ঢাকা ০১:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন

হিন্দু বোর্ডে মুসলিম নেই, ওয়াকফ বোর্ডে হিন্দু কেন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:১৩:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৬ বার পড়া হয়েছে

ওয়াকফ বোর্ড

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কঠিন কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। আজ বুধবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টে এই আইনের বিরুদ্ধে ৭৩টি পিটিশনের শুনানি হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ ‘ওয়াক্ফ বাই ইউজার’ ও কেন্দ্রীয় ওয়াক্ফ কাউন্সিলে অমুসলিম সদস্য নিয়োগের বিষয়ে সরকারের জবাব চেয়েছেন।

আদালতে প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি প্রশ্ন রাখেন, ‘হিন্দু দেবোত্তর বোর্ডের সদস্য হিসেবে কোনো মুসলিমকে সদস্য হতে দেবে সরকার? খোলাখুলি বলুন। যদি না দেয়, তবে ওয়াকফ বোর্ডে হিন্দু কেন?’

তিনি আরও বলেন, এই আইন নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা হচ্ছে, যা খুবই উদ্বেগজনক।

‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় বা দানের কাজে ব্যবহৃত সম্পত্তি ওয়াকফ হিসেবে গণ্য হয়। এসব সম্পত্তির কাগজপত্র না থাকলেও ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ আইনে মুসলমানদের বলে গণ্য হয়। তবে নতুন আইনে বলা হয়েছে, বিরোধপূর্ণ বা সরকারি জমি অর্থাৎ কাগজপত্র আছে এমন জমিতে এটি প্রযোজ্য হবে না।

পিটিশন আবেদনকারীদের পক্ষে কপিল সিবাল নামে এক আইনজীবী বলেন, ওয়াকফ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কয়েক হাজার বছর আগে ওয়াকফ তৈরি হলেও এখন কাগজপত্র চাওয়া হচ্ছে। এটি বড় সমস্যা ও সংবিধানের ২৬ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করছে।

তিনি আরও বলেন, ‘ওয়াকফ বোর্ডে জেলা প্রশাসককে রাখা হয়েছে। তিনি সরকারের অংশ। তিনি ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তা অসাংবিধানিক হবে।’

পিটিশন আবেদনকারীদের আরেক আইনজীবী অভিষেক সিংভি জানান, ভারতের ৮ লাখ ওয়াকফ সম্পত্তির মধ্যে ৪ লাখই ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’। এটা অনেক পুরনো ও এসব সম্পত্তির ক্ষেত্রে কারও কাছে কোনো কাগজপত্র নেই। নতুন আইনে এসব সম্পত্তির বৈধ কাগজ চাওয়া হবে। আর কেউ কাগজ দিতে না পারলে তাতে রাষ্ট্রের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা শুনেছি, দিল্লি হাইকোর্টও ওয়াকফ জমির ওপর তৈরি। অর্থাৎ সব ওয়াকফ বাই ইউজার বা ব্যবহারভিত্তিক ওয়াকফ ভুল নয়। এই জমি ওয়াকফ সম্পত্তির অংশ, এই জমির কোনো কাগজপত্র নেই। যেহেতু আদালত এই জমি ব্যবহার করছে, সেহেতু আদালত এই জমির মালিক।’

১৩, ১৪ বা ১৫ শতাব্দীতে তৈরি মসজিদের কাগজপত্র পাওয়া অসম্ভব বলেও জানান প্রধান বিচারপতি।

সূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন

হিন্দু বোর্ডে মুসলিম নেই, ওয়াকফ বোর্ডে হিন্দু কেন?

আপডেট সময় : ১১:১৩:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

ওয়াকফ (সংশোধনী) আইন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কঠিন কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। আজ বুধবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টে এই আইনের বিরুদ্ধে ৭৩টি পিটিশনের শুনানি হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ ‘ওয়াক্ফ বাই ইউজার’ ও কেন্দ্রীয় ওয়াক্ফ কাউন্সিলে অমুসলিম সদস্য নিয়োগের বিষয়ে সরকারের জবাব চেয়েছেন।

আদালতে প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি প্রশ্ন রাখেন, ‘হিন্দু দেবোত্তর বোর্ডের সদস্য হিসেবে কোনো মুসলিমকে সদস্য হতে দেবে সরকার? খোলাখুলি বলুন। যদি না দেয়, তবে ওয়াকফ বোর্ডে হিন্দু কেন?’

তিনি আরও বলেন, এই আইন নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা হচ্ছে, যা খুবই উদ্বেগজনক।

‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় বা দানের কাজে ব্যবহৃত সম্পত্তি ওয়াকফ হিসেবে গণ্য হয়। এসব সম্পত্তির কাগজপত্র না থাকলেও ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’ আইনে মুসলমানদের বলে গণ্য হয়। তবে নতুন আইনে বলা হয়েছে, বিরোধপূর্ণ বা সরকারি জমি অর্থাৎ কাগজপত্র আছে এমন জমিতে এটি প্রযোজ্য হবে না।

পিটিশন আবেদনকারীদের পক্ষে কপিল সিবাল নামে এক আইনজীবী বলেন, ওয়াকফ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কয়েক হাজার বছর আগে ওয়াকফ তৈরি হলেও এখন কাগজপত্র চাওয়া হচ্ছে। এটি বড় সমস্যা ও সংবিধানের ২৬ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করছে।

তিনি আরও বলেন, ‘ওয়াকফ বোর্ডে জেলা প্রশাসককে রাখা হয়েছে। তিনি সরকারের অংশ। তিনি ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তা অসাংবিধানিক হবে।’

পিটিশন আবেদনকারীদের আরেক আইনজীবী অভিষেক সিংভি জানান, ভারতের ৮ লাখ ওয়াকফ সম্পত্তির মধ্যে ৪ লাখই ‘ওয়াকফ বাই ইউজার’। এটা অনেক পুরনো ও এসব সম্পত্তির ক্ষেত্রে কারও কাছে কোনো কাগজপত্র নেই। নতুন আইনে এসব সম্পত্তির বৈধ কাগজ চাওয়া হবে। আর কেউ কাগজ দিতে না পারলে তাতে রাষ্ট্রের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা শুনেছি, দিল্লি হাইকোর্টও ওয়াকফ জমির ওপর তৈরি। অর্থাৎ সব ওয়াকফ বাই ইউজার বা ব্যবহারভিত্তিক ওয়াকফ ভুল নয়। এই জমি ওয়াকফ সম্পত্তির অংশ, এই জমির কোনো কাগজপত্র নেই। যেহেতু আদালত এই জমি ব্যবহার করছে, সেহেতু আদালত এই জমির মালিক।’

১৩, ১৪ বা ১৫ শতাব্দীতে তৈরি মসজিদের কাগজপত্র পাওয়া অসম্ভব বলেও জানান প্রধান বিচারপতি।

সূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার