মীয় বা দানের কাজে ব্যবহৃত সম্পত্তিকে ওয়াকফ হিসেবে দাবি করতে পারে, এমনকি কাগজপত্র না থাকলেও। নতুন আইনে বলা হয়েছে, বিরোধপূর্ণ বা সরকারি জমিতে এটি প্রযোজ্য হবে না।

প্রসঙ্গত, ভারতের বিতর্কিত সংশোধিত ওয়াক্ফ বিলে সম্মতি দিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এর মধ্য দিয়ে বিলটি আইনে পরিণত হয়। তবে এই আইন নিয়ে শুনানিতে রাজি হয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, সংশোধিত ওয়াকফ আইন কার্যকরের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন স্থানে চলছে বিক্ষোভ। মুর্শিদাবাদে নিহতের ঘটনাও ঘটেছে। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশন করেছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কপিল সিব্বালও।

তিনি গতকাল বুধবার শুনানিতে বলেন, ‘এত দিন শুধু মুসলিমরাই ওয়াকফ বোর্ডে থাকতে পারতেন। এখন হিন্দুরাও পারবেন–এটা মৌলিক অধিকারের দখলদারি। ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনে সীমাবদ্ধতা ছিল না। নতুন ওয়াকফ সংশোধনী আইনে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’

বুধবার সুপ্রিম কোর্ট ভারতের সরকারকে প্রশ্ন করেন, ‘এখন থেকে কি মুসলিমদেরও হিন্দু সম্পত্তি বোর্ডের সদস্য হতে দেওয়া হবে?’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ভারতে সংশোধিত ওয়াকফ আইন স্থগিতের ঘোষণা

আপডেট সময় : ০১:২১:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বাস্তবায়ন স্থগিত করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এই আইনের বিরুদ্ধে করা পিটিশনের শুনানির পর গতকাল বৃহস্পতিবার স্থগিত রাখার ঘোষণা আসে। এতে বলা হয়, পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত ঘোষিত ওয়াকফ সম্পত্তিতে বদল ঘটানো যাবে না। ওয়াকফ বোর্ড বা পর্ষদেও নিয়োগ করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্ট যে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে, তা কেন্দ্রকে মানতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৫ মে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, বৃহস্পতিবার শুনানির শুরুতে সওয়াল করেন কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি জানান, কেন্দ্রের কাছে প্রচুর তথ্য জমা পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, বহু জমি ‘ওয়াকফ’ হিসেবে নথিভুক্ত রয়েছে। নিজেদের সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বহু মানুষের।

এরপরই সুপ্রিম কোর্টের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য সময় চায় কেন্দ্র। তার ভিত্তিতে কেন্দ্রকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

নতুন ওয়াকফ আইনের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতে কেন্দ্রকে জবাব দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। এরপরই বিচারপতি বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি, এই আইনে কিছু ভালো দিক অবশ্যই রয়েছে। তাই পুরোপুরি স্থগিত করে দেওয়ার কথা কখনোই বলা হয়নি। কিন্তু আমরা চাই না, এখন যা পরিস্থিতি, তা বদলে যাক। বিষয়টি এখনো আদালতে বিচারাধীন। পরিস্থিতি যাতে না বদলায়, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।’

এর আগে গতকাল বুধবার এই আইনের বিরুদ্ধে করা ৭৩টি পিটিশনের শুনানি শুরু হয়। আজ বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ সংশোধিত ওয়াক্ফ আইন স্থগিতের ঘোষণা দেন। তবে আদালতের এই সিদ্ধান্তের পরও দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে মুসলমানরা দীর্ঘদিন ধর্মীয় বা দানের কাজে ব্যবহৃত সম্পত্তিকে ওয়াকফ হিসেবে দাবি করতে পারে, এমনকি কাগজপত্র না থাকলেও। নতুন আইনে বলা হয়েছে, বিরোধপূর্ণ বা সরকারি জমিতে এটি প্রযোজ্য হবে না।

প্রসঙ্গত, ভারতের বিতর্কিত সংশোধিত ওয়াক্ফ বিলে সম্মতি দিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এর মধ্য দিয়ে বিলটি আইনে পরিণত হয়। তবে এই আইন নিয়ে শুনানিতে রাজি হয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, সংশোধিত ওয়াকফ আইন কার্যকরের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন স্থানে চলছে বিক্ষোভ। মুর্শিদাবাদে নিহতের ঘটনাও ঘটেছে। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশন করেছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কপিল সিব্বালও।

তিনি গতকাল বুধবার শুনানিতে বলেন, ‘এত দিন শুধু মুসলিমরাই ওয়াকফ বোর্ডে থাকতে পারতেন। এখন হিন্দুরাও পারবেন–এটা মৌলিক অধিকারের দখলদারি। ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনে সীমাবদ্ধতা ছিল না। নতুন ওয়াকফ সংশোধনী আইনে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’

বুধবার সুপ্রিম কোর্ট ভারতের সরকারকে প্রশ্ন করেন, ‘এখন থেকে কি মুসলিমদেরও হিন্দু সম্পত্তি বোর্ডের সদস্য হতে দেওয়া হবে?’