মেঘনা আলম ইস্যুতে ডিবি প্রধান পদচ্যুত!

- আপডেট সময় : ১১:২৭:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫ ২৯ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধানের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিককে। মডেল মেঘনা আলমকে বিতর্কিতভাবে আটকের ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনার মুখে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। রেজাউলকে ডিবি থেকে সরিয়ে ডিএমপি সদর দপ্তরে ‘সংযুক্ত’ করা হয়েছে। তবে তাকে এখনো কোনো নির্দিষ্ট পদে পদায়ন করা হয়নি।
গত শনিবার ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলীর সই করা এক অফিস আদেশে রেজাউলকে সরানোর বিষয়টি জানানো হয়। আদেশে সরাসরি কোনো কারণ উল্লেখ না থাকলেও ঘটনার পেছনে রয়েছে বেশ কিছু বিতর্কিত ঘটনা।
গত বুধবার রাতে মডেল মেঘনা আলমকে রাজধানীর ভাটারা এলাকার বাসা থেকে ফিল্মি কায়দায় আটক করে ডিবি। মেঘনা ওই সময় ফেসবুক লাইভে এসে ঘটনার বিবরণ দিলে তা দ্রুত ভাইরাল হয় এবং দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। প্রথমদিকে ডিবির পক্ষ থেকে আটক অস্বীকার করা হলেও পরদিন তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনের আওতায় ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলেও প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দেয়, যেখানে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে।
সূত্রমতে, মেঘনার গ্রেপ্তারের পর তার সহযোগী দেওয়ান সামিরকেও ভাটারা থানা পুলিশ চাঁদাবাজির মামলায় আটক করে এবং তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। বিষয়টি জানতে চেয়ে একজন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিশেষ সহকারী ডিবি প্রধানকে ফোন করেন। রেজাউল করিম মামলার প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করলেও, বিশেষ সহকারী এতে অসন্তুষ্ট হন এবং বিষয়টি আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারকে জানান। যদিও পরিস্থিতি শান্ত করতে চেষ্টা চলে, রেজাউলকে সরানোর ব্যাপারে অনড় থাকেন। এরপরই তাকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়।
পুলিশ মহলের সূত্র জানায়, সাধারণত পদোন্নতিসহ বদলির সময় কর্মকর্তাকে কোনো নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে রেজাউল করিম মল্লিককে আপাতত কোনো পদ না দিয়ে শুধু সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে, যা বিশেষ বার্তা বহন করে।
উল্লেখ্য, রেজাউল করিম মল্লিক ১৭তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৯৮ সালে যোগ দেন। রাজনৈতিক নানা চড়াই-উৎরাইয়ে তার ক্যারিয়ার ছিল আলোচিত। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একবার বরখাস্ত হন এবং দীর্ঘদিন পদোন্নতির বাইরে ছিলেন। সম্প্রতি ক্ষমতার পালাবদলের পর কিছুটা স্বীকৃতি পেলেও, মেঘনা আলম ইস্যুতে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে এলেন তিনি।