‘মার্চ ফর গাজা’ থেকে ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্বের দাবি

- আপডেট সময় : ০৮:২২:০৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ ৫০ বার পড়া হয়েছে

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শনিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট’-এর আয়োজিত ‘মার্চ ফর গাজা’ শীর্ষক গণসমাবেশ। সমাবেশে ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্ব, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
সমাবেশে পাঠ করা ঘোষণাপত্রে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমান্তে ফিরে যাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা তৈরি, ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং আন্তর্জাতিক আদালতে এর বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।
ঘোষণাপত্র পাঠ করেন ‘আমার দেশ’ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, “গাজার ধ্বংসস্তূপে আজকের বিশ্বব্যবস্থার ন্যায়ের মুখোশ খসে পড়েছে। এটি কোনো একক সরকারের ব্যর্থতা নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতার ফল।”

সমাবেশ থেকে জাতিসংঘ, মুসলিম বিশ্ব ও বাংলাদেশ সরকারের প্রতি চার স্তরের দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে—
-
ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের সামরিক, কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করা,
-
গাজায় ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা পাঠানো,
-
জায়নবাদী প্রতিষ্ঠানের পণ্য বর্জনের আহ্বান,
-
বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘Except Israel’ শর্ত পুনর্বহাল করা।
এ ছাড়া ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকারের অধীনে মুসলিমদের ওপর নিপীড়নের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় প্রতিবাদ এবং শিক্ষানীতিতে আল-আকসা ও ফিলিস্তিনের সংগ্রামী ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করারও দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে উপস্থিত বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ দল-মত নির্বিশেষে ফিলিস্তিনিদের পাশে রয়েছে। আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, “আমরা এক কাতারে দাঁড়িয়ে বিশ্বকে দেখাতে চাই, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ।”
সমাবেশে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশের সব দল, মত, চিন্তা-দর্শনের মানুষ মজলুম ফিলিস্তিন ও মজলুম গাজার পাশে আছে, সহাবস্থান করছে। এক কাতারে দাঁড়িয়ে আজ বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিতে চাই, আমাদের মধ্যে বিভিন্ন চিন্তা, মতগত পার্থক্য, ভিন্নতা থাকতে পারে; কিন্তু মজলুম ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা, ভূমির অধিকারের দাবিতে আমরা বাংলাদেশের মানুষ ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে প্রত্যেকে তাঁদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছি।’
ধর্মীয় আলোচক মিজানুর রহমান আজহারী বলেন, ‘আজকের এই মহাসমুদ্র, জনসমুদ্র ফিলিস্তিনের প্রতি, আল-আকসার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। ভৌগোলিকভাবে আমরা ফিলিস্তিন থেকে অনেক দূরে হতে পারি, কিন্তু আজকের এই জনসমুদ্র প্রমাণ করে আমাদের হৃদয়ে বাস করে একেকটা ফিলিস্তিন, আমাদের হৃদয়ে বাস করে একেকটা গাজা, আমাদের হৃদয়ে বাস করে একেকটা আল-কুদস।’
সমাবেশ শেষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মাওলানা আব্দুল মালেক ফিলিস্তিনের জন্য দোয়া পরিচালনা করেন।
গণসমাবেশে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।