ঢাকা ০৯:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে বাড়তি খরচ ২ হাজার কোটি

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৪:৩২:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ১০৩ বার পড়া হয়েছে

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন (ফাইল ফটো)

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের ফলে দেশের বাণিজ্যে বাড়তি খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। এই আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের প্রভাবে পণ্য পরিবহনে খরচ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ফলে আমদানি-রপ্তানির ওপরও চাপ সৃষ্টি হয়েছে। সরকার এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য কাজ করছে।”

বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য
বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য

যুক্তরাষ্ট্রের একপেশে শুল্কারোপ নিয়েও বক্তব্য দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি জানান, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রপ্তানিপণ্য থেকে বছরে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার শুল্ক আয় করে। তারপরও দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। এই বিষয়ে আলোচনা করতে অর্থ উপদেষ্টা শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন।”

বাংলাদেশের বার্ষিক রপ্তানি আয় বর্তমানে ৫০ বিলিয়ন ডলার, বিপরীতে আমদানি ৮০ থেকে ৯০ বিলিয়নের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এই ঘাটতি পূরণে রেমিট্যান্স বড় ভূমিকা রাখছে জানিয়ে বলেন, “অর্থপাচার কমে আসায় এখন ব্যাংকিং চ্যানেলেই বেশি অর্থ আসছে।”

সয়াবিন তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এটি একটি প্রয়োজনীয় সমন্বয়।”

উপদেষ্টা বলেন, সরকার বাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং অর্থনীতির ভারসাম্য বজায় রাখতে সঠিক পরিকল্পনায় অগ্রসর হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জন্য ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে রপ্তানির সুবিধাসংক্রান্ত ট্রান্সশিপমেন্ট ব্যবস্থাটি বাতিল করেছে ভারত। এটি বাতিল করার পর এ নিয়ে ব্যাখা করে প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে ভারত।

বুধবার (০৯ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার ফলে আমাদের বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দরগুলোতে ব্যাপক জট সৃষ্টি হচ্ছিল। এতে ভারতের নিজস্ব রপ্তানি কার্যক্রমে বিলম্ব ও ব্যয়বৃদ্ধি হচ্ছিল, যা ব্যাকলগ তৈরি করছিল। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে দেওয়া সুবিধাটি প্রত্যাহার করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, স্পষ্ট করে জানানো হচ্ছে, এই পদক্ষেপ নেপাল বা ভুটানে গমনকারী বাংলাদেশি রপ্তানিকে কোনোভাবেই প্রভাবিত করবে না। এসব রপ্তানি আগের নিয়মেই ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে চলবে।

এর আগে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের এ ট্রান্সশিপমেন্ট ব্যবস্থাটি বাতিলের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধাক্কা। এটি বিশেষ করে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিল। ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

One thought on “ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে বাড়তি খরচ ২ হাজার কোটি

  1. বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন। ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে বাড়তি খরচ ২ হাজার কোটি

আপডেট সময় : ০৪:৩২:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের ফলে দেশের বাণিজ্যে বাড়তি খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। এই আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের প্রভাবে পণ্য পরিবহনে খরচ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ফলে আমদানি-রপ্তানির ওপরও চাপ সৃষ্টি হয়েছে। সরকার এই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার জন্য কাজ করছে।”

বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য
বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য

যুক্তরাষ্ট্রের একপেশে শুল্কারোপ নিয়েও বক্তব্য দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি জানান, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রপ্তানিপণ্য থেকে বছরে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার শুল্ক আয় করে। তারপরও দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। এই বিষয়ে আলোচনা করতে অর্থ উপদেষ্টা শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন।”

বাংলাদেশের বার্ষিক রপ্তানি আয় বর্তমানে ৫০ বিলিয়ন ডলার, বিপরীতে আমদানি ৮০ থেকে ৯০ বিলিয়নের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এই ঘাটতি পূরণে রেমিট্যান্স বড় ভূমিকা রাখছে জানিয়ে বলেন, “অর্থপাচার কমে আসায় এখন ব্যাংকিং চ্যানেলেই বেশি অর্থ আসছে।”

সয়াবিন তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এটি একটি প্রয়োজনীয় সমন্বয়।”

উপদেষ্টা বলেন, সরকার বাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং অর্থনীতির ভারসাম্য বজায় রাখতে সঠিক পরিকল্পনায় অগ্রসর হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জন্য ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে রপ্তানির সুবিধাসংক্রান্ত ট্রান্সশিপমেন্ট ব্যবস্থাটি বাতিল করেছে ভারত। এটি বাতিল করার পর এ নিয়ে ব্যাখা করে প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে ভারত।

বুধবার (০৯ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার ফলে আমাদের বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দরগুলোতে ব্যাপক জট সৃষ্টি হচ্ছিল। এতে ভারতের নিজস্ব রপ্তানি কার্যক্রমে বিলম্ব ও ব্যয়বৃদ্ধি হচ্ছিল, যা ব্যাকলগ তৈরি করছিল। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে দেওয়া সুবিধাটি প্রত্যাহার করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, স্পষ্ট করে জানানো হচ্ছে, এই পদক্ষেপ নেপাল বা ভুটানে গমনকারী বাংলাদেশি রপ্তানিকে কোনোভাবেই প্রভাবিত করবে না। এসব রপ্তানি আগের নিয়মেই ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করে চলবে।

এর আগে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের এ ট্রান্সশিপমেন্ট ব্যবস্থাটি বাতিলের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধাক্কা। এটি বিশেষ করে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিল। ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।