ঢাকা ১০:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোটার তালিকা সংশোধনে উদ্যোগ

নির্বাচন যত পিছাবে, বাড়বে তরুণ ভোটার

মোঃ হাছানুর ইমাম জুয়েল
  • আপডেট সময় : ১১:৪৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ৩৮ বার পড়া হয়েছে

নির্বাচন

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নতুন ভোটারদের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে আইন ও বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট খসড়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। শিগগিরই এটি উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

বর্তমানে প্রতি বছর ২ জানুয়ারি খসড়া এবং ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে আইন সংশোধনের মাধ্যমে এমন একটি বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে ইসি বছরের যেকোনো সময় ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও প্রকাশ করতে পারে। ফলে চলতি বছরেই তালিকায় যুক্ত হওয়া প্রায় ৪৩ লাখ ২৭ হাজার নতুন ভোটার আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নতুন ভোটারই তরুণ।

ইসি সূত্র জানায়, নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে, তরুণ ভোটারের সংখ্যা ততই বাড়বে

আইন মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ইসির প্রস্তাব পেলে তা বিবেচনায় নেবে সরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, তরুণদের ভোটের সুযোগ নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, “জুলাইয়ে গণ-আন্দোলনে তরুণরাই নেতৃত্ব দিয়েছে। তাই তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি সর্বোচ্চ গুরুত্বে দেখা উচিত।”

ইসি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, ভোট আগামী বছরের জুন পর্যন্ত গড়াতে পারে।

এদিকে চলমান হালনাগাদ কার্যক্রমে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ৫৮ লাখ ৮৯ হাজার ৮৬৬ জন নতুন ভোটার নিবন্ধিত হয়েছেন, যা মোট ভোটারের প্রায় ৫ শতাংশ। এর মধ্যে ৪৩ লাখ ২৭ হাজারই ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে জন্মগ্রহণ করেছেন, অর্থাৎ তারা বর্তমানে ১৮ বছর পূর্ণ করে ভোট দেওয়ার যোগ্য। বাকিরা আগামী বছরের ১ জানুয়ারির মধ্যে যোগ্যতা অর্জন করবেন। একইসঙ্গে ইসি ২১ লাখ ৭ হাজার মৃত ভোটারের তথ্যও সংগ্রহ করেছে।

বর্তমান আইনে নির্বাচন কমিশনকে ২ জানুয়ারি খসড়া এবং ২ মার্চ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করতে হয়। এই সময়ের আগে যদি সংসদ নির্বাচন হয়, তাহলে নতুন যোগ হওয়া অনেক ভোটারই ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন এবং মৃতদের নাম তালিকায় থেকে যাওয়ায় আইনি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

ইসি সূত্রে জানা যায়, কমিশনের আইন সংস্কার কমিটি—যার আহ্বায়ক কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ—ভোটার তালিকা আইনের ৩(জ) ও ১১(১) ধারায় সংশোধনের প্রস্তাব করেছে।
প্রস্তাবিত সংশোধনীতে রয়েছে:

ভোটার হওয়ার যোগ্যতার তারিখ হিসেবে শুধু ১ জানুয়ারির পরিবর্তে “কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ” যুক্ত করার সুপারিশ।

ভোটার তালিকা প্রকাশের নির্ধারিত সময়সীমার পাশাপাশি “কমিশনের বিবেচনায় উপযুক্ত সময়” যোগ করার প্রস্তাব।

নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, চলতি বছরে হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করতে হলে আইন সংশোধন অপরিহার্য। এ বিষয়ে কাজ চলছে।

বর্তমানে দেশে ভোটার সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি ৩৭ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশই ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণ ভোটার। চলমান হালনাগাদ শেষে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ভোটার তালিকা সংশোধনে উদ্যোগ

নির্বাচন যত পিছাবে, বাড়বে তরুণ ভোটার

আপডেট সময় : ১১:৪৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

নতুন ভোটারদের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে আইন ও বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট খসড়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। শিগগিরই এটি উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

বর্তমানে প্রতি বছর ২ জানুয়ারি খসড়া এবং ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে আইন সংশোধনের মাধ্যমে এমন একটি বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে ইসি বছরের যেকোনো সময় ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও প্রকাশ করতে পারে। ফলে চলতি বছরেই তালিকায় যুক্ত হওয়া প্রায় ৪৩ লাখ ২৭ হাজার নতুন ভোটার আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নতুন ভোটারই তরুণ।

ইসি সূত্র জানায়, নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে, তরুণ ভোটারের সংখ্যা ততই বাড়বে

আইন মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ইসির প্রস্তাব পেলে তা বিবেচনায় নেবে সরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, তরুণদের ভোটের সুযোগ নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, “জুলাইয়ে গণ-আন্দোলনে তরুণরাই নেতৃত্ব দিয়েছে। তাই তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি সর্বোচ্চ গুরুত্বে দেখা উচিত।”

ইসি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, ভোট আগামী বছরের জুন পর্যন্ত গড়াতে পারে।

এদিকে চলমান হালনাগাদ কার্যক্রমে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ৫৮ লাখ ৮৯ হাজার ৮৬৬ জন নতুন ভোটার নিবন্ধিত হয়েছেন, যা মোট ভোটারের প্রায় ৫ শতাংশ। এর মধ্যে ৪৩ লাখ ২৭ হাজারই ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে জন্মগ্রহণ করেছেন, অর্থাৎ তারা বর্তমানে ১৮ বছর পূর্ণ করে ভোট দেওয়ার যোগ্য। বাকিরা আগামী বছরের ১ জানুয়ারির মধ্যে যোগ্যতা অর্জন করবেন। একইসঙ্গে ইসি ২১ লাখ ৭ হাজার মৃত ভোটারের তথ্যও সংগ্রহ করেছে।

বর্তমান আইনে নির্বাচন কমিশনকে ২ জানুয়ারি খসড়া এবং ২ মার্চ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করতে হয়। এই সময়ের আগে যদি সংসদ নির্বাচন হয়, তাহলে নতুন যোগ হওয়া অনেক ভোটারই ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন এবং মৃতদের নাম তালিকায় থেকে যাওয়ায় আইনি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

ইসি সূত্রে জানা যায়, কমিশনের আইন সংস্কার কমিটি—যার আহ্বায়ক কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ—ভোটার তালিকা আইনের ৩(জ) ও ১১(১) ধারায় সংশোধনের প্রস্তাব করেছে।
প্রস্তাবিত সংশোধনীতে রয়েছে:

ভোটার হওয়ার যোগ্যতার তারিখ হিসেবে শুধু ১ জানুয়ারির পরিবর্তে “কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত তারিখ” যুক্ত করার সুপারিশ।

ভোটার তালিকা প্রকাশের নির্ধারিত সময়সীমার পাশাপাশি “কমিশনের বিবেচনায় উপযুক্ত সময়” যোগ করার প্রস্তাব।

নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, চলতি বছরে হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করতে হলে আইন সংশোধন অপরিহার্য। এ বিষয়ে কাজ চলছে।

বর্তমানে দেশে ভোটার সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি ৩৭ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশই ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণ ভোটার। চলমান হালনাগাদ শেষে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।