ঢাকায় লাখো দর্শকের সামনে সর্ববৃহৎ ড্রোন শো

- আপডেট সময় : ০৯:৫২:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫ ৩০ বার পড়া হয়েছে

প্রথমবারের মতো রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে অনুষ্ঠিত হলো দেশের সবচেয়ে বড় ও ব্যতিক্রমধর্মী ড্রোন শো, যা দেখতে ভিড় জমিয়েছিল লাখো মানুষ। সোমবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হওয়া এই প্রদর্শনী চীনা দূতাবাসের কারিগরি সহযোগিতা এবং বাংলাদেশ সরকারের সমন্বয়ে আয়োজিত হয়।
ড্রোন শোটির প্রতিটি মুহূর্ত দর্শকদের মুগ্ধ করে তোলে। আকাশে আলো দিয়ে ফুটে ওঠে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো আবু সাঈদের প্রতিকৃতি, পানির বোতল হাতে প্রতীকী মুগ্ধের চিত্র, ‘২৪-এর বীর’, খাঁচা ভেঙে উড়ে যাওয়া পায়রার রূপক এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের জন্য প্রার্থনা। প্রতিটি ফ্রেমে উঠে আসে সাহস, প্রতিবাদ ও মানবিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ।
এই শোতে প্রতিফলিত হয়েছে জুলাই আন্দোলনের স্মৃতি, গণ-অভ্যুত্থানের ইঙ্গিত, এবং সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার প্রতিবাদের প্রতীক। আয়োজকরা জানান, এই ড্রোন শো কেবল প্রযুক্তির প্রদর্শনী নয়, এটি একটি সময়ের ভাষ্য— যেখানে গণআন্দোলন, সংকট এবং আশা-ভবিষ্যতের বার্তা স্থান পেয়েছে আলোর ছন্দে।
শো শুরুর আগে বিকেল ৩টা থেকে আয়োজন করা হয় বৈশাখী কনসার্ট। পরিবেশনায় অংশ নেয় বান্দরবানের বেসিক গিটার লার্নিং স্কুল, এরপর গান পরিবেশন করে গারো ও আরএনআর ব্যান্ড ‘এফ মাইনর’। শিল্পীদের কণ্ঠে ‘এসো হে বৈশাখ’ গানটি দিয়ে শুরু হয় সংগীত পর্ব। একক সংগীত পরিবেশন করেন মিঠুন চক্র ও পালাকার ইসলামউদ্দিন। রাকিব ও সাগর দেওয়ানের দ্বৈত ও একক গান, আরজ আলী ওস্তাদের সঙ্গে রাকিবের আরও দুটি গান, আতিয়া আনিশার ‘চলো নীরালায়’সহ তিনটি পরিবেশনা, আহমেদ হাসান সানির জনপ্রিয় গানগুলো এবং পারশার গাওয়া ‘জুলাই আন্দোলন’সহ তিনটি গান শ্রোতাদের আবিষ্ট করে রাখে। সবশেষে মঞ্চ কাঁপিয়ে তোলে জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘অ্যাশেজ’।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। উপস্থিত ছিলেন আরও বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক প্রতিনিধি, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান, শিল্পকলা একাডেমির সচিব ও মহাপরিচালক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেনসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এই আয়োজন শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়— এটি ছিল সময়ের বার্তা, প্রযুক্তির ক্যানভাসে আঁকা প্রতিরোধ, প্রার্থনা ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনার এক অনন্য চিত্র।